জার্মানির গ্লাসহ্যুটে শহরের স্লোগান, ‘এই শহর সময়ের ঘরবাড়ি!’ কারণ সেখানে জার্মানির সবচেয়ে বেশি ঘড়ি কারখানা আছে৷ ১৮৪৫ সালে সেখানে প্রথম মেকানিক্যাল ঘড়ি তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়৷
বিজ্ঞাপন
বর্তমানে নয়টি ঘড়ি কারখানায় প্রায় ১,৭০০ জন কাজ করছেন৷ ফলে শিগগিরই হয়ত ‘মেড ইন গ্লাসহ্যুটে' একটি ট্রেডমার্ক হয়ে উঠতে পারে৷
জার্মানির ড্রেসডেন থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্লাসহ্যুটে৷ ১৮৪৫ সালে স্যাক্সোনি সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ঋণ দিয়ে গ্লাসহ্যুটেতে প্রথম ঘড়ির কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফার্দিনান্দ আডল্ফ লাঙ্গে৷
জার্মানির ঘড়ির শহর গ্লাসহ্যুট
03:57
গ্লাসহ্যুটে স্টেশনের সঙ্গে ‘নমোস' ঘড়ি কারখানার একটি ভবন আছে৷ ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি এখন জার্মানির সবচেয়ে বড় ঘড়ি নির্মাতা৷ কোম্পানির ডিজাইন ও ব্র্যান্ড প্রধান ইয়োডিথ বরোভস্কি বলেন, ‘‘১৭৫ বছর আগে ঘড়ি নির্মাতারা যেভাবে কাজ করতেন এখনও আমরা তার অনেক কিছু ব্যবহার করি৷ এখনও অনেক কাজ হাতে করা হয়৷ কিন্তু যে জায়গায় হাতের চেয়ে উচ্চপ্রযুক্তি ব্যবহার করলে মান ভালো হবে বলে মনে হয়, সেখানে আমরা তাই করি৷ যেমন এমন কিছু আছে যেগুলো চুলের চেয়েও পাতলা৷ অর্থাৎ মাইক্রোমিলিমিটার পর্যায়ের কাজের জন্য আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি৷ এভাবে আধুনিকতা আর ঐতিহ্যের মিল ঘটে৷’’
নমোসের ক্রনোমেট্রি বিভাগে খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হয়৷ তারা বাউহাউস ম্যুভমেন্ট থেকে ঘড়ির ডিজাইনের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন৷ দেশের বাইরেও নমোসের কয়েকটি অফিস আছে৷ ৫২ দেশে ঘড়ি রপ্তানি করে তারা৷
হানাহ হুমেল/জেডএইচ
ইউরোপের বিখ্যাত ও সুন্দর যত ঘড়ি
ইউরোপের বিভিন্ন শহরের প্রাচীন ভবনের দেয়ালে শোভা পায় দৃষ্টিনন্দন কিছু ঘড়ি৷ এসব ঘড়ি শুধু সময়ই জানায় না, ইউরোপের রাজা-বাদশাহদের শিল্প চর্চার প্রতীক হিসেবেও কাজ করে৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
লন্ডনের ‘বিগ বেন’
লন্ডনের বিগ বেন ঘড়িটিকে বলা হয় ইউরোপের দেয়ালে ঝুলানো সবচেয়ে বিখ্যাত ঘড়ি৷ তবে যে ভবনের দেয়ালে ঘড়িটি ঝোলানো আছে, তার ডাক নাম বিগ বেন৷ ভবনটির প্রকৃত নাম হলো এলিজাবেথ টাওয়ার৷ ‘ভয়েস অব ব্রিটেন’ নামে খ্যাত এ ঘড়িটি প্রতি ঘন্টায় একবার করে ঘণ্টা বাজিয়ে তার উপস্থিতি জানান দেয়৷ তবে ভবনটির সংস্কার কাজ চলছে বলে আগামী কয়েক বছর ঘড়িটির পরিচিত এ ঘণ্টা শুনবে না কেউ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/PA Wire/V. Jones
বার্লিনের ‘ওয়ার্ল্ড টাইম ক্লক’
আধুনিক নকশায় খচিত বার্লিনের আলেকজান্দ্রিয়া প্লাৎসে স্থাপিত ওয়ার্ল্ড টাইম ক্লক’টি দর্শণার্থীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়৷ বিখ্যাত শিল্পী এরিখ জন-এর নকশা করা এ ঘড়িটি ১৯৬৯ সালে দর্শণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়৷ দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যে খচিত এ ঘড়ির উপরের অংশটি আমাদের সৌরজগতেকে চিত্রায়িত করেছে৷ আর নিচের দিকে নকশা করা সিলিন্ডারটিতে বিশ্বের ২৪টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানের সময় নির্দেশ করে৷
ছবি: picture-alliance/Bildagentur-online/Schöning
‘টাউনহল ক্লক‘
চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগ শহরের টাউন হলের দেয়ালে খচিত জোতির্বিদ্যা বিষয়ক ‘টাউনহল ক্লক’টি গোথিক প্রযুক্তির একটি বিশেষ নিদর্শন৷ কথিত আছে যে, ১৪১০ সালে স্থাপিত এ ঘড়ির নির্মাণের পর নকশাকারীর চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছিল, যেন একই নকশার আর কোনো ঘড়ি কেউ নির্মাণ করতে না পারে৷
ছবি: picture-alliance/chromorange/Bilderbox
স্ট্রাসবুর্গের ‘জ্যোতির্বাদ্যা ঘড়ি’
জার্মানির স্ট্রাসবুর্গ শহরের ক্যাথেড্রেলে স্থাপিত একজন সুইস স্থপতির নকশা করা এ ঘড়িটি মূলত ইউরোপের রেনেসাঁর চিহ্নবিশেষ৷ প্রতিদিন দূপুর সাড়ে বারোটায় চালু হয় এটি৷ ঘড়িটির চারপ্রান্তে শিশু, তরুণ, প্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রবীণদের মূর্তি রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images GmbH/G. Lenz
ভিয়েনার ‘অ্যাঙ্কর ক্লক’
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা শহরের অ্যাঙ্কর ক্লকটি শহরটির হহে মার্কট স্কয়ারে অবস্থিত অ্যাঙ্কর-হফ ভবনের দুটি আংশকে একটি সেতুর মতো করে একত্রিত করেছে৷ প্রতি ১২ ঘণ্টায় কপারের তৈরি ১২টি ঐতিহাসিক মূর্তি সেতুটি অতিক্রম করে৷
ছবি: picture-alliance /picturedesk/K. Schöndorfer
ভেনিসের ‘টরে ডেল’অরলোগিয়ো’
ইটালির ভেনিস শহরে সেন্ট মার্ক স্কয়ারে স্থাপিত টরে ডেল’অরলোগিয়ো ঘড়িটি শুধু সময়ই নির্দেশ করছে না, বরং চন্দ্র ও সৌর বর্ষের নির্দেশনাও দিচ্ছে৷ ২০০৬ সাল থেকে ঘড়িটিকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে তত্তাবধান করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Engelhardt
ফ্রান্সে রয়েছে ‘জাদুর ঘর’
ফ্রান্সের ব্লইস শহরে স্থাপিত এটিকে ঠিক ঘড়ি বলা না গেলেও স্থাপনাটির ড্রাগন আকৃতির দুটি মাথা সময়ের নির্দেশনা দেয়৷ প্রতি আধা ঘণ্টায় একবার ড্রাগন আকৃতির মাথা দুটি বেরিয়ে এসে ভয়ানকভাবে সামনের দিকে দৌড়াতে থাকে৷ স্থাপনাটির পিছনে রয়েছে যাদুবিদ্যা প্রদর্শনকারী একটি যাদুঘর৷ উল্যেখ্য, আধুনিক যাদুবিদ্যার জনক রবার্ট-হোডিন৷ ব্লইস শহরে জন্মগ্রহন করেছিলেন তিনি৷