1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির ‘নিরাপত্তার রাজনীতি'

নিনা ভ্যার্কহাউসার/আরবি১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩

জার্মান সেনাবাহিনীর ‘আফগানিস্তান মিশন' রাজনৈতিক অঙ্গনকে গত চার বছর ধরে বেশ ব্যতিব্যস্ত রেখেছে৷ বহু জার্মান সেনা আফগানিস্তানে হতাহত হয়েছেন৷ এরপরও সেনাবাহিনীর প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শ্লথ গতিতে চলছে৷

ছবি: AFP/Getty Images

নির্বাচনি প্রচারণায় সেনা মোতায়নের প্রশ্ন

যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলে অস্ত্রশস্ত্র ও সেনা পাঠানোর বিষয়টি নির্বাচনি প্রচারণাতেও উঠে আসছে বারবার৷ ‘‘অস্ত্র রপ্তানি নিষিদ্ধ করো৷ বিদেশে সেনা মোতায়েন বন্ধ করো৷'' বাম দল বা ‘ডি লিংকে'-র নির্বাচনি প্রচারণার প্ল্যাকার্ডে দেখা যায় এই ধরনে স্লোগান৷ জার্মান সংসদের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ডি লিংকেই একমাত্র পার্টি, যেটি আফগানিস্তানসহ সব দেশ থেকেই জার্মান সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে৷ আর বিষয়টি নিয়ে জোরেসোরেই নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছে তারা৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সক্ষাৎকারে বামদলের সাংসদ ইয়ান ফান আকেন বলেন, ‘‘বামদের হৃদয়ের বিষয় এটি৷''

আফগান মিশনের মূল্যায়ন

এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের উত্তরে জার্মান সেনাবাহিনী ‘বুন্ডেসভেয়ার'-এর ৪১০০ সেনা মোতায়েন রয়েছেন৷ ডি লিংকে ছাড়া অন্যান্য দলগুলি মনে করে না যে এই মিশন ব্যর্থ হয়েছে৷ এই প্রসঙ্গে তারা দেশটির পুনর্গঠনে সাফল্যের কথা তুলে ধরে৷ এছাড়া ২০১৪ সাল থেকে আফগানরা যে নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারটি হাতে নিতে পারবে বলে অঙ্গীকার করেছে, সেটাও উল্লেখ করে অন্য দলগুলি৷ তবে সরকার ও সংসদ যে আফগানিস্তানের সেনামিশনকে ছোট করে দেখেছে এই ব্যাপারে প্রায় সব দলই কমবেশি একমত৷

২০০২ সালে মিশনের শুরুতে জার্মানি কয়েকশ সেনা পাঠিয়েছিল আফগানিস্তানে৷ সীমিত সময়ের জন্য রাজধানী কাবুলের নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য রাখাই ছিল তাঁদের দায়িত্ব৷ কিন্তু আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবাহিনীর এই হিসাবটা ভুল বলে প্রমাণিত হয়৷ তালিবান জঙ্গিরা তাদের সহিংসতা চালিয়ে যেতে থাকে৷ তাদের দমন করা আফগানিস্তানের নবগঠিত সরকারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে৷ আফগান আর্মি ও পুলিশবাহিনীর অবস্থাও ছিল বড় করুণ৷

আফগানিস্তান থেকে জার্মান সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলছে শ্লথ গতিতেছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ডিসেম্বর মাসে ‘ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাসিসটেন্টস ফোর্স' বা ইসাফ দেশটির নিরাপত্তার দায়িত্বভার গ্রহণ করে৷

প্রায় ৫০টি দেশের সেনাসদস্যরা সম্পৃক্ত হন এই বাহিনীতে৷ প্রথম দিকের ৫০০০ থেকে ২০১০ সালে সেনা সংখ্যা ১৩০,০০০-এ দাঁড়ায়৷ কিছু অঘটন এই বুন্ডেসভেয়ারের এই মিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে৷ আলোড়ন তোলে জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জগতেও৷ ২০০৯ সালে জার্মান এক অফিসারের আদেশে বিমান আক্রমণ করা হয় আফগানিস্তানের কুন্ডুস-এ৷ বেশ কিছু বেসামরিক ব্যক্তি মারা যায় এই হামলায়৷ ফলে সেসময়ের জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্রান্স ইওসেফ ইয়ুং পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷

বহু জার্মান সেনা হতাহত হয়েছেন

আফগানিস্তানের এই মিশনে এই পর্যন্ত অর্ধশতাধিক জার্মান সেনা মারা গেছেন৷ এক্ষেত্রে অনেক উচ্চ মূল্যই দিতে হয়েছে জার্মান সেনাবাহিনীকে৷ ইতোমধ্যে অবশ্য আফগানিস্তান থেকে জার্মান সেনা প্রত্যাহারের কাজ শুরু হয়েছে৷ ২০১৪ সালের শেষ নাগাদ এই প্রক্রিয়া শেষ হবে৷ ভবিষ্যতে এই ধরনের কোনো মিশন হলে প্রথম থেকেই সেনা প্রত্যাহারের কলাকৌশল মাথায় রাখতে হবে, জানায় সিডিইউ সরকারের কোয়ালিশন সহযোগী এফডিপি৷ আর সবুজ দলের দাবি সেনা প্রত্যাহার করা হলে বুন্ডেসভেয়ারে কর্মরত আফগান কর্মীদের জার্মানিতে আশ্রয় দিতে হবে৷ স্থানীয় কর্মীদের জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়ায় বোঝা যায় আফগানিস্তানের পরিস্থিতি কতটা কঠিন হয়ে পড়েছে৷

কয়েক বছর ধরে বুন্ডেসভেয়ারকে বিভিন্ন মিশনে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে৷ কিন্তু বিষয়টির সামগ্রিক মূল্যায়ন এখন পর্যন্ত করা হয়নি৷ ‘আফগানিস্তান শকে'-র পর বিদেশে সেনামিশন পাঠানোর ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলির মতামত অনেকটা অস্পষ্ট৷

আফগান সরকার জানিয়েছে ২০১৪ সাল থেকে দেশের নিরাপত্তার ব্যাপারটি নিজেরাই দেখতে পারবেছবি: picture alliance / dpa

সামাজিক গণতন্ত্রী দলের হানস পেটার বার্টেলস-এর মতে, ‘‘একটি সঠিক মিশনের কাজ হলো সব কিছুতেই নাক না গলানো৷ সংকট সমাধানে স্থানীয় শক্তিগুলিকেও সম্পৃক্ত করা৷ যেমনটি করে থাকে ‘আফ্রিকান ইউনিয়ন'-এর মতো সংস্থাগুলি আঞ্চলিক কোনো সমস্যা দেখা দিলে৷ আমরা শুধু সহায়তা দিতে পারি৷''

বামদল যুদ্ধবিরোধী

পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে জার্মান বাণিজ্য জাহাজে জলদস্যুদের আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বুন্ডেসভেয়ারকে সচল করার ওপর জোর দেয় খ্রিষ্টীয় গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন বা সিডিইউ৷ তাদের নির্বাচনি প্রচারণায় পরোক্ষে হলেও বলা হচ্ছে, বুন্ডেসভেয়ার-মিশনের সাথে জার্মানির অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষার বিষয়টিকে সম্পৃক্ত করা উচিত৷ এসপিডি ও সবুজ দল বেসামরিক পর্যায়ে সংকট প্রতিরোধ ও মোকাবেলার ওপর বিশেষ জোর দেয়৷ বামদল আরো এক ধাপ এগিয়ে৷ তাদের দাবি, বিদেশে জার্মান সেনাবাহিনীর মিশন সমাপ্ত হলে যে অর্থের সাশ্রয় হবে, তা শান্তিরক্ষা-বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যয় করতে হবে৷

বামদলরা এমন কোনো সরকারে অংশগ্রহণ করতে চায় না, যেটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য বিদেশে সেনাবাহিনী পাঠায়৷ আর এ কারণে গাণিতিক দিক দিয়ে এসপিডি, সবুজদল ও বামদল মিলে সংসদীয় নির্বাচনে যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়ও, জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠন করার সম্ভাবনা তাদের প্রায় নেই বললেই চলে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ