জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী দল (এসপিডি) পৃথিবীর অন্যতম পুরাতন রাজনৈতিক দল৷ এর রয়েছে অনেক চড়াই উৎরাইয়ের ইতিহাস৷ কখনো নিষিদ্ধ হয়েছে, কখনো ভেঙেছে৷ তারপর আবার নতুনভাবে মাঠে নেমেছে৷
বিজ্ঞাপন
সকল রাজনৈতিক দলেরই নিজের একটা মৌলিক ‘মিথ' থাকে৷ এসপিডি দাবি করে, তারা পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন রাজনৈতিক দল৷
জার্মান সামাজিক গণতন্ত্রী দলের সঙ্গে সুদূর অতীতের ইতিহাস জড়িয়ে আছে৷ অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে যখন শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ছিল খুবই সীমিত, তখন জার্মানির একদল লোক এটা নিয়ে কথা বলতে শুরু করে৷
এক সময় তারা সংগঠিত হয় এবং রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী শক্তিতে পরিণত হয়৷ আর এ কাজের বড় অংশে অবদান রেখেছিলেন ফার্ডিনান্ড লাসালে৷ ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও তিনি আজীবন শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন৷
১৮৬৩ সালের ২৩ মে লাইপসিশ শহরে জেনারেল জার্মান ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়৷ এতে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেন ফার্ডিনান্ড৷ ১৫০ বছর পর এসে তাঁকে এখন এসপিডির প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়৷
পৃথিবীর অল্প কিছু রাজনৈতিক দল এর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আব্রাহাম লিঙ্কনের রিপাবলিকান সে রকমই একটি দল৷ এটি এসপিডির ৯ বছর পূর্বে ১৮৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷
জার্মানির জাতীয় নির্বাচন ২০১৭: কবে, কী হচ্ছে
তিনটি রাজ্যে নির্বাচনের পাশাপাশি জার্মানির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০১৭ সালে৷ চলুন জেনে নেই জাতীয় নির্বাচনের টাইমলাইন৷
ছবি: picture-alliance/R. Goldmann
জার্মানির বড় নির্বাচনের বছর
জার্মানিতে চলতি বছর আয়োজন করা হচ্ছে একের পর এক নির্বাচন৷ একদিকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল চতুর্থবারের মতো চ্যান্সেলর পদে লড়ছেন, অন্যদিকে পপুলিস্ট পার্টি অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) অভিবাসীবিরোধী অবস্থানের কারণে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে৷ বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এটা নিশ্চিত যে, ২০১৭ সালের শেষে জার্মানির রাজনৈতিক অবস্থা এখনকার মতো থাকবে না৷
ছবি: Getty Images
জুন ১৯: দলের মনোনয়ন জমা দেয়ার দিন ছিল
জার্মানির সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য আবেদনের শেষ দিন ছিল জুন ১৯৷ সেদিন সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে আগ্রহী দলগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আবেদন জানাতে হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Burgi
জুলাই ৭: কোন কোন দল লড়ছে?
সংসদ নির্বাচনে কোন কোন দল অংশ নিতে পারবে তা ঘোষণা করা হবে এই দিনে৷ যদি কোন দল নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয় তাহলে পরবর্তী চারদিনের মধ্যে জার্মানির সাংবিধানিক আদালতে নালিশ করতে পারবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Deck
জুলাই ১৭: কারা কারা থাকছেন?
চলতি বছরের ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কোন কোন প্রার্থী কোন কোন এলাকায় লড়বেন, তা চূড়ান্ত করতে হবে৷ জার্মানিতে একসঙ্গে দু’টি ভোট দেয়ার সুযোগ রয়েছে৷ প্রথমটি প্রার্থীকে, দ্বিতীয়টি দলকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
জুলাই ২৭: ব্যালটে নাম উঠানোর লড়াই
যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে সাংবিধানিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে, তাদের বিষয়ে রায় ঘোষণা করা হবে এই দিনে৷ ২০১৩ সালে এই পন্থা চালু করা হয়েছিল৷ সেবছর এগারোটি দল আদালতের স্মরণাপন্ন হলেও কেউই মামলা জেতেনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W. Steinberg
আগস্ট ১৩: আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা
জার্মানিতে নির্বাচন শুরুর ছয় সপ্তাহ আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো আনুষ্ঠানিক প্রচারণার পোস্টার বা টেলিভিশন বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারে না৷ চলতি বছরের জাতীয় নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর তারিখ ১৩ আগস্ট৷ এই দিন থেকে দলগুলো তাদের প্রচারণায় কোনো ঘাটতি রাখবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Balk
আগস্ট ২০: কে ভোট দিতে পারবেন?
নির্বাচনের মাসখানেক আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তালিকা চূড়ান্ত হবে৷ ভোটার লিস্ট ঘোষণা করবে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ৷ জার্মানিতে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি যে কোনো জার্মান নাগরিক ভোট দিতে পারবেন৷ সে হিসেবে চলতি বছর ভোটারের সংখ্যা সাড়ে ৬১ মিলিয়ন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K.-D. Gabbert
সেপ্টেম্বর ৩: তিন সপ্তাহ বাকি
এই সময়ের মধ্যে সকল ভোটার পোস্টে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে ভোট দেয়ার সার্টিফিকেট পাবেন৷ যারা তখন অবধি ভোটার লিস্টে নিজেদের নাম পাননি, তারা রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাবেন৷ আর যারা পোস্টের মাধ্যমে ভোট দিতে চান, তারা ব্যালট পেপার চাইতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/R. Goldmann
সেপ্টেম্বর ২৪: নির্বাচনের দিন
অবশেষে সেই মহেন্দ্রক্ষণ৷ জার্মানির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৪ সেপ্টেম্বর৷ সেদিন সকাল আটটায় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হবে, চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত৷ ভোটগণনা সেদিনই শেষ হবে এবং নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ রাতে প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সেপ্টেম্বর ২৫: বিজয়ী এবং বিজিত
সকল প্রতিনিধি এবং দলগত ভোট গণনা শেষে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা দেয়া হবে ২৫ সেপ্টেম্বর৷ যদি কোনো প্রার্থী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় জিততে ব্যর্থ হন, তা সত্ত্বেও দলগত জয়ের কারণে তিনি সংসদে একটি আসন পেতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
অক্টোবর ২৪: নতুন সাংসদরা সংসদে
নির্বাচন শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে নতুন সাংসদদের সংসদে মিলিত হওয়ার নিয়ম রয়েছে৷ এ বছর সেই দিনটি হচ্ছে অক্টোবর ২৪৷ সেদিন গোপন ব্যালটের মাধ্যমে জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর নির্বাচিত হবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নভেম্বর ২৪: সবকিছু কি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়েছে?
যদি কেউ জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চান, তাহলে তার হাতে সময় থাকে নির্বাচন পরবর্তী দুই মাস৷ ভোটাররাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যে কেউ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার রাখেন এই সময়ের মধ্যে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Dedert
12 ছবি1 | 12
এসপিডির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ অ্যারহার্ড এপলারের মতে, দলটির প্রতিষ্ঠাতার বার্তা ছিল, শ্রমিকরা যদি তাদের কর্মক্ষেত্রকে বদলাতে চায়, তাহলে রাষ্ট্র যেন হয় অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ এবং তারা যেন সমান নাগরিকের মর্যাদায় পায়– তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে বাধ্য করতে হবে৷
দলের প্রথম পুস্তিকায় ফার্ডিনান্ড বলেন, এই সংগঠনে এক লাখ জার্মান শ্রমজীবী মানুষ জড়ো হলেই তা এমন শক্তিতে পরিণত হবে, যাতে সবার হিসাব করে চলতে হবে৷
তার এই কথা বাস্তবে রূপ পেয়েছিল৷ এক সময়কার শ্রমজীবী মানুষের দলটি ১৮৭১ সাল থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে জার্মানির বৃহত্তর গণ আন্দোলনে পরিণত হয়৷ তার সদস্য সংখ্যা ছিল ১০ লাখেরও বেশি৷ নির্বাচনে দলটি এক-তৃতীয়াংশের বেশি ভোট পেয়েছিল৷
দলটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল যে, ওটো ভন বিসমার্ক ঐক্যবদ্ধ জার্মানির চ্যান্সেলর হয়ে ১৮৭৮ সালে সমাজতন্ত্রী বিরোধী আইনে দলটিকে নিষিদ্ধ করে দেন৷ ১৮৭১ সালে এই বিসমার্কই জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন৷
নিষিদ্ধের পর দলটির নেতাকর্মীদের উপর ২০ বছর ধরে চলে নানা অত্যাচার নিপীড়ন৷ অনেক নেতাকর্মীকে কারাবরণ করতে হয়৷ অনেকে দেশত্যাগও করে৷ ১৮৯৮ সালে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরই নির্বাচনে দলটি প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পায়৷ ১৯১২ সালে এসে তারা জার্মান সংসদের সর্ববৃহৎ দলে পরিণত হয়৷
শেষ পর্যন্ত সমাজতন্ত্রী বিরোধী আইন সামাজিক গণতন্ত্রীদের জন্য সুফলও বয়ে আনে৷ তাদেরকে রক্ত দিতে হয়৷ তবে এতে খুব দ্রুত সবাই বুঝতে পারে যে, তাদেরকে দাবিয়ে রাখা সম্ভব নয়৷ কারণ শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছিলো৷
নিপীড়ন এই দলকে কিছু রেডিকাল বিষয়ের দিকেও নিয়ে যায়৷ সামাজিক গণতন্ত্রীদের বড় একটা অংশ বৈপ্লবিক মার্ক্সবাদের আদর্শের দিকে ধাবিত হন৷ যার ফলে ক্ষমতাসীন পুঁজিবাদী কাঠামো রাজনৈতিকভাবে শ্রেণিহীন এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তিহীন সমাজের দিকে এগিয়ে যায়৷
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯১৮ সালের নভেম্বরে দর্শনগত বিভেদে পরিস্থিতির অবনতি হয়৷ যার ফলে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ত্বরান্বিত হয়৷ শ্রমিক আন্দোলন সংস্কারবাদী এবং বৈপ্লবিক ধারায় বিভক্ত হয়ে যায়৷
জার্মান সাম্রাজ্যের সর্বশেষ চ্যান্সেলর কায়জার ভিলহেলম দ্বিতীয় ১৯১৮ সালের ৯ নভেম্বর যখন সিংহাসনচ্যূত হন৷ তখন সামাজিক গণতন্ত্রীদের উভয় অংশ নতুন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়৷
১৯১৯ সালে ভাইমার রিপাবলিক গঠিত হয়৷ ভাইমার নামে একটি শহরে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা গৃহিত হয় বলে এই নাম ধারণ করে৷ এ সময় এসপিডি থেকে ৩ জন চ্যান্সেলর ১ বছরের মত জার্মানির নেতৃত্ব দেয়৷ বাকী সময়ে নিজেদের মধ্যে চড়াই উৎরাই থাকলে অবদানও রাখতে থাকে দলটি৷
১৯৩৩ সালে ক্ষমতায় এসে হিটলার স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলে বিরোধিতা করে এসপিডি৷ দলটির ৯৪ জন সংসদ সদস্যের সকলেই ‘ইন্যাবলিং অ্যাক্ট অফ ১৯৩৩'র বিরুদ্ধে ভোট দেয়৷ এই আইনের মাধ্যমেই জার্মানিতে গণতন্ত্রের বদলে হিটলারের স্বৈরতন্ত্র জায়গা করে নেয়৷ ওই সময় অন্য সব দলই হিটলারের পক্ষে ভোট দেয়৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল পুঁজিবাদী সংস্কারের দিকে মনোযোগ দেয়৷ ‘অর্থনৈতিক মিরাকল' অর্জনে দেশের জন্য পথও ঠিক করে দেয়৷ এর ফলে এসপিডিকে পুঁজিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হয়৷
জার্মানির যে সাত রাজনৈতিক দলের নামও শোনেননি আপনি
জার্মানরা শুধু সিডিইউ বা এসপিডি নয়, কিছু ছোট এবং বিরল দলকেও ভোট দিতে পারে৷ এই যেমন, প্রাণী সুরক্ষা পার্টি কিংবা মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি৷ ভাবছেন, এরা কারা? চলুন দেখে নিই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
প্রাণী সুরক্ষা দল
জার্মানিতে প্রাণী অধিকার বিষয়ক অ্যাক্টিভিস্টরা সুযোগ পেলে পুরো হাইওয়ে বন্ধ করে দেন যাতে ব্যাঙেরা নিরাপদে রাস্তা পার হতে পারে৷ এমন দেশে তাই ‘অ্যানিমেল প্রোটেকশন পার্টি’ বা প্রাণী সুরক্ষা দল থাকবে না, তা কি হতে পারে? তবে গ্রিন পার্টির কারণে এ দলের পালে হাওয়া কম থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
দ্য রিপাবলিকানস
ব্যাপারটা কিছুটা বিভ্রান্তিকর৷ জার্মানির রয়েছে নিজস্ব রিপাবলিকান পার্টি, নাম আরইপি৷ তবে এই দলের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো সম্পর্ক নেই৷ জার্মান রিপাবলিকনরা হচ্ছেন ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী, যারা নিজেদের ‘রক্ষণশীল দেশপ্রেমিক’ এবং দেশের ‘সংস্কৃতি এবং আত্মপরিচয়’ রক্ষায় লড়াইরত বলে মনে করেন৷
ছবি: DW
দ্য পার্টি
হ্যাঁ, এই দলের নাম ‘দ্য পার্টি’৷ জার্মানির স্যাটায়ার ম্যাগাজিন ‘টাইটানিক’ এর সম্পাদকরা ২০০৪ সালে এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ দলটির প্রধান হচ্ছেন মার্টিন স্যোনেবর্ন (ছবিতে)৷ ২০১৪ সালে তিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে দলটির জন্য একটি আসন নিশ্চিত করেন৷ ভবিষ্যতে দলটির অবস্থা আরো ভালো হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/Sven Simon/M. Ossowski
গণভোট দল
জার্মানির রেফারেন্ডাম পার্টি বা গণভোট দলের কাছে সুইজারল্যান্ড এক বিশাল অনুপ্রেরণা৷ দলটি চায় দেশের সব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গনভোটের মাধ্যমে জনগণ নেবে৷ সুইজারল্যান্ডে ২০১৬ সালে তেরোটি গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি
জার্মানির এমএলপিডি একটি ছোট দল, যদিও দেশটির অর্ধেক মানুষ এক সময় কমিউনিস্ট ছিলেন৷ মানে ১৯৪৯ থেকে ১৯৮৯ সাল অবধি যখন জার্মানি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল৷ তৎকালীন পূর্ব জার্মানি তখন শাসন করেছিল সোশ্যালিস্ট ইউনিটি পার্টি৷ বর্তমানে উগ্র বামপন্থি এমএলপিডি’র জার্মান রাজনীতিতে কোনো ভূমিকা নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Link
ক্রিশ্চিয়ানস ফর জার্মানি
‘অ্যালায়েন্স সি - ক্রিশ্চিয়ানস ফর জার্মানি’ একটি ক্রিশ্চিয়ান পার্টি, যেটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে৷ খ্রিষ্টান-মৌলবাদীদের একটি দল এবং শ্রমিক, পরিবেশ এবং পরিবারভিত্তিক একটি দল একত্র হয়ে এই দল গড়ে৷ বাইবেলের মান রক্ষা করে দেশ পরিচালনা করতে চায় এই দল৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. MacDougall
6 ছবি1 | 6
১৯৫৯ সালের সম্মেলনে এসপিডি শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সঙ্গে বাজার অর্থনীতিকে গ্রহণ করে৷ ১৯৬৬ সালে এসপিডির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্য ডানপন্থি খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী ইউনিয়নের (সিডিইউ) সঙ্গে মহাজোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়৷
সিডিইউ-র সঙ্গে জোট সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় যুদ্ধ পরবর্তী পূর্ব ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ভূমিকা রেখে আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম কুড়ান তিনি৷ তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কারও পান৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহীদ পোলিশদের একটি স্মৃতিস্তম্ভে তিনি হাঁটু গেড়ে বসে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন৷ এটাকে নাৎসি একনায়কতন্ত্রের অপরাধের জন্য প্রতীকী ক্ষমা প্রার্থণা বলে বিবেচনা করা হয়৷
১৯৮৯ সালে বার্লিন ওয়ালের পতনের মাধ্যমে জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হলে সিডিইউ রাজনৈতিকভাবে আরো সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যায়৷ বিরোধী দলে থাকে দলটি৷
১৯৯৮ সালে এসপিডি থেকে গেয়ারহার্ড শ্রোয়েডার জার্মানির চ্যান্সেলর হন৷ এরপর পার্টির ধরণ বদলে ফেলার কাজ শুরু হয়৷ শ্রোয়েডার শ্রমজীবী মানুষের দল থেকে এসপিডিকে নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণির দলে পরিণত করেন৷ এর মাধ্যমে তিনি একইসঙ্গে সাদা চামড়ার শ্রমিক, স্ব-নিয়োগকৃত পেশাদার, সংকুচিত শ্রমজীবী শ্রেণির সমর্থন পেতে চেয়েছেন৷
উচ্চ বেকারত্ব, অর্থনৈতিক মন্দার ওই সময়ে নতুন এই ধরণে দলটির ঐতিহ্যগত সমর্থক শিল্প শ্রমিক এবং নিম্ন আয়ের মানুষ পিছুটান দেয়৷ শ্রোয়েডারের শেষের দিকে এসে দলের ভেতরে ‘পরিচয় সংকট'ও সৃষ্টি হয়৷
এ সময় ২০০৫ সালের নির্বাচনে কেন্দ্র ও রাজ্য পর্যায়ে দলের সমর্থন কমে ৩০ শতাংশের নীচে নেমে আসে৷
ওই নির্বাচনের পর সিডিইউ'র সঙ্গে জোট করে সরকারে যোগ দেয় এসপিডি৷ ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে এসপিডি ম্যার্কেলের জোটে না থাকলেও ১৩ সালের পর ফিরে আসে৷