বার্লিন প্রাচীরের পতনের ২৫ বছর পরও পূর্বাঞ্চলের অর্থনৈতিক শক্তি পশ্চিমের তুলনায় কম৷ জার্মানির পুনরেকত্রিকরণ নিয়ে একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পূর্ব জার্মানির রাজ্যগুলি অর্থনৈতিক মন্দাভাব কাটিয়ে উঠলেও এখনও অনেক পিছিয়ে৷
বিজ্ঞাপন
স্লথ গতি
‘‘অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সাবেক পশ্চিম জার্মানির কাছাকাছি আসার প্রক্রিয়াটা গত বছরগুলিতে স্লথ গতিতে এগিয়েছে পূর্বাঞ্চলে৷'' জানান পূর্ব জার্মানি-বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ইরিস গ্লাইকে৷ হতাশাবাদীরা আরেক ধাপ এগিয়ে বলছেন, প্রক্রিয়াটা থেমে আছে৷
পূর্বাঞ্চলের জন্য ‘সংহতি কর' প্রদানের মেয়াদ ২০১৯ সালে শেষ হয়ে যাবে৷ পূর্ব ও পশ্চিমের কাঠামোগত দিক দিয়ে দুর্বল অঞ্চলগুলির জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান ইরিস গ্লাইকে৷
জার্মান সেনাবাহিনীতে যত ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রপাতি
জার্মান সেনাবাহিনীতে প্রায় প্রতিদিনই হয় যুদ্ধবিমান, না হয় হেলিকপ্টার বা অন্য কিছুর সমস্যা দেখা দেয়৷ সেসব কথাই জানা যাবে ছবিঘরে৷
ছবি: AFP/Getty Images
ইউরোফাইটার
জার্মানি সবচেয়ে আধুনিক ফাইটার জেট এটি৷ নাম ইউরোফাইটার৷ তবে নির্মাণকালীন সময়ে ত্রুটির কারণে এই জেটের উড্ডয়ন-ঘণ্টা তিন হাজার থেকে কমে অর্ধেক, অর্থাৎ দেড় হাজার হয়ে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টর্নেডো ফাইটার ও পরিবহণ বিমান
জার্মান সেনাবাহিনী প্রায় ৪০ বছর ধরে টর্নেডো ফাইটার ব্যবহার করে আসছে৷ বর্তমানে এরকম ৮৯টি ফাইটারের মধ্যে মাত্র ৩৮টি চালু আছে৷ ট্রানজাল সি-১৬০ পরিবহণ বিমানের একই পরিণতি হয়েছে৷ ৫৭টি বিমানের মধ্যে এখন মাত্র ২৫টি ব্যবহারের যোগ্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Udo Zander
ত্রুটিপূর্ণ হেলিকপ্টার
৩১টি আধুনিক টাইগার হেলিকপ্টারের মধ্যে মাত্র ১০টি এখন আকাশে উড়তে পারে৷ আর ২২টি ‘সি লিংক্স অ্যান্টি-সাবমেরিন হেলিকপ্টার’ এর মধ্যে এখন মাত্র চারটি ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় আছে৷ এনএইচ৩০ এবং সিএইচ৫৩ পরিবহণ কপ্টারেরও একই অবস্থা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Carsten Rehder
ট্যাংক
জার্মান সেনাবাহিনীতে একসময় ১৮৯টি ‘বক্সার’ ট্যাংক ছিল৷ এখন সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে ৭০-এ৷ আর ১৯৭১ সাল থেকে ব্যবহৃত হওয়া ‘মার্ডার’ এপিসি-র (আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার) সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে৷
ছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images
সাগরে সমস্যা
২০০১ সালের ডিসেম্বরে পাঁচটি ‘কে১৩০’ করভেটে কেনার সিদ্ধান্ত নেয় জার্মান সেনাবাহিনী৷ ২০০৭ সাল থেকে সেগুলো ব্যবহারের কথা ছিল৷ কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ গিয়ার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও সফটওয়্যারের কারণে নির্ধারিত সময়ে সেগুলোর ব্যবহার শুরু করা যায়নি৷ তারপর যখন শুরু হলো, তখন পাঁচটির মধ্যে মাত্র দুটি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারযোগ্য ছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর জন্য চ্যালেঞ্জ
২০১৩ সালের শেষের দিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন উর্সুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন৷ দায়িত্ব নেয়ার পর তাঁর জন্য প্রথন চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয় এসব ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রপাতি৷ এজন্য অবশ্য সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা দায়ী৷ কারণ তাঁরাই খুচরা যন্ত্রাংশের জন্য অর্থ বরাদ্দ কমিয়েছিলেন৷
ছবি: Reuters
6 ছবি1 | 6
অন্যদিকে মিউনিখের অর্থনৈতিক গবেষণা ইন্সটিটিউট ‘ইফো' এ ব্যাপারে একটি হতাশাব্যঞ্জক চিত্র তুলে ধরেছে: ‘‘পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের দূরত্বটা অনেক বছর ধরে একই রকম রয়েছে৷ পশ্চিমের জীবনমানের সমকক্ষ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ দুই অঞ্চলের মধ্যে সমতা আনার প্রচেষ্টায় সফল হয়নি জার্মানি৷''
ফারাকটা বেশি
১৯৯৫ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে পূর্বাঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ হলেও পশ্চিমাঞ্চলে তা হয়েছে ২৭ শতাংশ৷ রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে পূর্ব ও পশ্চিমের ফারাকটা এখনও অনেক বেশি৷ বেকারত্বের হার পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে তুলনামূলকভাবে বেশি৷ ২০১৩ সালে পূর্বাঞ্চলে বেকারের হার ছিল ১০.৩ শতাংশ, পশ্চিমাঞ্চলে ৬.০ শতাংশ৷ পুব থেকে পশ্চিমে অভিবাসন করার প্রবণতা গত বছরগুলিতে অনেক কমে গেলেও ভবিষ্যতে পুর্বাঞ্চলের জনসংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷
পুবের চোখে ইতিবাচক
এক জরিপে জানা গিয়েছে সাবেক পূর্ব জার্মানির ৭৫ শতাংশ মানুষ বিশেষ করে অল্পবয়সিরা জার্মানির পুনরেকত্রিকরণকে ইতিবাচক হিসাবে দেখে৷ অন্যদিকে সাবেক পশ্চিম জার্মানির উত্তরদাতাদের মাত্র ৪৮ শতাংশ দুই জার্মানির মিলনকে ইতিবাচক মনে করে৷
সাবেক পূর্ব জার্মানির মানুষরা ভ্রমণের ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সবার ওপরে মূল্য দেন৷ এরপরের স্থানে রয়েছে অর্থনীতি, জীবনযাত্রার মান ও পেশাগত উন্নতি৷