জার্মানির সবুজ দলের শীর্ষে ইরানি বংশোদ্ভূত নেতা
৩১ জানুয়ারি ২০২২জার্মানির পরিবেশবাদী সবুজ দলের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো বিদেশি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিকদের রাজনীতির মূল স্রোতে অন্তর্গত করার সক্রিয় প্রচেষ্টা৷ তুর্কি বংশোদ্ভূত চেম ওজদেমির আগেই দলের শীর্ষ নেতা হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন৷ দল জোট সরকারে যোগ দেবার পর তিনি কৃষিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন৷ এর আগে কোনো বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ জার্মানিতে পূর্ণ মর্যাদার ফেডারেল মন্ত্রী হন নি৷ রাজ্য স্তরেও বিদেশি বংশোদ্ভূত বেশ কয়েকজন দলীয় নেতা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন৷
যৌথ নেতৃত্বের রীতির পাশাপাশি জার্মানির সবুজ দলে নেতারা একের বেশি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না৷ শীর্ষ পদে নারী ও পুরুষের ভারসাম্যও বজায় রাখতে হয়৷ বর্তমান দুই শীর্ষ নেতা আনালেনা বেয়ারবক ও রোব্যার্ট হাবেক যথাক্রমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অর্থ ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তাদের শূন্যস্থান পূরণ করতে নতুন করে দলীয় নির্বাচন হলো৷ প্রায় চার বছর ধরে তারা দলের কান্ডারি ছিলেন৷ করোনা মহামারির কারণে সপ্তাহান্তে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের ফলাফল জানা গেল৷ ইরানি বংশোদ্ভূত পররাষ্ট্র বিশেষজ্ঞ ওমিদ নুরিপুর ৮২ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছেন৷ ২৮ বছর বয়সি নারীবাদী নেতা রিকার্ডা লাং পেয়েছেন ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট৷ তারা দুজনেই সংসদ সদস্য৷ পোস্টাল ব্যালটের ভিত্তিতে ১৪ই ফেব্রুয়ারি তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সবুজ দলের নেতা হিসেবে নিযুক্ত করা হবে৷ জোট সরকারের অন্যতম শরিক হিসেবে দলের শীর্ষ নেতার দায়িত্ব বাড়তি গুরুত্ব পাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
২০০৬ সাল থেকে ওমিদ নুরিপুর ফ্রাংকফুর্ট শহর থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে বুন্ডেসটাগে সবুজ দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন৷ পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি যথেষ্ট পরিচিত৷ ইরানে জন্মগ্রহণ করে ১৩ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে তিনি জার্মানিতে চলে আসেন৷ বাস্তববাদী নেতা হিসেবে নুরিপুর জার্মানির বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষদের মাঝে রাজনীতি সম্পর্কে আগ্রহ আরও বাড়াতে চান৷ দলকে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে আবার চ্যান্সেলর পদের দাবিদার হিসেবে প্রস্তুত করারও অঙ্গীকার করেন তিনি৷ তবে বিচ্ছিন্নভাবে দল পরিচালনা না করে মন্ত্রিসভায় সবুজ দলের সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে দলের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখার উপর জোর দিতে চান ওমিদ নুরিপুর৷ সেইসঙ্গে জোট সরকারের বর্তমান কার্যকালে সবুজ দলের যে সব গুরুত্বপূর্ণ অ্যাজেন্ডা কার্যকর করা সম্ভব হয় নি, আগামী বার সেগুলিও কোয়ালিশন চুক্তির অন্তর্গত করাতে চান তিনি৷ যেমন জার্মানির হাইওয়েতে গতিবেগের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেবার অঙ্গীকার করলেও উদারপন্থি এফডিপি দলের আপত্তির কারণে সেই লক্ষ্য পূরণ করা এ যাত্রা সম্ভব হয় নি৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)