লকডাউনের কড়াকড়ি শিথিল হওয়ায় উৎসবে মেতেছিল গ্যোটিঙ্গেন শহর৷ তাতেই দেখা দিয়েছে সারা শহরে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা৷ মধ্য জার্মানির শহরটিতে তাই আবার ফিরেছে লকডাউনের কড়াকড়ি৷
বিজ্ঞাপন
রমজান শেষ৷ গত ২৩ মে এ আনন্দে সমবেত হয়েই আনন্দে মেতেছিলেন মূলত সাবেক যুগোস্লাভিয়া থেকে আসা কিছু পরিবারের সদস্যরা৷ সেখানে উপস্থিত কয়েকজনের দেহে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়ে৷ ফলে ওই এলাকা লকডাউন করে সেখানকার ৭০০ পরিবারের প্রত্যকের করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ৷ পাশাপাশি শহরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সব ক্লাবে খেলাধুলাও বন্ধ করা হয়েছে আবার৷ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরে মোট ১০৫ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে৷
লকডাউনের কড়াকড়ি শিথিল করায় গ্যোটেঙ্গিনে দেখা দিয়েছিল উৎসবের আমেজ৷ শহরের বড় এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক লার্স হুমরিশ বলেন, ‘‘সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, কিছু মানুষ মনে করেন নিয়ম-কানুন তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়৷’’
এদিকে স্কুল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতা স্থানীয় রেডিওকে জানান, শহরের সব স্কুল আবার বন্ধ ঘোষনা করায় অভিভাবকরা ‘বিস্ময়করভাবে উদ্বিগ্ন’৷ তবে অভিভাবকদের অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্তে তাদের সমর্থন ছিল৷
জার্মানিতে এ পর্যন্ত এক লক্ষ ৮৪ হাজার ৪২৫ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে৷ এর মধ্যে মারা গেছেন মোট আট হাজার ৬৯৯ জন৷ সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৬২ লক্ষ ৮৭ হাজার ৭৭১, মৃতের সংখ্যা তিন লক্ষ ৭৯ হাজার ৯৪১৷
এসিবি/কেএম (ডিপিএ)
করোনার বিরুদ্ধে যৌনকর্মীদের লড়াই
যৌনব্যবসা স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে জার্মানিতে৷ এর প্রতিবাদে খোলা চিঠি লিখেছেন যৌনকর্মীরা, করোনা ভাইরাসের কারণে মহাসংকটে থেকেও নেমেছেন নতুন লড়াইয়ে৷ দেখুন ছবিঘরে....
ছবি: picture-alliance/AP/M. Probst
‘তারা সুপার স্প্রেডার’
সম্প্রতি ১৬ জন সাংসদ জার্মানিতে যৌনব্যবসা নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন৷ এমন দাবি তুলে লেখা এক চিঠিতে তারা বলেছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যৌনকর্ম কখনো সম্ভব নয়৷ এ কারণে যৌনকর্মীদের মাধ্যমে ব্যাপক হারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থায়ীভাবে যৌনব্যবসা নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে ১৬ জন সংসদ সদস্য৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Schlueter
‘আমরা সুপার স্প্রেডার নই’
ওই ১৬ জন সংসদ সদস্যের উদ্দেশ্যে লেখা খোলা চিঠি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জার্মানির যৌনকর্মীদের কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএসডি৷ চিঠির মাধ্যমে 'পরিচ্ছন্নতার ধারনা' তুলে ধরে বার্লিনভিত্তিক সংস্থাটি বলেছে, ‘‘আমরা সুপার স্প্রেডার নই৷ অন্যসব ব্যবসার মতো আমাদেরকেও ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে৷’’
ছবি: picture-alliance/PA Wire/D. Lipinski
ভুল ধারণা, ভিত্তিহীন আশঙ্কা
খোলা চিঠি এবং সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা বক্তব্যে জার্মানির যৌনকর্মীরা দাবি করছেন, তাদের সম্পর্কে ভুল ধারণা থাকায় ওই সংসদ সদস্যরা যৌনব্যবসা নিষিদ্ধ করতে চাইছেন৷ বিএসডি-র পক্ষ থেকে বলা হয়, জার্মানিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুব কঠোরভাবে বজায় রেখেই যৌনব্যবসা পরিচালিত হয় এবং সতর্ক থাকলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি দূরে রেখে এই ব্যবসা চালু রাখা সম্ভব৷
ছবি: picture-alliance/AP/M. Probst
দাবি ও পরামর্শ
খোলা চিঠিতে অবিলম্বে জার্মানির সব যৌনপল্লী খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএসডি৷ তাদের প্রশ্ন, মাসাজ পার্লার, চুল কাটার দোকান ইত্যাদি খুললে যৌনব্যবসা কেন বন্ধ থাকবে? ছোট যৌনপল্লীতে আপাতত একসময়ে সর্বোচ্চ ১০ জন যৌনকর্মীকে কাজ করার সুযোগ দেয়া এবং বড় যৌনপল্লীতে সব ঘর না খোলার পরামর্শ দিয়েছে তারা৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Macdougall
জার্মানিতে যৌন ব্যবসা বৈধ
গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে জার্মানিতে যৌনব্যবসা বন্ধ রয়েছে৷ তবে লকডাউন ধীরে ধীরে যখন শিথিল হচ্ছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে শুরু করেছে, তখন যৌনকর্মীরাও একই নিয়মে ব্যবসায় ফিরতে পারবে বলে আশা করছে বিএসডি৷ জার্মানিতে যৌন ব্যবসা বৈধ৷ নিয়মিত আয়কর দেন যৌনকর্মীরা৷