1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির শেষ, বাংলাদেশের শুরু

জাহিদুল হক২০ জুলাই ২০১৫

দুটি তথ্য – ২০২২ সালের মধ্যে সব পরমাণু চুল্লি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি৷ আর বাংলাদেশ ২০২১ সালে তাদের প্রথম পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে৷

Atomkraftwerk Grohnde / AKW / Niedersachsen
ছবি: AP

বলা যেতেই পারে – একজনের যেখানে শেষ, অপরজনের সেখানে শুরু৷ পরমাণু কেন্দ্রের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে জার্মানি বছর চার আগেই তাদের সব পারমাণবিক কেন্দ্র বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে৷ বিকল্প হিসেবে তারা এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করছে৷ ইতিমধ্যে বেশ এগিয়েও গেছে তারা৷ ফলে ২০২২ সালের মধ্যে পারমাণবিক কেন্দ্র বন্ধ করার কারণে বিদ্যুতের যে সম্ভাব্য ঘাটতি হতে পারে, সেটা নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে মেটানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে৷

মূলত বায়ু, বায়োগ্যাস আর সৌরশক্তি ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করছে জার্মানি, যেগুলোর কোনো কমতি নেই বাংলাদেশে৷ ফলে চেষ্টা করলে বাংলাদেশও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে এগিয়ে যেতে পারে৷ সেটা অবশ্য হচ্ছেও, বিশেষ করে সৌরশক্তি ব্যবহারে অনেক দূর এগিয়েছে বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশের মানুষের সৌরশক্তি ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রশংসাসূচক প্রতিবেদনও নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে৷ সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত চেষ্টার ফলে এটা সম্ভব হয়েছে৷ দু'পক্ষকেই এ জন্য ধন্যবাদ৷

তবে এর মধ্যে একটি সংবাদে একটু আশঙ্কা অনুভব করছি আমি৷ সেটা হচ্ছে, বাংলাদেশ তাদের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন পরিকল্পনায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে৷ পাবনার রূপপুরে স্থাপিত হতে যাওয়া ঐ কেন্দ্র থেকে ২০২১ সালে প্রথম বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

নাগরিকদের চাহিদা মেটাতে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য চেষ্টা করবে সেটাই স্বাভাবিক৷ কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের একটা বড় অংশ বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত৷ কিন্তু সেটা করতে গিয়ে মানুষের প্রাণ ও স্বাস্থ্য নিয়ে ঝুঁকি নেয়াটা কতখানি সঠিক, তা-ও বিবেচনায় নিতে হবে৷ কেননা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, চেরনোবিল আর ফুকুশিমার ঘটনায় সেটা প্রমাণিত হয়েছে৷ জার্মানির পরমাণু কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্তের পেছনে ফুকুশিমা দুর্ঘটনার একটি বড় অবদান রয়েছে৷

তবে শুধু দুর্ঘটনা হলেই যে পরমাণু কেন্দ্রের ক্ষতির দিকটি সামনে আসে তা নয়৷ সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চললেও সেখান থেকে তেজস্ক্রিয়তা বের হতে পারে, যেটা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এমনকি প্রাণঘাতীও হতে পারে৷ টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন এর প্রমাণ৷ সেখানে বলা হয়েছে, ভারতের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে গত ২০ বছরে যত মানুষ মারা গেছেন, তাঁদের প্রায় ৭০ ভাগেরই মৃত্যুর কারণ ক্যানসার৷ তথ্যটি দিয়েছে ভারতের পরমাণু শক্তি বিভাগের অধীন সংস্থা ‘ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার'৷ শুধু তাই নয়, গত ২০ বছরে নাকি এসব কেন্দ্রে কাজ করা ২৫৫ জন দীর্ঘকাল রোগে ভুগে বা পারিবারিক অন্যান্য সমস্যার কারণে আত্মহত্যা করেছেন৷

জাহিদুল হক, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

আমার কাছে তথ্যগুলো বেশ আতঙ্কের মনে হয়েছে৷ বেশিরভাগ পাঠকেরই নিশ্চয় তা মনে হবে৷ এ সব জানার পর পারমাণবিক কেন্দ্র স্থাপনে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনাকে আমি আর সমর্থন করতে পারছি না৷ সেটা না করে সৌরশক্তিতে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি অর্জন করেছে সেটা আরও বাড়াতে সরকার চেষ্টা করতে পারে৷ সেই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানির আর যেসব উৎস রয়েছে যেমন বায়ু, বায়োগ্যাস সেগুলোর উন্নয়নে সরকার আরও উদ্যোগ নিতে পারে৷ নিতে পারে কি, অবশ্যই নেয়া উচিত৷ কী বলেন?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ