জার্মানির কার্বন প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন
২৪ মে ২০১১একথা আর এখন কারো অজানা নয় যে, নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে মিশে গিয়ে বিশ্বের জলবায়ুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পরিণতি ডেকে আনছে৷ কিন্তু জার্মানিতে সাধারণ মানুষের আপত্তির কারণে ভাটেনফালের পরিকল্পিত সুরক্ষা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে৷
জার্মানির রাজধানী বার্লিনের প্রতিবেশী ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে বসবাসরত অধিবাসীরা ইতোমধ্যেই তাদের বাড়ির বাগানের বেড়ায় লিখে রেখেছেন ‘‘আমরা গিনিপিগ নই''৷ মাটির নীচে অর্থাৎ তাদের বাড়ির নীচে তরলিত কার্বন ডাই অক্সাইড মজুদ করে রাখার পরিকল্পনার বিরুদ্ধেই তারা বিক্ষুব্ধ৷ ঐ প্রক্রিয়াটি কার্বন ক্যাপচার এবং স্টোরেজ অথবা সিসিএস নামেই পরিচিত৷ এই প্রক্রিয়ার আওতায় গ্রিন হাউস গ্যাস তরল করে মাটির নীচে রেখে দেওয়া যায়৷
বার্লিনের সংসদে ব্রান্ডেনবুর্গের পূর্বাঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেন হান্স-গেওর্গ ফন ডেয়ার মারভিৎস৷ তিনি বললেন, সুইডিশ জ্বালানি সংস্থা ভাটেনফাল তার পরিকল্পিত সিসিএস কয়লাচালিত জ্বালানি প্রকল্প তৈরি করতে সফল হবে বলে তিনি মনে করেননা৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের অধিবাসীরা একটি বিষয় নিশ্চিত করতে চান যে, ঝুঁকিপূর্ণ কোন প্রযুক্তি ব্যবস্থা আমাদের ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িয়ে যাবে না৷''
ঐ সিসিএস প্রকল্পে যে ঝুঁকি বা আশঙ্কা রয়েছে সেটি হচ্ছে, কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয়ে মাটির নীচে পানির সঙ্গে মিশে গিয়ে বিষে পরিণত হতে পারে৷ অথবা মাটির নীচ থেকে ওপরে বের হয়ে আসতে পারে৷ তবে সবাই যে সিসিএস পদ্ধতির বিরোধিতা করছে তা নয়৷ অনেকেই বলছেন, এর মধ্যে দিয়ে কয়লা শক্তির টিকে থাকার সম্ভাবনা বজায় থাকবে এবং তা একই সঙ্গে বিশ্বের উষ্ণায়নের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারবে৷
সিসিএস প্রকৃতপক্ষে কয়লা শক্তিকে বিশ্বে জ্বালানি প্রয়োজনের জন্য স্বল্পমেয়াদি এক সমাধানের রূপ দিতে পারে৷ তবে সমালোচকরা বলছেন, তা করা হলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস ব্যবহারের গতি কমে যাবে৷ ভাটেনফাল জার্মানির পূর্বাঞ্চলে বিশাল আকারের লিগনাইট কয়লা প্রকল্প পরিচালনা করছে৷ এবং ২০০৯ সাল থেকে ব্রান্ডেনবুর্গে সিসিএস পাইলট প্রকল্প নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে৷ এই প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘‘ব্ল্যাক পাম্প''৷
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক