জার্মানির খুদেরা প্রমাণ করল দেশের নদীগুলি প্লাস্টিকমুক্ত নয়৷ ৩০০ স্কুলের ৫ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী নদী থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করেছে৷ সেই আবর্জনা পরীক্ষা করেই জানা গেছে নদীগুলির দূষণের মাত্রা৷
বিজ্ঞাপন
দূষণ নিয়ে প্রথম বিশ্বের দেশগুলি আগে থেকেই যথেষ্ট সচেতন৷ বনে অনুষ্ঠিত সবশেষ পরিবেশ সম্মেলনেও দূষণ নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে৷ বস্তুত আবর্জনা রিসাইকেলের বিষয়ে অনেকদিন ধরেই সচেতন জার্মানি৷ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো এবং প্লাস্টিক আবর্জনার রিসাইকেলের বিষয়ে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই৷ কিন্তু তাতেও কি প্লাস্টিকের হাত থেকে পরিবেশকে বাঁচানো যাচ্ছে?
সম্প্রতি জার্মানির বেশ কিছু স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি পরীক্ষানিরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়৷ নর্থ জার্মান রিসার্চ ল্যাব কিলার ফোরশুংসভ্যার্কসাটের তরফ থেকে পরীক্ষাটির ব্যবস্থা করা হয়৷ এবং তার ফলাফল যথেষ্ট আশঙ্কাজনক৷
পানির নয়, যেন প্লাস্টিকের নদী
বিশ্বের সাগরগুলিতে যে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক গিয়ে পড়ে, তার অধিকাংশই আসে এশিয়ার আটটি ও আফ্রিকার দু’টি নদী থেকে৷ এসব নদীর অপরাপর পরিবেশগত সমস্যাও কম নয়৷
ছবি: Imago/Xinhua/Guo Chen
১) ইয়াংৎসে নদী
ইয়াংৎসে হলো এশিয়ার দীর্ঘতম ও বিশ্বের তৃতীয় দীর্ঘতম নদী৷ সাগরে প্লাস্টিক বয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও দৃশ্যত ইয়াংৎসে সবার ওপরে – অন্তত সাম্প্রতিক একটি জরিপ তাই বলছে৷ ইয়াংৎসে শাংহাইয়ের কাছে পূর্ব চীন সাগরে গিয়ে পড়ে৷ চীনের অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য এই নদীটির গুরুত্ব অসীম৷ ইয়াংৎসের উপকূলে ৪৮ কোটি মানুষের বাস, যা কিনা চীনের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ৷
ছবি: Imago/VCG
২) সিন্ধু নদ
জার্মানির হেল্মহলৎস পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের সমীক্ষা অনুযায়ী, সাগরে যে প্লাস্টিক গিয়ে পড়ে, তার ৯০ শতাংশ আসে বিশ্বের ১০টি নদী থেকে৷ সিন্ধু নদ বা ইন্ডাস রিভার তাদের মধ্যে দ্বিতীয়৷ এশিয়ার বৃহত্তম নদীগুলির অন্যতম এই নদ ভারত ও পাকিস্তান হয়ে আরব সাগরে গিয়ে পড়েছে৷ কোটি কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা এই নদীর সঙ্গে জড়িত, কিন্তু অবকাঠামো ও পয়ঃনিষ্কাশনের অভাবে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক নদীতে গিয়ে পড়ে৷
ছবি: Asif Hassan/AFP/Getty Images
৩) হোয়াংহো নদী
মাছ-মাংসের ভিতর দিয়ে প্লাস্টিক মানুষের খাদ্যেও পৌঁছাতে পারে৷ চৈনিক সভ্যতার জন্মই নাকি হোয়াংহো নদীর তীরে৷ সেই নদীর কিন্তু প্লাস্টিক ছাড়া আরো অনেক সমস্যা আছে৷ দূষণের ফলে এই নদীর পানি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পানের অযোগ্য হয়ে উঠেছে৷ নদীতে বিভিন্ন মাছের প্রজাতির প্রায় ৩০ শতাংশ ইতিমধ্যেই লোপ পেয়েছে বলে গবেষকদের ধারণা৷
ছবি: Teh Eng Koon/AFP/Getty Images
৪) হাই নদী
এই নদীটি চীনের দু’টি সর্বাপেক্ষা জনবহুল শহুরে এলাকা তিয়ানজিন ও বেইজিংয়ের মধ্যে যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে, তারপর বোহাই সাগরে গিয়ে পড়ে, যা কিনা বিশ্বের সবচেয়ে ঘন জাহাজ চলাচল এলাকাগুলির অন্যতম৷ তালিকার ১০টি নদীর সব ক’টির ক্ষেত্রেই কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়: তীরে ঘনবসতি, সেই সঙ্গে বর্জ্য অপসারণের অবকাঠামো ও রিসাইক্লিং চেতনার অভাব৷
ছবি: Imago/Zumapress/Feng Jun
৫) নীল নদ
নীল নদ ১১টি দেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে শেষমেষ মিশরে ভূমধ্যসাগরে গিয়ে পড়ে৷ নদীর অববাহিকায় প্রায় ৩৬ কোটি মানুষের বাস৷ নীল নদের পানি সেচের কাজেও ব্যবহার করা হয়, কেননা, কৃষিকাজ এই এলাকার মূল উপজীব্য৷ সেচ ও গ্রীষ্মের খর তাপমাত্রার কারণে নদীর পানি মাঝে মধ্যে সাগর অবধি পৌঁছায় না৷ তবুও প্লাস্টিক বহন করার ক্ষেত্রে নীল নদ পঞ্চম স্থানে৷
ছবি: Imago/Zumapress
৬) গঙ্গা নদী
ভারতের ৫০ কোটি মানুষের কাছে গঙ্গা নদী ধর্মজীবন ও দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ৷ পয়ঃ বর্জ্য, কৃষি ও শিল্প-কারখানার বর্জ্যের ফলে গঙ্গা নদী বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে৷ সেই সঙ্গে টন টন প্লাস্টিক এই নদীতে গিয়ে পড়েছে৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে পানি থেকে প্লাস্টিক সরিয়ে সমস্যার সমাধান করা যাবে না, প্লাস্টিকের ব্যবহার ও প্লাস্টিক বর্জ্যের উৎপাদন কমাতে হবে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Kanojia
৭) পার্ল রিভার
চীনের পার্ল রিভার বা মুক্তা নদী দূষণের জন্য সুবিদিত৷ এই নদী হংকং আর ম্যাকাওয়ের মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরে গিয়ে পড়ে৷ এলাকাটির অবিশ্বাস্য নগরায়ণের ফলে বিপুল পরিমাণ পয়ঃনিষ্কাশন ও শিল্প বর্জ্য পার্ল নদীর ব-দ্বীপে গিয়ে পড়ে৷ প্রধানত কৃষি এলাকাটি সত্তরের দশক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম নাগরিক এলাকাগুলির মধ্যে একটিতে পরিণত হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Goh Chai Hin
৮) আমুর নদ/হাইলং নদী
নগর ও শিল্পাঞ্চলে পৌঁছানোর পরেই নদীতে প্লাস্টিক বাড়ে৷ কিন্তু বর্তমানে প্রত্যন্ত ও প্রকৃতি প্রধান অঞ্চলেও নদীতে প্লাস্টিক দেখা দিতে শুরু করেছে৷ আমুর নদের উৎস উত্তর-পূর্ব চীনের পর্বতাঞ্চলে৷ পরে এই নদ চীনের হাইলংজিয়াং প্রদেশ ও রাশিয়ার সাইবেরিয়ার মধ্যে সীমান্ত নদী হিসেবে কাজ করার পর ওখোটস্ক সাগরে গিয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress/Chu Fuchao
৯) নাইজার নদী
পশ্চিম আফ্রিকার মুখ্য নদী নাইজার যে শুধু ১০ কোটি মানুষের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য, তাই নয়, এই নদীর দু’কূলে প্রকৃতি তার আদিম প্রাচুর্য আজও বজায় রেখেছে৷ নাইজার নদী পাঁচটি দেশের ভিতর দিয়ে বয়ে শেষে নাইজেরিয়ায় অতলান্তিক মহাসাগরে গিয়ে পড়ে৷ প্লাস্টিক দূষণ ছাড়াও বিভিন্ন বাঁধ প্রকল্পের ফলে নদীর জল কমেছে৷ সেই সঙ্গে রয়েছে নাইজারের ব-দ্বীপে খনিজ তেল শিল্প, যা থেকে একাধিক বার তেল বেরিয়ে নদী দূষিত করেছে৷
ছবি: Getty Images
১০) মেকং নদী
মেকং নদীতেও একাধিক বাঁধ প্রকল্পের ফলে পরিবেশগত ও সামাজিক সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ মেকং নদীর বদ্বীপে প্রায় দু’কোটি মানুষের বাস৷ তাঁদের অনেকেই পেশায় ধীবর বা কৃষিজীবী৷ নদীটি ভিয়েতনাম ও লাওসসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছয়টি দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়৷ প্রতিবছর বিশ্বের নদীগুলো থেকে মোট ৮০ লাখ টন প্লাস্টিক সাগরে গিয়ে পড়ে, যার অধিকাংশই আসে মেকং ও তালিকার অন্যান্য নদীগুলি থেকে৷
ছবি: Imago/Xinhua
10 ছবি1 | 10
১০ থেকে ১৪ বছরের শিক্ষার্থীদের জার্মানির বিভিন্ন নদী সংলগ্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়েছিল৷ তাদের কাজ ছিল নদী থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করা৷ স্কুল পর্যায়ের প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী তাতে যোগদান করে৷ তাদের সংগ্রহ করা আবর্জনা এরপর পাঠানো হয় গবেষণাগারে৷ শিক্ষিকা এবং গবেষক কাটরিন ক্রুজ সেই আবর্জনা পরীক্ষা করে এখনও পর্যন্ত যেসব তথ্য পেয়েছেন, তা ভয়াবহ৷
কাটরিন বলেন, ‘‘এতদিন মনে করা হতো সমুদ্র দূষণে জার্মানির বিশেষ ভূমিকা নেই৷ কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, জার্মানির অসংখ্য নদীর পানি শেষ পর্যন্ত সমুদ্রে গিয়ে মেশে৷ মূলত উত্তর সাগর এবং বাল্টিক সমুদ্রে৷ এবং নদীতে প্লাস্টিকের দূষণ এতই বেশি যে, সেই পানি সমুদ্রে গিয়ে পড়ার পর তা একইমাত্রায় সমুদ্রের পানিকেও দূষিত করছে৷’’
এখনও পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সব মিলিয়ে ১০,৮৯৭ টি আবর্জনা সংগ্রহ করতে পেরেছে৷ নদী সংলগ্ন ১৬,৬১১ স্কোয়্যার মিটার অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে এই পরিমাণ আবর্জনা পাওয়া গেছে৷ গবেষণা চালিয়ে যার মধ্য থেকে প্রচুর মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া গেছে৷ অর্থাৎ, মোট আবর্জনার ৫০ শতাংশই হলো মাইক্রোপ্লাস্টিক৷
দূষণের পরিমাণ বোঝার জন্য একটি উদাহরণ দিয়েছেন কাটরিন৷ প্রতি সেকেন্ডে রাইন নদীর ২,৯০০ কিউবিক মিটার পানি উত্তর সাগরে গিয়ে মেশে৷ গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতি সেকেন্ডে রাইনের পানির সঙ্গে ১৪,৫০০টি মাইক্রো প্লাস্টিক উত্তর সাগরে গিয়ে পড়ছে৷ এটা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক৷
পানামায় প্লাস্টিকের বোতলের দুর্গ
পরিবেশ দূষণের একটা বড় কারণ প্লাস্টিক বর্জ্য৷ এটি সমুদ্রের জন্য বিশেষ ক্ষতিকর৷ এই ক্ষতি কমাতে এক ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিলেন এক ক্যানাডিয়ান৷ পানামার একটি দ্বীপে তৈরি করলেন পুরোনো প্লাস্টিক বোতলের প্রাসাদ৷
ছবি: Oliver Ristau
প্লাস্টিকের দুর্গ
পানামার বোকাস দেল তোরো রাজ্যের প্রধান দ্বীপ ইসলা কোলোনের গ্রীষ্মমন্ডলীয় গাছপালার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে মধ্যযুগীয় ধাঁচে তৈরি অদ্ভুত এই প্রাসাদটি৷ প্রায় ৪০,০০০ পুরোনো পেট বোতল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এটি৷ কারণ? প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা৷
ছবি: Oliver Ristau
সমুদ্রের জন্য হুমকি
প্রাসাদটির প্রবেশদ্বার ও ভেতরে নানা চিত্রকর্মে দেখানো হয়েছে কিভাবে বিশ্বের সমুদ্রগুলো প্লাস্টিকের কারণে দূষণের শিকার হচ্ছে৷ গবেষণা দল ‘ফিউচার ওশান’-এর মতে, বছরে ৩০ কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্যের অল্প পরিমাণই প্রক্রিয়াজাত করে পূনর্ব্যবহারযোগ্য করা হয়৷ অপরিশোধিত বর্জ্যের অনেকটুকুই যায় সমুদ্রের জলে, ২০১০ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪৮ লাখ টন থেকে ১ কোটি ২৭ লাখ টন পর্যন্ত৷
ছবি: Oliver Ristau
রবার্টের স্বপ্ন
নয় বছর আগে ক্যানাডার রবার্ট বেজেয়াউ মূলত অবসরের পরিকল্পনা নিয়েই বোকাস দেল তোরোতে এসেছিলেন৷ কিন্তু সেখানে কতটা বর্জ্য উৎপাদিত হয় তা নিয়ে দ্বীপ কর্তৃপক্ষের এক গবেষণায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশ নিয়ে বনে যান প্লাস্টিক দূষণবিরোধী প্রচারক৷ তিনি বলেন, ‘‘যদি পৃথিবীর ৭৩০ কোটি মানুষ প্রতিদিন এক বোতল করে পানীয় পান করেন, তাহলে বছরে ২৬ হাজার ৬শ’ কোটি বোতল বর্জ্য তৈরি হয়৷’’
ছবি: Oliver Ristau
ক্যারিবিয়ান স্বর্গ
বছর বছর মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যানাডা থেকে হাজারো পর্যটক ছুটি কাটাতে আসেন এই দ্বীপপুঞ্জে৷ চমৎকার সব বার ও রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি এসব দ্বীপে আছে ম্যানগ্রোভ বন, টলটলে সমুদ্র ও মনোরম সৈকতের মতো প্রকৃতির সমারোহ৷ কিন্তু পর্যটকের স্রোতের কারণে তৈরি হয় প্রচুর বর্জ্য, যার শেষ ঠিকানা হয় সমুদ্র, কারণ, এদের পর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা নেই৷
ছবি: Oliver Ristau
রবার্টের সংগ্রহ
৬২ বর্গ কিলোমিটারের ছোট্ট এই দ্বীপেই বছরে জমা হয় প্রায় পনের লাখ খালি বোতল৷ রবার্ট এগুলো সংগ্রহ করেন তাঁর নির্মাণ প্রকল্পের জন্য৷ শুধু সাধারণ পানীয়ের বোতলই তিনি ব্যবহার করতে পারেন, কারণ, অন্য বোতলগুলোতে দাহ্য উপাদান থাকে৷
ছবি: Oliver Ristau
প্লাস্টিক ও লোহার ব্যবহার
প্রথমে লোহার খাঁচায় প্লাস্টিকের বোতলগুলোকে একটার ওপর আরেকটা রাখা হয়৷ এরপর এগুলোর ওপর সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে দেয়াল বানানো হয়৷ প্রতিটি দেয়ালে ৩০০টি অর্ধলিটার বা ১২০টি দেড় লিটারের বোতল আঁটে৷ শুধু মধ্যযুগীয় শৈলীতে বানানো ত্রিকোণ জানালাগুলো এইভাবে তৈরি সম্ভব হয় না৷
ছবি: Oliver Ristau
স্থাপত্যের নতুন জ্ঞান
এই পদ্ধতিতে খুবই সাধারণ ভবন তৈরি করা সম্ভব, যার জন্য প্রায় ১৪,০০০ বোতল দরকার৷ রবার্ট একটি সেন্টার খুলতে চান, যেখানে তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কিভাবে কম খরচে প্লাস্টিক বোতলকে নির্মাণসামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তার প্রশিক্ষণ দেবেন৷ তাঁর মতে, এর একটা বড় উপকার হলো, বোতলের ভেতরকার বাতাস তাপ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে৷
ছবি: Oliver Ristau
তথ্য রিসোর্ট
দুর্গটিতে ঘুরে পর্যটকরা প্লাস্টিক বর্জ্যের সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারেন৷ আর এখান থেকে যে অর্থ উপার্জিত হবে তা দিয়ে প্রশিক্ষণের কাজ শুরু করতে চান রবার্ট৷ তাঁর আশা, বিশ্বের যে অঞ্চলগুলোতে বর্জ্য তৈরি হবেই, সেখানে এগুলো দিয়ে অর্থবহ কিছু করা৷
ছবি: Oliver Ristau
8 ছবি1 | 8
কিছুদিন আগে উত্তর সাগরের উপকূলে তিমি মাছেরা আটকে পড়েছিল৷ সে সময় বেশ কিছু তিমির পাকস্থলী থেকেও মাইক্রো প্লাস্টিক উদ্ধার করা হয়েছিল৷ বস্তুত পৃথিবী জুড়েই এই বিষয়টি নিয়ে গবেষকেরা কাজ করছেন৷ তাঁরা দেখাচ্ছেন, কীভাবে সমুদ্রের জলে মাইক্রো প্লাস্টিক বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এবং মাছেরা সেই প্লাস্টিক খাবার ভেবে গিলে ফেলছে৷ শুধু দূষণ নয়, জীববৈচিত্র রক্ষার ক্ষেত্রেও এটি একটি আশঙ্কার বিষয়৷
সারা পৃথিবীতেই নদী সংস্কার এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দিষ্ট কিছু কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে৷ চীনের ইয়াংসিকিয়াং এবং ভারতের গঙ্গায় দূষণ কমানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে৷ বস্তুত, নব্বইয়ের শেষ দিকে ব্রিটেনের টেমসকে পৃথিবীর অন্যতম দূষিত নদী বলে ধরা হতো৷ দূ‘হাজার সালের পর টেমস সংস্কারের একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়৷ আপাতত টেমস পৃথিবীর পরিষ্কার নদীগুলির অন্যতম৷ অর্থাৎ, ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়৷ নদী সংস্কার করতে চাইলে, প্লাস্টিকহীন করতে চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব৷
জার্মানির গবেষকদের আশা, টেমসের মতোই জার্মানির নদীগুলিকেও প্লাস্টিকমুক্ত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷ এবং সে ক্ষেত্রে তারিফ করতেই হবে জার্মানির স্কুলের খুদে ছাত্রদের৷ তাদের অভিযানের জন্যই এত তথ্য পাওয়া সম্ভব হলো৷