জার্মানির সঙ্গে ‘আনুষ্ঠানিক' ও ‘দৃঢ়' সম্পর্ক চায় তালেবান
৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
আফগানিস্তানের নতুন তালেবান ‘শাসকরা' জার্মানির কাছ থেকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি ও আর্থিক সহায়তা চান৷ জার্মানির একটি পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে রোববার সংগঠনটির একজন মুখপাত্র এ কথা জানিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির পত্রিকা ডি ভেল্ট আম জনটাগকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘‘জার্মানির সঙ্গে আমরা দৃঢ় ও আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়তে চাই৷''
তিনি আরো বলেন, তারা বার্লিনের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তাও প্রত্যাশা করেন৷ আফগানিস্তানের স্বাস্থ্য, কৃষি ও শিক্ষা খাতে শুধু জার্মানি নয়, অন্যান্য দেশের কাছ থেকেও সহযোগিতা আশা করছে তালেবান৷
জার্মানরা সবসময়ই আফগানিস্তানে স্বাগত এমনটি জানিয়ে মুজাহিদ বলেন, ‘‘দুঃখজনকভাবে তারা অ্যামেরিকানদের সঙ্গে যোগ দেয়৷ তারপরও তাদের ক্ষমা করে দেয়া হল৷''
এদিকে, জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাইকো মাস আফগানিস্তানে অর্থ সহায়তা পুনরায় চালুর জন্য বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছেন৷ এসব শর্তের অন্যতম হল, সবাইকে নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করা৷
গেল মাসে তালেবান কাবুল দখল করে নেয়ার পর সেখানে জার্মানির দূতাবাস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ দেশটিতে উন্নয়ন সহযোগিতা প্রদানও বন্ধ করা হয়েছে৷ তবে আফগান শরণার্থীদের তাৎক্ষণিক সহায়তা দেয়া বন্ধ করেনি বার্লিন৷ বিভিন্ন মানবতাবাদী সংগঠনের মাধ্যমে তা অব্যাহত রেখেছে তারা৷
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নও সীমিত পরিসরে তালেবানের সঙ্গে কাজ করতে একমত হয়েছে৷ তবে তারা বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে, আফগানিস্তান যেন জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের আখড়া না হয়, মানবাধিকার সুরক্ষিত হয়, বিশেষ করে নারী অধিকার যেন রক্ষা করা হয়, দেশের মানুষের কাছে যেন মানবিক সহায়তা বাধাহীনভাবে পৌঁছে দেয়া যায়, এবং বিদেশি ও বিপদে পড়া আফগানরা যেন সুরক্ষিতভাবে দেশত্যাগ করতে পারেন৷
জেডএ/এআই (ডিপিএ, রয়টার্স)
তালেবান নিয়ন্ত্রিত কাবুলের রাস্তায় জনজীবন
৩১ আগস্ট মার্কিন বাহিনীর সবশেষ সৈন্য বিদায় নেয়ার পর গোটা কাবুল এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে৷ তাদের অধীনে কেমন চলছে সেখানকার জীবনযাত্রা, দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: WANA/REUTERS
ছবি তোলায় মানা নেই
তালেবানের আগের শাসনামলে আফগানিস্তানে ছবি তোলা নিষিদ্ধ ছিল৷ তবে স্মার্টফোনের এই দুনিয়ায় তারাও আর পিছিয়ে থাকতে রাজি নয়৷ কাবুল দখলের পর ছবি, ভিডিও তুলতে বেশ আগ্রহী দেখা গেছে তালেবান যোদ্ধাদের৷ রাস্তায় সমর্থকদের আবদার পূরণেও কার্পণ্য করছে না তারা৷
ছবি: West Asia News Agency/REUTERS
নিহতের পোস্টার
শুধু ছবি তোলাই নয়, লড়াইয়ে নিহত এক তালেবানের ছবি সমেত পোস্টারও ছাপিয়েছে তারা৷ সেটি শোভা পাচ্ছে শহরের এক বিলবোর্ডে৷
ছবি: WANA/REUTERS
নারীর পোশাক
আগেরবার ক্ষমতায় থাকাকালে নারীদের পুরো শরীর ঢাকা বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করেছিল তালেবান৷ এই বিষয়ে এবার পরিস্কার কোনো ঘোষণা এখনো আসেনি৷ ছবিতে তালেবান যোদ্ধাদের অতিক্রম করা বোরকা পরিহিত একজনের পাশাপাশি বোরকা ছাড়া এক বয়স্ক নারীকেও দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: WANA/REUTERS
সমর্থকের উল্লাস
তালেবান আবার আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ায় তাদের সমর্থকরা খুশি৷ এই সবজি বিক্রেতা তেমনই একজন৷
ছবি: West Asia News Agency/REUTERS
নিরুদ্বেগ যোদ্ধারা
বিদেশি বাহিনী চলে গেছে, পঞ্চশীর ছাড়া গোটা আফগানিস্তানই তাদের দখলে৷ অস্ত্র হাতে গাড়ির উপরে তালেবান যোদ্ধাদের তাই নির্ভাবনায় সময় কাটছে৷
ছবি: West Asia News Agency/REUTERS
আড্ডা
কাবুলে আরেকটি রাস্তায় বুধবার এই তালেবান যোদ্ধাদের গল্প-গুজব করে সময় কাটাতে দেখা যায়৷
ছবি: WANA/REUTERS
সাধারণ আফগানদের জীবন
তবে দুশ্চিন্তামুক্ত নন সাধারণ মানুষ৷ অর্থনীতি থমকে আছে৷ ব্যাংকে চলছে তারল্য সংকট৷ এই অনিশ্চয়তায় প্রতিদিনই টাকা তুলতে ব্যাংকের সামনে ভিড় করেন মানুষ৷
ছবি: REUTERS
রাস্তার সেলুন
নিত্য দিনের দরকারি কাজগুলো চলছে স্বাভাবিকই৷ সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন৷ রাস্তার পাশে একজন নাপিতকে এক শিশুর চুল কেটে দিতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: WANA/REUTERS
বাজার
এটি কাবুলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার এলাকা৷ সেখানে মানুষের ব্যস্ত পদচারণা রয়েছে৷ আশেপাশে প্রহরায় আছে সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধারাও৷
ছবি: WANA/REUTERS
বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ
মঙ্গলবার মার্কিন বাহিনী কাবুল বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার পরপরই তার নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান৷ কয়েকজনকে সেখানে অস্ত্র হাতে টহল দিতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: REUTERS
নতুন সাজে তালেবান
আফগান সেনাবাহিনীকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ও সরঞ্জাম তালেবানের দখলে৷ পাঞ্জাবি, পাগড়ি পরিহিত সশস্ত্র তালেবানের পাশাপাশি কাবুলে সামরিক পোশাক, সানগ্লাসে সজ্জিত তালেবান যোদ্ধাদেরও দেখা যাচ্ছে৷