বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে আরো ১২ বিলিয়ন ইউরো চান সংশ্লিষ্ট জার্মান মন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন৷ সামরিক যন্ত্রাংশের আধুনিকায়নের জন্য এ বাজেট চেয়েছেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
২০১৮ সালে জার্মানির প্রতিরক্ষা বাজেট ৩৮.৫ বিলিয়ন ইউরো বা টাকার হিসেবে প্রায় ৩ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা৷ সেই বাজেটে আরো ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা যুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি৷ স্থানীয় পত্রিকা দ্য বিল্ড রোববার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই দাবি করেছে৷
প্রতিবেদনটি বলছে, এর আগে জার্মান অর্থমন্ত্রী আগামী চার বছরে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষা বাজেটে সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ইউরো বা ৫৫ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধির কথা চিন্তা করছেন বলে জানা গেছে৷ গত শুক্রবারই এর প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷ বলেছে এটি ‘অপর্যাপ্ত'৷
পত্রিকাটির দাবি, বাজেট পর্যাপ্ত পরিমাণে না বাড়ানো হলে ২০১৯ সালে অন্তত একটি আন্তর্জাতিক সামরিক যন্ত্রাংশ ক্রয় প্রকল্প বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ফন ডেয়ার লাইয়েন৷ এর মধ্যে প্রথমেই হাত দেয়া হবে তা হলো নরওয়ের সঙ্গে সাবমেরিন চুক্তিতে৷ এরপর বন্ধ করে দেয়া হবে, ছয়টি সি-১৩০ হারকিউলিস পরিবহণ বিমান ক্রয়ে৷
বিরাট ঘাটতি
জার্মানির প্রতিরক্ষা বাজেট পৃথিবীর মধ্যে নবম সর্বোচ্চ৷ তারপরও এটি তাদের জিডিপি'র ২ শতাংশের চেয়ে অনেক কম৷ আন্তঃপ্রশান্তমহাসাগরীয় দেশগুলোর জোট ন্যাটোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশগুলোর প্রতিরক্ষা বাজেট তাদের জিডিপি'র অন্তত ২ শতাংশ হতে হবে৷
জার্মানির সামরিক বাহিনী বুন্দেসভেয়ারে অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ নেই বলেও গেল কয়েকবছর ধরে ব্যাপক সমালোচনা চলছে৷
গত ফেব্রুয়ারিতে, রাইনিশে পোস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ন্যাটোর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যে বাহিনী তাতে অংশ নেয়ার জন্য মৌলিক যন্ত্রাংশই নেই বুন্দেসভেয়ারের কাছে৷ অথচ আগামী বছর জার্মানি বহুরাষ্ট্রীয় ‘ভেরি হাই রেডিনেস জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স'-এর নেতৃত্ব দেবে৷
জেডএ/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)
জার্মানিতে করদাতাদের অর্থ কীভাবে অপচয় করা হয়
ঝকমকে শূকরের ভাস্কর্য; সোনালি রং করা ইটের বাড়ি; যেখানে দেখার কিছু নেই সেখানে ভিউয়িং প্ল্যাটফর্ম – জার্মান করদাতা সমিতির বাৎসরিক ‘কালো খাতায়’ সরকারি আমলাদের অপচয়ের নানা দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Woitas
উড়ন্ত শূকর
‘গ্লিৎসারশোয়াইন’ বা ‘ঝকমকে শূকর’ নামধারী এই ভাস্কর্যটি প্রতিষ্ঠিত হবে দক্ষিণ জার্মানির হালে শহরে৷ এক লাখ ইউরো মূল্যের ও আধ টন ওজনের মূর্তিটি নির্বাচন করা হয় এই কারণে যে, শূকর নাকি হালে শহরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত৷ অতীতে এক দঙ্গল শূকর এই শহরে লবণের খনি আবিষ্কার করে, বলে কথিত আছে৷ ঝোলানো শূকরের গায়ের ঝকমকে দানাগুলি নাকি যেই লবণের দানার প্রতীক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Woitas
খাঁচা নাকি?
না, খাঁচা নয়৷ পাড্যারবর্নের কাছে ব্রাকেল শহরের ছোট নদীটিতে মাছেদের যাওয়া-আসার সুবিধার জন্য একটি ‘সিঁড়ি’ তৈরি করা হয়েছে – আর সেই সিঁড়ি দিয়ে মাছেদের ওঠানামা দেখার দর্শকদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম, যার তৈরির খরচ ৬,২০০ ইউরো৷ প্ল্যাটফর্মের কল্যাণে দর্শকরা অদৃশ্য মাছেদের দিকে আরো হাত খানেক এগিয়ে যেতে পারবেন!
ছবি: Bund der Steuerzahler NRW/Bärbel Hildebrandt
সৌরশক্তি চালিত ময়লা ফেলার টিন
সুইজারল্যান্ডে তৈরি এই সোলার পাওয়ার্ড ট্র্যাশ ক্যানগুলির এক একটির দাম ১০,৫০০ ইউরো৷ পট্সডাম শহরে এগুলো বসানো শুরু হয়েছে৷ এই ময়লা ফেলার টিনের বিশেষত্ব হল, ভেতরে কতোটা ময়লা জমা হল, তা মনিটরে দেখতে পাওয়া যায়; সেই ময়লা চাপ দিয়ে ছোট করে ফেলে আরো ময়লা ফেলার জায়গা করা হয়৷ মনে রাখা দরকার, একটি সাধারণ ময়লা ফেলার টিন-এর দাম ৩০০ ইউরো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Hirschberger
গিলটি করা দেয়াল
হামবুর্গের একটি পড়ন্ত এলাকায় ভাঙাচোরা দেয়ালটির প্রতিটি ইটে সত্যিকারের সোনার তবক বসিয়ে গিলটি করেছেন এক স্থানীয় শিল্পী – প্রায় ৩০০ বর্গমিটার দেয়াল জুড়ে সোনার তবক! প্রকল্পটিতে হামবুর্গের সংস্কৃতি বিভাগের অনুদান ছিল ৮৫,৬০০ ইউরো৷
ছবি: picture alliance/dpa/B. Marks
গ্যারেজ আছে, গাড়ি নেই
হামবুর্গের কাছে ভিনসেনে এই পাবলিক গ্যারেজটি খোলা হয় বেশ কয়েক মাস আগে৷ কয়েক তলা জুড়ে প্রায় ৫৩৪টি গাড়ি রাখার জায়গা৷ মুশকিল এই যে, একতলার পার্কিং-এর জায়গাগুলোই কখনো ভরে না, বাকিগুলো তো পুরোপুরি খালি থাকে৷ শহর কর্তৃপক্ষ এই গ্যারেজ বানানোর জন্য দশ লাখ ইউরো দিয়েছেন; যে সংস্থা গ্যারেজ চালানোর ভার নিয়েছে, বছরের পর বছর তাদের লোকসান মেটানোর দায়িত্বও শহর কর্তৃপক্ষের৷
ছবি: Bund der Steuerzahler
লেবুগাছের সমাধি
ফ্রাংকফুর্টের কাছে ওবারউর্জেলে এই ৪০০ বছরের পুরনো লেবুগাছটি মরতে বসেছে৷ তাই স্থানীয় আমলারা মরণাপন্ন লেবুগাছটিকে সম্মান জানাচ্ছেন গাছের গুঁড়িটিকে একটি শিল্প প্রকল্পের অঙ্গ করে: গাছটির চারপাশে একটি লোহার কাঠামো বসানো হচ্ছে, কিন্তু কোনো কাচ ছাড়া, বোধহয় এই কারণে যে, কাঠামোটিরই খরচ পড়েছে ৭৭,০০০ ইউরো৷
ছবি: Bund der Steuerzahler
সাতশ’ সাংসদ
জার্মান নির্বাচন বিধির কারণে সেপ্টেম্বরের ভোটের ফলশ্রুতি হিসেবে এবার বুন্ডেস্টাগে আসন নেবেন ৭০০ জনের বেশি সাংসদ – যা কিনা গতবারের চেয়ে প্রায় ১০০ জন বেশি৷ এর ফলে শুধুমাত্র ২০১৮ সালেই সরকারের খরচ বাড়বে প্রায় সাড়ে সাত কোটি ইউরো, বলছে জার্মান করদাতা সমিতি৷