1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনৈতিক দলগুলো

২৮ মে ২০১৭

সেপ্টেম্বরে সংসদ নির্বাচন হবে জার্মানিতে৷ এবার প্রতিদ্বন্দিতা এমন তীব্র হতে পারে, যা চ্যান্সেলর ম্যার্কেল কখনোই প্রত্যাশা করেননি৷ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগে জার্মান রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য৷

আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ছবি: Getty Images/C. Koall

খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন (সিডিইউ)/খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়ন (সিএসইউ)

রং: কালো

চেয়ারপার্সন: আঙ্গেলা ম্যার্কেল

সদস্য সংখ্যা: ৪ লাখ ৩০ হাজার

ভোটার: ধার্মিক খ্রিষ্টান, গ্রামের অধিবাসী, ৬০-এর বেশি বয়সিদের মধ্যে এই দুই দলের প্রচুর সমর্থক রয়েছে৷ বিশেষ করে দক্ষিণ জার্মানির গ্রামাঞ্চলে এরা বেশ জনপ্রিয়৷ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মধ্যম মানের শিক্ষিত মানুষেরাও সিডিইউকে পছন্দ করেন৷

২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনের ফল: প্রাপ্ত ভোট ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ (৬৩০ আসনের মধ্যে ৩১১ আসন)

ইতিহাস: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়৷ উদ্দেশ্য ছিল, জার্মানি জুড়ে রক্ষণশীল খ্রিষ্টান ভোটারদের একত্রে আনা৷ যুদ্ধ পরবর্তী পশ্চিম জার্মানিতে এটা সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়৷ পুনরেকত্রীকরণের পরে দলটি গোটা জার্মানিতেই শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম ৬৭ বছরের মধ্যে ৪৭ বছর দলটি জার্মানিকে নেতৃত্ব দেয়৷ দলটির নেতা কনরাড আডেনাওয়ার ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন৷ তিনি এবং তাঁর অর্থমন্ত্রী লুডভিগ এরহার্ড মিলে পশ্চিম জার্মানিতে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটান৷ এই দল ক্ষমতায় থাকার সময়ই জার্মানি একত্রিত হয়৷

বাভারিয়া রাজ্যে সিডিইউ নেই৷ সেখানে শুধু সিডিইউ-এর দল খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়ন (সিএসইউ) কাজ করে থাকে৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ে উদ্বাস্তু ইস্যু নিয়ে দুই দলের মতভেদ স্পষ্ট হয়েছে৷

প্ল্যাটফর্ম: আঙ্গেলা ম্যার্কেল নিজের মতো করে একদিকে যেমন সিডিইউ-র মূল্যবোধ রক্ষা করেছেন, আবার ভেঙেছেনও৷ অর্থনীতিকে শৃঙ্খলায় রাখতে ভোটাররা তার উপর আস্থা রাখে৷ তিনি এখনো সমলিঙ্গের বিয়ের বিরুদ্ধে৷ তবে অভিবাসীদের প্রতি উদার দৃষ্টিভঙ্গি সিডিইউ-র সাধারণ প্রবণতার ব্যতিক্রম৷

সম্ভাব্য জোটসঙ্গী: এফডিপি, এসপিডি, সবুজ দল

ছবি: picture-alliance/U. Baumgarten

সামাজিক গণতন্ত্রী দল (এসপিডি)

রং: লাল

চেয়ারপার্সন: মার্টিন শুলৎস

চ্যান্সেলর প্রার্থী: মার্টিন শুলৎস

২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনের ফল: ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ (৬৩০ আসনের মধ্যে ১৯৩ আসন)

সদস্য সংখ্যা: ৪ লাখ ৪০ হাজার

ভোটার: এসপিডি ঐতিহ্যগতভাবেই শ্রমজীবী মানুষের দল৷ ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে সংগঠিত শ্রমিকরাও এই দল করে৷ পশ্চিম জার্মানির ঘনবসতিপূর্ণ শিল্পাঞ্চলে এই দলটির শক্ত ভিত রয়েছে৷

ইতিহাস: এসপিডি জার্মানির সবচেয়ে পুরাতন রাজনৈতিক দল৷ ১৮৭৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে এটি বাম আন্দোলন, ট্রেড ইউনিয়ন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং কমিউনিস্টদের ছাতা সংগঠন হিসাবে কাজ করে৷ তবে ১৯১৯ সালে কমিউনিস্ট পার্টি অফ জার্মানি (কেপিডি) প্রতিষ্ঠিত হলে এসপিডি পাকাপাকিভাবে সংস্কারবাদীদের দলে পরিণত হয়৷

এই দল থেকে নির্বাচিত ভিলি ব্রান্ট ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন৷ এর আগে সিডিইউ-র সঙ্গে জোট সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় যুদ্ধ পরবর্তী পূর্ব ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ভূমিকা রেখে আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম কুড়ান তিনি৷

৬৭ বছরের মধ্যে ২১ বছর দলটি জার্মানির নেতৃত্ব দেয়৷ মোট ৩৪ বছর ক্ষমতার অংশীদার হিসাবে ছিল৷

প্ল্যাটফর্ম: দলটি সব শক্তিশালী সামাজিক অবকাঠামোয় সক্রিয়৷ এই দলই জার্মানিতে প্রথম ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে৷ ২০১৫ সালে এসে ৮ দশমিক ৮৪ ইউরো৷

তবে দলটি এখন সামাজিক ন্যায় বিচার ও কর পুনঃনির্ধারণের মতো ইস্যুগুলোর দিকে যাচ্ছে৷

সম্ভাব্য জোটসঙ্গী: সিডিইউ, সবুজ দল, বামদল                                                     

ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld

বামদল

রং: লাল (এসপিডির সাথে পার্থক্য বোঝাতে নির্বাচনে কখনো কখনো ম্যাজেন্ডাও ব্যবহার করে)

চেয়ারপিপল: কাটিয়া কিপিং, ব্যার্ন্ড রিকসিঙ্গার

চ্যান্সেলর প্রার্থী: সারা ভাগেনক্নেশ্ট, ডিটমার বার্টশ

২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনের ফল: ৮ দশমিক ৬ শতাংশ (৬৩০ আসনের মধ্যে ৬৪ আসন)

সদস্য সংখ্যা: ৬০ হাজার

ভোটার: সাবেক পূর্ব জার্মানির প্রদেশগুলোতে বামদল বেশ শক্তিশালী৷

ইতিহাস: যদিও বামদল ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, কিন্তু এর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে৷ এটাকে সমাজতান্ত্রিক ঐক্য দলের (এসইডি) সরাসরি বংশধর বলে মনে করা হয়৷ দলটি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পূর্ব জার্মানি শাসন করেছে৷

এসইডির উত্তরসূরি পিডিএস, ডব্লিউএএসজি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দল গঠিত হয়৷ কল্যাণ কর্মসূচী কেটে ফেলার পর সাবেক চ্যান্সেলর শ্র্যোডারের দল থেকে বের হয়ে ডব্লিউএএসজি গঠিত হয়৷

পূর্ব জার্মানিতে একনায়কতন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকায় মূল ধারার অন্য দলগুলো এই দলকে কিছুটা এড়িয়েই চলে৷ এ কারণে অন্য কারো সঙ্গে দলটির জোটও হয়নি৷ তবে রাজ্য পর্যায়ে শাসন করার অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে৷

প্ল্যাটফর্ম: জার্মান সংসদে বর্তমানে বড় বিরোধি দল৷ এই দলই জার্মানির একমাত্র বড় দল, যারা বিদেশে জার্মানির সামরিক মিশন পাঠানোর বিপক্ষে৷ তারা ন্যাটো ভেঙে দিতে চায়৷ তারা ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় ১০ দশমিক ৬০ ইউরোতে উন্নীত করতে চায়৷

অনেকে মনে করেন, এই দলটি পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে উল্টে ফেলতে চায়৷ তবে দলটি বলছে, তারা কেবল বাজারের উপর আরো অধিক নিয়ন্ত্রণ চায় এবং সামাজিক বিনিয়োগ বাড়াতে চায়৷

সম্ভাব্য জোটসঙ্গী: এসপিডি, সবুজ দল

ছবি: Getty Images/J. MacDougall

সবুজ দল

রং: সবুজ

চেয়ারপার্সন: চেম ও্যজদেমির, সিমোনে পেটার

চ্যান্সেলর প্রার্থী: চেম ও্যজদেমির, কাটরিন গ্যোরিং-একার্ড

২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনের ফল: ৮ দশমিক ৪ শতাংশ (৬৩০ আসনের মধ্যে ৬৩ আসন)

সদস্য সংখ্যা: ৬০ হাজার

ভোটার: এই দলের মূল সমর্থকদের মূল অংশ শহুরে উচ্চ-শিক্ষিত৷ পশ্চিম জার্মানির যে শহরগুলোতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, সেখানে তাদের অনেক সমর্থন রয়েছে৷ বর্তমানে দলটি শ্রমজীবী মানুষকেও আকৃষ্ট করছে৷

ইতিহাস: যুদ্ধ পরবর্তী জার্মানির সবচেয়ে শক্তিশালী প্রথাবিরোধি আন্দোলন গড়ে তোলার সাফল্য গ্রিন পার্টির৷ এটি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ দলটি আনবিক শক্তির বিরোধিতা থেকে শুরু করে সমকামীদের অধিকার– সবকিছু নিয়েই রাস্তায় নেমেছে, যার মধ্যে বড় জায়গাজুড়ে পরিবেশগত সুরক্ষার বিষয়টা ছিল৷

প্ল্যাটফর্ম: রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা দলটিকে দু'ভাবে ভাগ করেন৷ রিয়েলোস – যারা সরকারে প্রভাব খাটাতে দলের উদ্দেশ্যে কিছুটা ছাড় দিতে রাজি আছেন৷ ফান্ডিস – যারা কোনো ছাড় ছাড়াই কাজ করতে চায়৷ তবে উদারপন্থিরাই ধীরে ধীরে দলের নিয়ন্ত্রণ কাঠামোয় চলে যাচ্ছেন৷

সম্ভাব্য জোটজঙ্গী: এসপিডি

ছবি: picture-alliance/dpa/J. Stratenschulte

জার্মানির জন্য বিকল্প (এএফডি)

রং: হালকা নীল

চেয়ারপিপল: ফ্রাউকে পেট্রি, ইয়র্গ ময়টেন

প্রার্থী: টিবিডি

সদস্য সংখ্যা: ২৭ হাজার

ভোটার: দলটি সব বড় দল থেকেই কিছু কিছু ভোটার ভাগিয়ে নিচ্ছে৷ নিম্ন আয়– শিক্ষার মানুষ এই দলের মূল সমর্থক ভিত্তি৷ দলের সদস্যদের মাত্র ১৫ ভাগ নারী৷

২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনের ফল: ভোট ৪ দশমিক ৭ শতাংশ (৬৩০ আসনের মধ্যে দলটি কোনো আসন পায়নি)

ইতিহাস: ডানপন্থি এই জাতীয়তাবাদী দলটি ২০১৩ সালের নির্বাচনের মাত্র পাঁচ মাস পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ এতেই তারা  সংসদে প্রায় প্রবেশ করে ফেলেছিল৷ অবশ্য পরে সবগুলো রাজ্য সংসদেই তারা যেতে সক্ষম হয়৷ এমনকি ইউরোপীয় সংসদেও তারা প্রতিনিধি পাঠায়৷ ইউরোপের একক মুদ্রার বিরুদ্ধে সরব এক দল লোকের হাতে এই দল প্রতিষ্ঠিত হয়৷

জার্মানির কেবল এই দলটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং বৃটেনের ইইউ ত্যাগকে স্বাগত জানায়৷

প্ল্যাটফর্ম: এএফডি ইউরোপীয় সীমান্ত বন্ধ করে দিতে চায়৷ একইসঙ্গে তারা জার্মানির জাতীয় সীমানায়ও কঠোর তল্লাশি চালু করার পক্ষে৷ যেসব দেশের অভিবাসীরা জার্মানি যেতে চায়, তাদেরকে নিজ দেশে আটকে দিতে সেখানেই ক্যাম্প গড়তে চায় তারা৷ রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন খারিজ হলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে দেশে পাঠিয়ে দেয়ার দাবি তাদের৷ তারা ঐতিহ্যগত জার্মান সংস্কৃতির উপর গুরুত্ব দেয়৷ ইসলাম জার্মান সংস্কৃতির অংশ নয় বলেও তাদের মত৷ জলবায়ু পরিবর্তনকে এরা মানবসৃষ্ট মনে করে না৷

সম্ভাব্য জোটসঙ্গী: কোনো দলই তাদেরকে সেভাবে বিবেচনা করে না৷ তবে তাদের পলিসি সিডিইউ'র সাথে মিলে যায়৷

ছবি: picture-alliance/ dpa

মুক্ত গণতন্ত্রী  দল (এফডিপি)

রং: হলুদ

চেয়ারপার্সন: ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার

২০১৩ সালের সংসদ নির্বাচনের ফল: ৪ দশমিক ৮ শতাংশ (৬৩০ আসনের মধ্যে কোনো আসন পায়নি)

সদস্য সংখ্যা: ৫৪ হাজার

ভোটার: এই দলের অধিকাংশ সমর্থক ব্যবসায়ী, ডেন্টিস্ট, আইনজীবী প্রভৃতি স্বাধীন পেশায় নিযুক্ত৷ সমর্থকদের কিছু অংশ শ্রমিক৷

ইতিহাস: দলটি ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ ২০১৩ সাল পর্যন্ত সব সংসদেই তাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল৷ তবে সর্বশেষ এই নির্বাচনে ৫ শতাংশের নীচে ভোট পেয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্বহীন হয়ে যায় তারা৷ ৪১ বছর জোটবদ্ধভাবে তারা কেন্দ্রীয় সরকারে অংশ নেয়, যা যে কোনো দলের চেয়ে বেশি৷

প্ল্যাটফর্ম: ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকারই এই দলের মূল কর্মসূচি৷ কর কমানোর জন্যও তারা প্রচারণা চালায়৷ তাদের সর্বশেষ ইশতেহারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার বিষয় ছিল৷

সম্ভাব্য জোটসঙ্গী: সিডিইউ

জার্মানির রাজনৈতিক দল নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷ আমরা উত্তর দেবো...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ