1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির ‘অ্যামেরিকান ওয়ে’

নিকোলাস ফিশার / এসি২৩ মার্চ ২০১৩

‘‘ওয়েলকাম, আইক’’ থেকে শুরু করে ‘‘ইয়াঙ্কি গো হোম’’ হয়ে ‘‘ইয়েস উই ক্যান’’ অবধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির ইতিহাসে তার ছাপ রেখে গেছে৷ তবে দু’টি দেশের কুটুম্বিতায় মাঝে মাঝে ছায়াও পড়েছে বৈকি৷

ছবি: zentilia - Fotolia.com

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পরাজয় ঘটে যে সব শক্তিদের হাতে, তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম করতে হয়৷ আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি সহযোগী৷ এর মধ্যে অনেক কিছু ঘটে গেছে৷ বন শহরের ‘‘হাউস ডেয়ার গেশিশ্টে'' বা যুদ্ধপরবর্তী ইতিহাস মিউজিয়ামে একটি প্রদর্শনী চলেছে, যার নাম: ‘‘দ্য অ্যামেরিকান ওয়ে৷ জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্র৷''

প্রদর্শনীতে বিভিন্ন বস্তু, আলোকচিত্র, অডিওটেপ ইত্যাদির মাধ্যমে বিগত ৬৮ বছরের জার্মান-অ্যামেরিকান সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে৷ ইতিহাস ভবনের পরিচালক হানো জোভাডে বলেছেন: ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া জার্মানির ইতিহাসের কথা ভাবাই যায় না৷'' প্রদর্শনীটির প্রস্তুতি চলেছে দু'বছর ধরে৷ প্রদর্শনী চলবে ১৩ই অক্টোবর অবধি৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পরাজয় ঘটে যে সব শক্তিদের হাতে, তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম করতে হয়ছবি: Stiftung Haus der Geschichte/Axel Thünker

অ্যামেরিকার ভাবমূর্তি

মার্কিনিরা জার্মানির উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে, তা দেখানোর জন্য প্রদর্শনীটিকে তিনটি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে: নিরাপত্তা নীতি, অর্থনীতি এবং দৈনন্দিন জীবন৷ প্রতিটি বিভাগেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তনের চিহ্নও স্পষ্ট৷ ১৯৪৫ সালে অ্যামেরিকান মিউজিক বলতে জার্মানরা যা বুঝতো, আর আজ তারা লেডি গাগা বলতে যা ভাবে, তার মধ্যে বিস্তর ফারাক৷ লেডি গাগা আর সেই অর্থে ‘মার্কিন' নন, তিনি অ্যাপল কিংবা আইপডের মতোই দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ৷

যুদ্ধে মার্কিনিরা ছিল শত্রু, তারা জার্মানির শহরগুলির উপর বোমা ফেলেছে৷ কাজেই জার্মানদের তাদের ভালো লাগার কথা নয়৷ দখলদারি শক্তি হিসেবে এসেও কিন্তু মার্কিনিরা তাদের এই নেতিবাচক ভাবমূর্তি বদলানোর চেষ্টা করেছে৷ ‘কেয়ার'-এর জন্ম সেভাবেই৷ ‘কেয়ার' বলতে সিএআরই কেয়ার, অথবা কোঅপারেটিভ ফর অ্যামেরিকান রেমিটান্সেস টু ইউরোপ, ইউরোপের প্রতি মার্কিন অর্থপ্রেরণের সমবায়৷ সেই কেয়ারের ছাপ দেওয়া প্যাকেটই বহু ক্ষুধার্ত জার্মানদের মুখে অন্ন তুলে দিয়েছে৷

মার্কিনিরা জার্মানির উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে, তা দেখানোর জন্য প্রদর্শনীটিকে তিনটি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে: নিরাপত্তা নীতি, অর্থনীতি এবং দৈনন্দিন জীবনছবি: Stiftung Haus der Geschichte/Axel Thünker

তারপরে আসে মার্শাল প্ল্যান, যে সব দেশ যুদ্ধে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের অর্থনীতিকে আবার খাড়া করার জন্য৷ মার্শাল প্ল্যান ছাড়া জার্মানির অর্থনীতি অতো অল্প সময়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো না৷ ১৯৪৮-৪৯ সালে দখলদারি সোভিয়েত শক্তি পশ্চিম বার্লিনের প্রতি স্থলপথে যাবতীয় সরবরাহ নিষিদ্ধ করার পর মার্কিন বোমারু বিমান প্রায় এক বছর সময় ধরে পশ্চিম বার্লিনকে বাঁচিয়ে রাখে৷

এলভিস, এলভিস

ওদিকে মার্কিন সংস্কৃতি তখন জনপ্রিয় পাশ্চাত্য সংগীতের রূপ ধরে জার্মান বসতবাড়ি ও বৈঠকখানা ঘরে ঢুকে পড়েছে৷ পঞ্চাশ আর ষাটের দশকে এলভিস প্রেসলি ও বিল হেইলি'র মতো গায়করা ছিলেন জার্মানদের হিরো৷ তার একটি কারণ ছিল বার্লিনে মার্কিন সেক্টরের রিয়াস বেতারকেন্দ্র৷ রিয়াসের কল্যাণে সোভিয়েত সেক্টরেও মানুষরা মার্কিন গান শুনতো, যে কারণে প্রাক্তন পূর্ব জার্মানির নেতৃত্ব রিয়াসের সম্প্রচার রোখারও চেষ্টা করেছিল৷

পপকর্ন এবং ব্লু জিনস

জার্মান সিনেমা হলগুলিতেও হলিউডের জয়যাত্রা বহুদিন আগে শুরু হয়৷ সেজন্য বন'এর ইতিহাস মিউজিয়ামের প্রদর্শনীতে মার্কিন চলচ্চিত্রের জন্য একটি আলাদা কক্ষ রাখা হয়েছে৷ মার্কিন ছবির সঙ্গে সঙ্গে কোকাকোলা এবং পপকর্ন ও ব্লু জিনস জার্মানদের হৃদয় জয় করে ফেলে৷

প্রতিবাদ

তবে ষাটের দশকের শেষে জার্মানিতেও ‘‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের'' বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মাথা চাড়া দেয়, বিশেষ করে ভিয়েতনাম যুদ্ধের কারণে৷ আশির দশকে জার্মানিতে মার্কিন ক্রুইজ মিসাইল স্থাপন নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন দানা বাঁধে৷ এমনকি ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় জার্মানি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দেয়নি৷

প্রদর্শনীতে বিভিন্ন বস্তু, আলোকচিত্র, অডিওটেপ ইত্যাদির মাধ্যমে বিগত ৬৮ বছরের জার্মান-অ্যামেরিকান সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছেছবি: National Museum of American History, Smithonian Institution

তবে প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখলে যে বিষয়টি সবচেয়ে চমৎকৃত করে, তা হল: জার্মানি আজ কতোটা ‘মার্কিন' হয়ে পড়েছে! অপরদিকে মার্কিনিরা জার্মানি সম্পর্কে কী ভাবে? তা নিয়ে হয়তো ভবিষ্যতে আরো একটি প্রদর্শনী করার প্রয়োজন পড়বে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ