1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ভ্রমণ

হয়রানির শিকার বাংলাদেশি দম্পতি

২১ এপ্রিল ২০১৭

জার্মানিতে এক বাস চালকের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন এক বাংলাদেশি দম্পতি – ফেসবুকে এই নিয়ে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে৷ সংশ্লিষ্ট বাস কোম্পানি দুঃখ প্রকাশ করে টিকিটের টাকা ফেরত দিলেও ভুক্তভোগী দম্পতি বলছেন, এটা যথেষ্ট নয়৷

Asgar Hossain und seine Frau
ছবি: Privat

ইউরোপে সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ফ্লিক্সবাসে করে জুরিখ থেকে হাইডেলসহাইমে ফিরছিলেন বাংলাদেশি দম্পতি আসগর হোসেইন এবং ইউসরা জাফরিন৷ হাইডেলবার্গে যাত্রাবিরতির সময় স্বামীকে বাসে রেখেই পাশ্ববর্তী ম্যাকডোনাল্ডস রেস্তোরাঁর টয়লেটে গিয়েছিলেন জাফরিন৷ কিন্তু ফিরে দেখেন বাস তাঁর স্বামীকে নিয়ে চলে গেছে৷ সঙ্গে চলে গেছে জাফরিনের শীতের জ্যাকেট, মোবাইল, পার্স, সবকিছু৷

জার্মান ভাষা না জানা, জার্মানিতে নতুন আসা জাফরিন আতঙ্কে কেঁদেছেন তখন, ঠান্ডার মাঝে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে খুঁজেছেন স্বামীকে৷ অন্যদিকে, স্বামী তখন বাসচালকের কাছে কাকুতি মিনতি করছেন বাস থেকে যাতে তাঁকে অন্তত নামিয়ে দেয়া হয়৷ যাতে স্ত্রীর কাছে ফিরে যেতে পারেন তিনি৷ এক পর্যায়ে ক্ষণিকের জন্য বাসের দরজা খুলে দেন চালক৷ তবে লাগেজ, জ্যাকেট ছাড়াই নামতে হয় স্বামীকেও৷ ততক্ষণে স্টেশন থেকে বাস চলে গেছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে৷

Asgar UPDATE - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

বাসে থাকা অপরিচ্ছন্ন টয়লেট ব্যবহার না করে ম্যাকডোনাল্ডসে গিয়েছিলেন জাফরিন৷ পাঁচ ঘণ্টা যাত্রার পর টয়লেট ব্যবহারের চাহিদা অস্বাভাবিক কিছু নয়৷ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বাসের চালক তাঁকে না নিয়ে চলে গেলেন কেন? আসগর হোসেইন পুরো ঘটনাটি ফেসবুকে লিখেছেন৷ দাবি করেছেন, বিদেশি বলেই তাঁদের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে বাসের চালক৷ তাঁর পোস্টটি ইতোমধ্যে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছে৷ অনেকেই বাস চালকের এমন আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন৷

জার্মানির বাস কোম্পানি ফ্লিক্সবাস-এর একজন মুখপাত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন যে, হাইডেলবার্গে গত ১৮ এপ্রিল হোসেইন এবং তাঁর স্ত্রী'র সঙ্গে যা ঘটেছে, তার জন্য তারা অত্যন্ত দুঃখিত৷ এজন্য তাদের বাসের টিকিটের মূল্য ফেরত দেয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি৷

ফ্লিক্সবাসের কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স-এর প্রধান বেটিনা এনগার্ট আরো উল্লেখ করেছেন যে, তাদের বাসগুলো নির্দিষ্ট সময় মেনে চলে এবং হাইডেলবার্গে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দাঁড়িয়েছিল৷ আর যে চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজেও বিদেশি বংশোদ্ভূত এবং তিন বছর ধরে কোম্পানির বাস চালালেও তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে কোনো অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়া যায়নি৷

হোসেইন জানিয়েছেন, হাইডেলবার্গে যখন বাস ছাড়ছিল, তখন তাঁর স্ত্রীকে ম্যাকডোনাল্ডস থেকে ফিরতে দেখা যাচ্ছিল৷ সাকুল্যে তাঁর স্ত্রী হয়ত দুই মিনিট দেরি করেছেন৷ আর তাতে তাঁদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, কেননা, বাস কোম্পানিটির বাস মাঝে মাঝে এমনিতেই অনেক দেরি করে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরে যে বাসে করে ফিরেছি, সেটাও ফ্লিক্সবাস ছিল, সেই বাসের চালক এবং সহকারী জানিয়েছেন যে, কোনো প্রয়োজন হলে আমরা  পাঁচ থেকে দশ মিনিট অবধি অপেক্ষা করতে পারি৷ এটা কোনো সমস্যা নয়৷''

বাংলাদেশি দম্পতি আইনের আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেনছবি: Privat

বেটিনা এনগার্ট জানিয়েছেন, ফ্লিক্সবাস একটি বহুজাতিক কোম্পানি এবং যাত্রী বা কর্মীদের সঙ্গে কোনো রকম বৈষম্যমূলক আচরণ প্রতিষ্ঠানটির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷ হোসেইনের ঘটনার বিস্তারিত জানতে সংশ্লিষ্ট বাস এবং চালকের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷

হোসেইন অবশ্য বাস কোম্পানির এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন৷এখনো তাঁরা নিজেদের লাগেজ এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ফেরত পাননি৷ যে হয়রানির শিকার তারা হয়েছেন, তার বিচার দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি উদ্যোগ নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন জার্মানিতে চাকুরিরত এই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কি কখনো আসগর হোসেইনের মতো পরিস্থিতিতে পরেছেন? লিখুন মন্তব্যে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ