জার্মানির এক জঙ্গলে একজন মানুষের মাথার খুলি খুঁজে পেয়েছে একদল শিক্ষার্থী৷ তাদের এই রোমহর্ষক আবিষ্কার গত বছরের এক রহস্যময় মরদেহের পরিচয় খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারে৷
বিজ্ঞাপন
রাইন নদীর তীরে এক ব্যক্তির মস্তকবিহীন দেহের অংশবিশেষ পাওয়া গিয়েছিল৷
ক্লাস থেকে ভ্রমণে যাওয়া একদল স্কুল শিক্ষার্থী জঙ্গলের মধ্যে হাঁটার সময় মাথার খুলিটি এবং কিছু হারগোরের সন্ধান পান৷ বুধবার পুলিশ জানিয়েছে এই তথ্য৷ কোলনের ফোগেলসাং পার্কে খুলিটির সন্ধান পায় তারা৷ তদন্তকারীরা জার্মান ট্যাবলয়েড ‘বিল্ড’কে এই বিষয়ে জানিয়েছেন যে, ‘‘দেহাবশেষ মাটির নীচে চাপা দেয়া ছিল না, বরং লতাপাতা দিয়ে ঢাকা ছিল৷’’
পুলিশ ইতোমধ্যে মাথার খুলির ডিএনএ পরীক্ষা করেছে এবং গত বছর রাইন নদীর তীরে পাওয়া মস্তকবিহীন দেহের সঙ্গে এটির মিল রয়েছে বলে জানিয়েছে৷ সেই দেহের সন্ধানও পেয়েছিল একদল তরুণ৷ একটি প্লাস্টিক ব্যাগ দেখে আগ্রহী হয়ে খোলার পর সেটির মধ্যে হাত-পা ছাড়া মস্তকবিহীন দেহটি দেখেছিল তারা৷
জার্মানির বন-জঙ্গল
জার্মানরা বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন৷ এভাবে অবসর সময় কাটাতে আর হাঁটতেও ভালোবাসেন তাঁরা৷ চলুন সে রকমই জার্মানির কিছু বনানির সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
জাতীয় পার্ক ইয়াসমুন্ড
ইয়াসমুন্ডের এই পার্কটি জার্মানির জাতীয় পার্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট পার্ক৷ বিখ্যাত ব়্যুগেন দ্বীপের একেবারে উত্তরে অবস্থিত এই পার্কের সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে, করে মুগ্ধ৷ ইউনেস্কো ২০১১ সালে ইয়াসমুন্ড পার্কটিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়৷
ছবি: Scoopshot/ac-images
এলবে নদীর নিসর্গ
প্রকৃতি সৃষ্ট নিসর্গের মধ্যে অন্যতম নদী পরিবেষ্টিত চরগুলি৷ নিয়মিত বন্যা হওয়ার কারণে এই সব চরে গাছপালা এবং পশুপাখিরা আনন্দে বেঁচে থাকে৷ যেমনটা এখানে, ব্রান্ডেনবুর্গের এলবে নদীতে৷ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এলবে নদীর এই চরটিকে ১৯৭৯ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যর অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB
হারৎস
জার্মানির মধ্যভাগে অবস্থিত হারৎসের পাহাড়ি অঞ্চল শুধু জার্মানির সবচেয়ে বড় বনভূমি নয়, জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় বনাঞ্চলও বটে৷ ১৮২৪ সালে অন্যতম জার্মান লেখক হাইনরিশ হাইনে তাঁর ভ্রমণ কাহিনিতে এই অঞ্চলকে তুলে ধরেন৷ যাঁরা হাঁটতে পছন্দ করেন তাঁদের কাছে জায়গাটি খুবই প্রিয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB
হাইনিশ জাতীয় পার্ক
জার্মানির ট্যুরিঙ্গেন রাজ্যে রয়েছে ‘বুখেন’ বা বীচ গাছে ঘন জঙ্গল৷ এই বনের কয়েকটা গাছ আবার গত ৮০০ বছর ধরে এইভাবে একেবারে সাড়ি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ এর জন্যই ইউনেস্কো ২০১১ সালে এই বনভূমিকে বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ এখানে বনবিড়ালের মতো অনেক বিরল প্রাণীও দেখা যায়৷
ছবি: DW/C. Hoffmann
স্পেসার্ট
জার্মানির দক্ষিণে অবস্থিত বাভারিয়া এবং হেসেন রাজ্যের মাঝামাঝি একটি পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত এই বনটি৷ আগে স্পেসার্ট ছিল ধনী ও বিশপদের শিকার করার জায়গা৷ শুধু তাই নয়, ঊনিশ শতকে এই জঙ্গলেই আস্তানা গড়েছিল জার্মানির কুখ্যাত ডাকাতরা৷ ১৮২৭ সাল থেকে ‘‘দাস ভির্টহাউস ইম স্পেসার্ট’’ নামে পরিচিতি লাভ করে এই ঘন বনাঞ্চল৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
ব্ল্যাক ফরেস্ট
ব্ল্যাক ফরেস্ট বা কৃষ্ণ অরণ্য নিয়ে নানা রকম ভূতের গল্প প্রচলিত আছে জার্মানিতে৷ আছে এই জঙ্গলের নামে একটি কেক-ও৷ সে জন্যই হয়ত এই কৃষ্ণ অরণ্যের জাতীয় পার্কের মর্যাদা পাওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে৷ আবার অন্যদের আশঙ্কা, জাতীয় পার্ক হলে এখান থেকে আর ফল সংগ্রহ বা গাছ কাটা যাবে না – জার্মানিতে পরিবেশ রক্ষা সত্যিই যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়!
ছবি: picture-alliance/Ronald Wittek
বাভারিয়ার জাতীয় পার্ক
রাখেল লেক বাভারিয়ার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ হ্রদের মধ্যে একটি৷ লেকটি ঘিরে প্রায় ১০৭০ মিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই বন, যেখানে গত কয়েক দশকে একটি গাছও কাটা হয়নি৷ খুবই নিরিবিলি ও শান্ত পরিবেশ এখানে৷ তাই হাঁটার জন্যও খুব উপযোগী এই অঞ্চল৷ ১৯৭০ সালে এই পার্কটিকে জার্মানির প্রথম জাতীয় পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জাতীয় পার্ক ব্যার্শটেসগাডেন
এটা আলপস পর্বতমালায় অবস্থিত জার্মানির একমাত্র জাতীয় পার্ক৷ পার্কটি উচ্চ পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থানের কারণে পর্যটকরা এখানে এলে বিরল প্রাণীর দেখা পান৷ তাই তো পক্ষীপ্রেমী আর বন্যপ্রাণী গবেষকদের জন্য এটা দারুণ একটা জায়গা৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
8 ছবি1 | 8
সেই সময় পুলিশ শুধুমাত্র নিহত ব্যক্তির বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে এবং পাতলা গড়নের বলে জানাতে পেরেছিল৷ এখন খুলি খুঁজে পাওয়ায় মরদেহটি শনাক্ত করা কিছুটা সহজ হবে বলে মনে করছে পুলিশ৷ তবে তার ডিএনএ'র সঙ্গে পুলিশের ডাটাবেজে থাকা কোনো ডিএনএ নমুনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
শিক্ষার্থীদের আবিষ্কারের পর তদন্তকারীরা ফোগেলসাং জঙ্গলটিতে অনুসন্ধান চালিয়েছে, তবে আর কোনো দেহাবশেষ পায়নি৷
এদিকে, দুই জায়গা থেকে মরদেহের অংশবিশেষ উদ্ধার হলেও এখনো সেটা সম্পূর্ণ নয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা৷ কঙ্কাল গড়তে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, দেহের কিছু অংশ এখনো পাওয়া যায়নি৷ ফলে নিহত ব্যক্তি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা এখনো পাওয়া যাচ্ছে না৷
প্রসঙ্গত, যে স্থানে মাথার খুলি পাওয়া গেছে, সেটি সাধারণত হাঁটার রাস্তা থেকে সরাসরি দেখা যায় না৷ তবে সেখানে একটি পচে যাওয়া ম্যাট্রেস, বিছানাপত্র এবং খালি স্পোর্টস ব্যাগ পাওয়া গেছে, যা থেকে ধারণা করা হয়, সেখানে কেউ একজন থেকেছিল৷ সেটি কোনো হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার জায়গা কিনা তা-ও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ৷