জার্মানির কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থান সংস্থা জানিয়েছে, দেশটিতে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ দুটি চাকরি করছেন৷ আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তাঁরা পূর্ণকালীন চাকরির পাশাপাশি ‘মিনি-জব' করছেন৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির বাম দলের এক প্রশ্নের জবাবে কর্মসংস্থান সংস্থা জানায়, গত বছরের জুন মাসের শেষ পর্যন্ত ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ একের বেশি চাকরি করছিলেন৷ এক বছর আগের তুলনায় সংখ্যাটি এক লাখ ২৩ হাজার ছয়শ জন বেশি৷
এদের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ জন পূর্ণকালীন চাকরির পাশাপাশি মাসে সাড়ে চারশ ইউরো কিংবা তার চেয়ে কম আয় হয় এমন চাকরি করেছেন৷
প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার সাতশ জন দুই বা তার বেশি মিনি-জব করেন৷
নয়ে অসনাব্র্যুকার সাইটুং পত্রিকায় এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে৷
সারা বিশ্বে বেড়েই চলেছে বেকারত্ব
আইএলও-র নতুন রিপোর্ট বলছে, সারা বিশ্বে বেকারের সংখ্যা ৪৭ কোটি ছাড়াতে চলেছে৷ চাকরি করছেন এমন মানুষদের মধ্যে অনেকেই আবার পাচ্ছেন না প্রয়োজন মতো কাজ৷ এমন অবস্থার কিছু কারণও জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Fotolia/Paolese
বিশ্ব জুড়ে ভয়াবহ বেকারত্ব
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও সদ্য প্রকাশ করা প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বে এ মুহূর্তে বেকারের সংখ্যা ৪৭ কোটিরও বেশি৷
ছবি: Reuters/S. Keith
সব চাকুরিজীবীও ভালো নেই
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের মধ্যে বড় একটা অংশ পর্যাপ্ত সময় কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না৷ এ ধরনের চাকুরিজীবীর সংখ্যা সাড়ে ২৮ কোটির মতো৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/mcphotos
মোট জনসংখ্যার ১৩ ভাগ!
আইএলও-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪৭ কোটি, অর্থাৎ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা ১৩ ভাগই বেকার৷
ছবি: BGNES
কেন এই পরিস্থিতি
আইএলও-র ‘সামাজিক অস্থিরতা সূচক’ অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিশ্বের ১১টি অঞ্চলের মধ্যে সাতটিতেই বিক্ষোভ এবং ধর্মঘট বেড়েছে৷ এসবেরও প্রভাব পড়েছে কাজের বাজারে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Ng Han Guan
আরো শঙ্কাময় ২০২০
আইএলও-র আশঙ্কা, এ বছর সারা বিশ্বে বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখের মতো বাড়তে পারে৷
ছবি: Fotolia/Paolese
5 ছবি1 | 5
হানস-ব্যোকলার ফাউন্ডেশনের এক জরিপ বলছে, যাঁরা দুটি চাকরি করছেন তাঁদের ৫৩ শতাংশ জানিয়েছেন, আর্থিক অসুবিধা কাটাতে তাঁরা এমন পথ বেছে নিয়েছেন৷
এই অবস্থায় ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বাম দলের সাংসদ জাবিনে সিমারমান৷ তিনি এটি বাড়িয়ে ঘণ্টায় ১২ ইউরো করার দাবি করেছেন৷ বর্তমানে এটি ৯.৩৫ ইউরো৷ ‘‘অনেক কর্মীর জন্য একটি চাকরি থেকে আয় যথেষ্ট নয়,'' বলেন তিনি৷
কর্মসংস্থানের সুযোগ ১০ খাতে
বাংলাদেশের ১০টি সম্ভাবনাময় খাতে কত কর্মীর চাহিদা রয়েছে, ভবিষ্যতে কতটা কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে, কেমন দক্ষতার কর্মী লাগবে, তা নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছিল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-বিআইডিএস৷
ছবি: DW
তৈরি পোশাক
বর্তমানে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে প্রায় ৪৯ লাখ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে৷ বিআইডিএস-এর গবেষণা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ তা বেড়ে প্রায় ৯১ লাখে দাড়াবে৷ এর মধ্যে দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন হবে ৫০ লাখ ২৭ হাজার৷
ছবি: Reuters/A. Biraj
টেক্সটাইল
টেক্সটাইল বা বস্ত্র খাতে ৩০ লাখ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে বর্তমানে৷ আগামী পাঁচ বছরে যা ৫৭ লাখে ঠেকবে৷ প্রায় দেড় কোটি শ্রমিক লাগবে ২০৫০ সালে৷
ছবি: picture alliance/Zumapress
কৃষি-খাদ্য
বাংলাদেশের কৃষি-খাদ্য খাতে এখন প্রায় ২৪ লাখ শ্রমিকের চাহিদা৷ ২০২৫ সালে যা বেড়ে ৪৪ লাখে পৌছাবে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ এই খাতে এক কোটি ১৬ লাখ কর্মী লাগবে৷
ছবি: DW/M. Mamun
নির্মাণ
নির্মাণ খাতে ২০১৮ সালে প্রায় ৩৭ লাখ শ্রমিকের চাহিদা ছিল৷ যা ক্রমশ বেড়ে ৬৭ লাখে পৌছাবে ২০২৫ সাল নাগাদ৷ সেখানে দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে ১৫ লাখ ৪০ হাজার৷ আগামী ৩০ বছরের মধ্যে অদক্ষ, দক্ষ, আধাদক্ষ মিলিয়ে এই খাতে মোট এক কোটি ৭৬ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে৷
ছবি: bdnews24.com
হালকা প্রকৌশল
২০২০ সালের জন্য হালকা প্রকৌশল পণ্যকে ‘বর্ষপণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার৷ বর্তমানে এই খাতে প্রায় ছয় লাখ শ্রমিক রয়েছে৷ ২০২৫ সাল নাগাদ সেখানে শ্রমিকের চাহিদা আরো চার লাখ বাড়বে৷ যার মধ্যে ৮০ ভাগই দক্ষ হতে হবে৷ সব মিলিয়ে ২০৫০ সালে হালকা প্রকৌশলে দুই কোটি ৬৯ লাখ কর্মী প্রয়োজন হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্বাস্থ্য
২০১৮ সালে স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা সেবায় কর্মীর চাহিদা ছিল ১০ লাখ৷ যা ১৯ লাখে পৌছাবে ২০২৫ সালে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ স্বাস্থ্যসেবা অর্ধকোটির বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের যোগান দিতে পারে৷
ছবি: AP
তথ্য-প্রযুক্তি
তথ্য প্রযুক্তিখাতে বর্তমানে কর্মীর চাহিদা প্রায় দুই লাখ৷ ২০২৫ সালে নাগাদ যা বেড়ে প্রায় চার লাখ হবে৷ ২০৫০ সালে আট লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান হবে এই খাতে৷
ছবি: Privat
জাহাজ নির্মাণ
বর্তমানে দেশে জাহাজ নির্মান শিল্পে শ্রমিকের চাহিদা প্রায় ষাট হাজার৷ ২০২৫ সাল নাগাদ তা দুই লাখ ছাড়িয়ে যাবে৷ এর মধ্যে সাড়ে ২১ হাজার দক্ষ, সাড়ে ৯৭ হাজার আধাদক্ষ আর এক লাখ ১৭ হাজার অদক্ষ কর্মী লাগবে৷
ছবি: Roberto Schmidt/AFP/GettyImages
চামড়া শিল্প
এই শিল্পে এখন প্রায় এক লাখ আঠারো হাজার কর্মীর চাহিদা রয়েছে৷ ২০২৫ সালে তা বেড়ে দুই লাখ আট হাজার হবে৷ প্রয়োজন হবে ১৭ হাজার দক্ষ, ১৬ হাজার নয়শো আধাদক্ষ আর এক লাখ ৭৩ হাজার দক্ষ শ্রমিক৷
ছবি: DW
পর্যটন
বর্তমানে হসপিটালিটি ও ট্যুরিজম খাতে ৪০ হাজার কর্মসংস্থানের চাহিদা রয়েছে৷ এটি বেড়ে সত্তর হাজার হবে ২০২৫ এ৷ ২০৫০ সাল নাগাদ এক কোটি ৮০ হাজার মানুষের কাজের যোগান দিতে পারবে পর্যটন শিল্প৷