৮ লক্ষ নয়, চলতি বছর শরণার্থীদের সংখ্যা ১০ লক্ষের মাত্রা ছুঁতে পারে বলে মনে করেন জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গাব্রিয়েল৷ এদিকে শরণার্থীদের ঢল সামাল দিতে অস্ট্রিয়া সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আপাতত উঠছে না৷
বিজ্ঞাপন
একদিকে জার্মানির আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকার ও সাধারণ মানুষের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ উদারভাবে শরণার্থীদের স্বাগত জানিয়ে আসছে৷ অন্যদিকে রাজ্য সরকারগুলি বহিরাগতদের আশ্রয় দিতে হিমশিম খাচ্ছে৷ এই চাপ যে অনির্দিষ্টকাল ধরে সামাল দেওয়া সম্ভব, এমনটা কেউই বিশ্বাস করেনি৷ এবার জার্মানি কিছুটা রাশ টানতে শুরু করেছে৷ আপাতত অস্ট্রিয়া সীমান্তে সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণ চালু করা হয়েছে৷ শেঙেন চুক্তির আওতায় এমন সাময়িক পদক্ষেপের বিধান রয়েছে৷ কিছু মহলে সামগ্রিকভাবে শেঙেন চুক্তির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রশ্ন উঠছে৷
জার্মানির দক্ষিণে বাভেরিয়া রাজ্য শরণার্থীদের প্রধান প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে৷ শুধু গত সপ্তাহান্তেই ১৯,১০০ শরণার্থী মিউনিখে পৌঁছেছে৷ ‘দ্য ইকোনমিস্ট পত্রিকা এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছে যে, ব্রিটেন আগামী ৫ বছরে যত সংখ্যক শরণার্থী নিতে প্রস্তুত, জার্মানি মাত্র একটি সপ্তাহান্তেই তত সংখ্যক শরণার্থীকে স্বাগত জানিয়েছে৷
বাভেরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইওয়াখিম হেয়ারমান জানিয়েছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু থাকবে৷
শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে উদারতার কারণে জার্মানি গোটা বিশ্বে বিস্ময় ও প্রশংসার পাত্র হচ্ছে বটে, কিন্তু এক্ষেত্রে ব্রিটেনের মতো দেশের সংকীর্ণ মনোভাবের পাশাপাশি অনেক মহলেই অস্বস্তি সৃষ্টি করছে৷ জার্মানির এই নীতির প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মার্কিন সাংবাদিক ফরিদ জাকারিয়া৷
যেসব ‘মুসলিম’ দেশ শরণার্থীদের সহায়তা করছে, করছে না
সিরিয়ার শরণার্থীদের ঢল নেমেছে ইউরোপে৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপের কয়েকটি দেশ৷ এরই মধ্যে, ‘মুসলিম’ দেশগুলোর মধ্যে কারা শরণার্থীদের সহায়তা করছে, কারা করছে না তা নিয়েও চলছে বিতর্ক৷
ছবি: Getty Images//W. McNamee
সাহায্য করছে প্রতিবেশী ‘মুসলিম’ দেশগুলো
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়ার প্রতিবেশী মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলো চার মিলিয়নের বেশি সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে৷ সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এসব দেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে সিরীয়রা৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
তুরস্কে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী
সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশ তুরস্কে সবচেয়ে বেশি সিরীয় শরণার্থী অবস্থান করছে৷ ইউএনএইচসিআর-এর হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তুরস্কে নিবন্ধিত সিরিয়ার শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই মিলিয়ন৷
ছবি: Getty Images/C. Court
এগারো লাখের বেশি লেবাননে
সিরিয়ার আরেক প্রতিবেশী দেশ লেবাননে অবস্থান করছে এগারো লাখের বেশি শরণার্থী৷ তবে চলতি বছরের মে মাস থেকে দেশটিতে আর নতুন শরণার্থীদের নিবন্ধন করা হচ্ছে না৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Eid
জর্ডানের অনেক ক্যাম্পে সিরীয় শরণার্থী
সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশ জর্ডানে রয়েছেন ছয় লাখের বেশি সিরীয় শরণার্থী৷ দেশটির বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের রাখা হয়েছে৷ ইউএনএইচসিআর-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সেখানে শরণার্থীদের কোনো জট এই মুহূর্তে নেই৷
ছবি: Guy Degen
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে সিরীয় শরণার্থী!
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকেও সিরিয়ার প্রায় আড়াই লাখ শরণার্থী অবস্থান করছেন৷ পূর্ব আফ্রিকাতেও আশ্রয় নিয়েছে চব্বিশ হাজারের মতো শরণার্থী৷ এবার চলুন জানা যাক সিরিয়ার শরণার্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে না, এমন কয়েকটি ‘মুসলিম’ দেশের নাম৷
ছবি: picture alliance/abaca
সিরীয়দের পাশে নেই সৌদি আরব
মুসলমানদের তীর্থস্থান যেদেশে, সেই সৌদি আরব সিরীয় শরণার্থীদের কোনো সহায়তা করছে না৷ বরং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরোধীদের আর্থিক সহায়তা করছে দেশটি৷ চলতি বছর আঠারো মিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলার তাদের দিয়েছে সৌদি আরব৷
ছবি: AFP/Getty Images/F. Nureldine
সমালোচনায় পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো
সৌদি আরব এবং অন্যান্য পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো সিরীয় শরণার্থীদের সহায়তা না করায় ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়ছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সমালোচনায় মুখর তাদের দেশের মানুষরাও৷ তবে এতে সেসব দেশের নীতিতে কোনো পরিবর্তন এখনো আসেনি৷