1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান নির্বাচন: সম্ভাব্য রাজনৈতিক জোট

৪ জুন ২০১৭

আগামী সেপ্টেম্বরে জার্মানির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ নির্বাচনের পর দলগুলো কী ধরনের জোট গড়তে পারে, তার একটি চিত্র এখানে দেয়া হলো৷

ছবি: picture-alliance/dpa/R. Jensen

ভোটের প্রচারণায় এখানে ভোটারদের নিয়ে চলে টানাটানি৷ এক দল অন্য দলের নির্বাচনি ইশতেহার ও নীতির সমালোচনায় নামেন কোমর বেঁধে৷ কিন্তু প্রচারণা শেষ হলেই সেই হিসাব পাল্টে যায়৷ তখন রাজনৈতিক দলগুলো মিত্র খোঁজা শুরু করে৷

এই সমঝোতায় চলে নানা হিসাব-নিকাশ৷ অনেক সময় এর সমাধান কয়েক সপ্তাহেও পাওয়া যায় না৷ হিসাবে মিললে রাজনৈতিক সমাঝোতা করে চুক্তি হয়৷

আইনসভায় ওই জোটকে কোন ভূমিকায় দেখা যাবে-সেটা থাকে ওই চুক্তিতে৷ এটাই পরের বছরগুলোতে রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করে দেয়৷

সব রাজনৈতিক দলই এই চুক্তির সময় ভোটারদের কাছে করা তাদের অঙ্গীকারকে প্রাধান্য দিতে চায়৷ যেহেতু এটা সমঝোতা চুক্তি, যেখানে ছাড়ও দিতে হয়৷ তাই চুক্তির পর যে অঙ্গীকারগুলো রাখা যাচ্ছে না, সেগুলোর দায় সহযোগীদের উপর চাপিয়ে দেয় তারা৷

খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন (সিডিইউ) এবং সামাজিক গণতন্ত্রী দল (এসপিডি)ছবি: JOHANNES EISELE/AFP/Getty Images

কালো-লালে মহাজোট

মহাজোট বলতে সাধারণত জার্মানির সবচেয়ে বড় দুটি রাজনৈতিক দলের জোটকে বোঝানো হয়৷ দল দুটি হচ্ছে, খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন (সিডিইউ) এবং সামাজিক গণতন্ত্রী দল (এসপিডি)৷

এই দুই দলের জোটকে অনেকেই নিরাপদ বিকল্প হিসাবে দেখেন৷

কেন্দ্রীয় সরকারে বর্তমানে এই জোটের পক্ষ থেকেই আঙ্গেলা ম্যার্কেল নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ আর রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন এসপিডি থেকে৷

ম্যার্কেলের টানা এই তৃতীয় মেয়াদের আগে প্রথম মেয়াদেও এই জোটই জার্মানি শাসন করেছে৷ এই সময়ে জোটসঙ্গী যেই হোক, চ্যান্সেলর এবং অর্থমন্ত্রীর পদ নিয়েছে সিডিইউ'ই৷

তবে নির্বাচন আসলেই এসপিডি তাদেরকে যথাযথ বিকল্প হিসাবে তুলে ধরতে কোমর বেঁধে মাঠে নামে৷

সাধারণভাবে বলতে সিডিইউ বলা হলেও সেখানে আরেকটি দল রয়েছে৷ এটি হচ্ছে সিডিইউ'র সহযোগী সংগঠন খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়ন (সিএসইউ)৷

বাভারিয়া রাজ্যে সিডিইউ নেই৷ সেখানে শুধু সিএসইউ কাজ করে থাকে৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ে উদ্বাস্তু ইস্যু নিয়ে দুই দলের মতভেদ স্পষ্ট হয়েছে

এফডিপি জাতীয় পর্যায়ে এমন জোটকে নাকচ করে দিয়েছেনছবি: picture-alliance/dpa/T. Hase

কালো-হলুদ

খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন (সিডিইউ) এবং মুক্ত গণতন্ত্রী দলের (এফডিপি) এই জোট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল৷ সর্বশেষ ম্যার্কেলের ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে এই জোট জার্মানি শাসন করে৷ ১৯৮২-১৯৯৮ সাল পর্যন্ত চ্যান্সেলর হেলমুট কোলের আমলে পাঁচটি মন্ত্রিসভায়ই ছিল এফডিপি৷

এই দুই দলের জোট অনেক জার্মানের কাছেই বেশ অর্থবহ৷ জার্মানির রক্ষণশীল খ্রিষ্টান মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে সিডিইউ৷ অন্যদিকে এফডিপি নগরে বাস করা ব্যবসা-বান্ধব তরুণ, মুক্ত বাজার উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করে৷

তবে সাম্প্রতিক সময়ে এফডিপির ব্যর্থতার পর আপাতত এই জোটকে ক্ষমতার কেন্দ্রে দেখা যাচ্ছে না৷ জার্মানির কোনো রাজ্যেও এই দুই দল জোটগতভাবে নেতৃত্বে নেই৷

লাল-সবুজ

এসপিডির চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্রোয়েডারের আমলে (১৯৯৮-২০০৫) এই জোট জার্মানির নেতৃত্ব দিয়েছে৷ ২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনে এই দুই দলের মিলিত ভোট এবং আসনের চেয়ে সিডিইউ বেশি ভোট ও আসন পেয়েছে৷

সাধারণত ধরে নেয়া হয়, এসপিডির সমর্থকদের মধ্যে রয়েছে বয়স্ক বামপন্থি, শ্রমজীবী শ্রেণি, ট্রেড ইউনিয়নের সদস্যরা৷ আর প্রগতিশীল শহুরে বামপন্থিরা সবুজ দল করে৷ সুতরাং তাদের একটা জোট হতে পারে৷ তবে এই ফর্মুলা ২০০৩ সালেও খাটেনি৷ ওই সময় তারা নব্য-উদারীকৃত শ্রম সংস্কার কর্মসূচি নিয়েছে৷ যার ফলে তাদের অনেক সমর্থন বামদলে চলে যায়৷  

লাল-সবুজ জোটছবি: picture-alliance/dpa

লাল-লাল-সবুজ

সামাজিক গণতন্ত্রী দল (এসপিডি), বাম এবং সবুজ দলের এই জোট আগে জাতীয় পর্যায়ে দেখা যায়নি৷

পূর্ব জার্মানির একনায়কতন্ত্রের গন্ধ থেকে এখনো বামদল মুক্ত হতে পারেনি৷ এ কারণে অন্য দলগুলো এদের সাথে জোট করতে উৎসাহী হয় না৷ তাছাড়া দলটি ন্যাটো ত্যাগ করতে চায়৷ এটা জার্মানির মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে বিগড়ে দিতে পারে বলে অন্য দলগুলোর আশঙ্কা৷

এত সবের মধ্যেও গত সেপ্টেম্বরে জার্মানির রাজধানীতে এই জোট সফলতা পেয়েছে৷ ফলে জাতীয় পর্যায়ে এই জোট হওয়ার পথ খুলেছে৷

জ্যামাইকা জোট: সিডিইউ, এফডিপি ও গ্রিন পার্টি

জার্মানির রক্ষণশীল দলগুলোর কাছে বামপন্থি দলগুলোর মধ্যে সবুজ দলেরই গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি৷ কারণ সবুজ দলের ভোটারদের মধ্যে সাধারণত শ্রমিক শ্রেণির ভোটাররা পড়েন না৷

কালো-হলুদ-সবুজের এই জোট কখনো কেন্দ্রীয় সরকারে ছিল না৷ তবে তারা ২০০৯-২০১২ সাল পর্যন্ত সারল্যান্ড নামে একটি রাজ্য শাসন করেছে৷ এই জোটের বিভিন্ন স্থানীয় জেলা পরিষদও শাসন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে৷

‘ট্রাফিক লাইট' জোট

ট্রাফিক লাইটে লাল আর সবুজের মাঝে যেমন হলুদ থাকে, তেমনি এসপিডি ও সবুজ দল এমন একটা দলকে সহযোগী হিসাবে চায়, যে দল তাদের মূল পরিকল্পনায় বাঁধ সাধবে না৷ কিন্তু তাদেরকে ক্ষমতায় যেতে সহযোগিতা করতে পারবে৷

এফডিপির সাবেক নেতা গিডো ভেস্টারভেলে জাতীয় পর্যায়ে এমন জোটকে নাকচ করে দিয়েছেন৷ কারণ দলগুলোর মধ্যে পার্থক্য অনেক৷ 

লাল-কালো-সবুজের কেনিয়া জোট

এসপিডি, সিডিইউ এবং সবুজ দলের রং লাল-কালো-সবুজ৷ কেনিয়ার জাতীয় পতাকায়ও এই রং ব্যবহার করা হয়৷ এ কারণে সম্ভাব্য এই জোটকে কেনিয়া জোট বলা হয়৷ এই তিন রং দিয়ে আফগানিস্তানেরও পতাকা হয়৷ তাই এই জোটকে আফগানিস্তান জোট বলেও অনেকে ডাকেন৷

সংসদে সব সময়ই এসপিডি ও সিডিইউ'র প্রতিনিধিত্ব ৫০ শতাংশের বেশি থাকে৷ আর সবুজ দলকে পরিবেশ মন্ত্রণালয় দিলেই তারা সন্তুষ্ট থাকে৷

সরকার গঠনে এই তিন দলের জোট হওয়ার মত প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি হয় না৷ গত বছর স্যাক্সোনি-আনহাল্ট রাজ্যে এসপিডির ভরাডুবির পর সেখানে কিছুটা এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ ওই সময় রাজ্যটিতে ‘জার্মানির জন্য বিকল্প' বা এএফডি দল হঠাৎ করেই বেশ সামনে চলে আসে৷

জার্মানির রাজনৈতিক দল নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷ আমরা উত্তর দেবো...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ