ব্রাজিলের জঙ্গলের সুরক্ষায় জীববিজ্ঞানীরা কতটা সাফল্য পাচ্ছেন? বায়ো-মনিটরিং-এর কাজই বা কতটা সফল? জার্মানির সহায়তায় চলছে এমন এক উদ্যোগ, যা গোটা দেশেই প্রয়োগ করা যেতে পারে৷
বিজ্ঞাপন
ব্রাজিলের জঙ্গলে ব্যস্ত জীববিজ্ঞানীরা৷ তাঁদের শেষ কাজ প্রজাপতির ফাঁদ প্রস্তুত করা৷ কোনো লিখিত নির্দেশিকা নেই৷ কারণ শুধু বিজ্ঞানীরা নয়, ভবিষ্যতে এখানকার মানুষকেও তথ্য সংগ্রহের কাজ করতে হবে৷ প্রজাপতিদের থেকেও ইকো সিস্টেমের অবস্থা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়৷ কলা ও আখের টোপ দিয়ে তাদের আকর্ষণ করা হচ্ছে৷ এই পদ্ধতি সত্যি কাজে দেয়!
বায়ো-মনিটরিং-এর পথিকৃৎ হিসেবে জীববিজ্ঞানীরা গর্বিত৷ বায়োলজিস্ট নায়ারা স্টাচেস্কি বলেন, ‘‘মাটো গ্রসো প্রদেশে এখনো অনেক জায়গায় মানুষের পা পড়েনি৷ তাদের সুরক্ষার কাজে আমি সামান্য অবদান রাখতে পারি৷ শুধু এই অঞ্চল বা ব্রাজিলের স্বার্থে নয়, গোটা বিশ্বের স্বার্থে৷ এটা আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷''
জার্মানির বন-জঙ্গল
জার্মানরা বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন৷ এভাবে অবসর সময় কাটাতে আর হাঁটতেও ভালোবাসেন তাঁরা৷ চলুন সে রকমই জার্মানির কিছু বনানির সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
জাতীয় পার্ক ইয়াসমুন্ড
ইয়াসমুন্ডের এই পার্কটি জার্মানির জাতীয় পার্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট পার্ক৷ বিখ্যাত ব়্যুগেন দ্বীপের একেবারে উত্তরে অবস্থিত এই পার্কের সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে, করে মুগ্ধ৷ ইউনেস্কো ২০১১ সালে ইয়াসমুন্ড পার্কটিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়৷
ছবি: Scoopshot/ac-images
এলবে নদীর নিসর্গ
প্রকৃতি সৃষ্ট নিসর্গের মধ্যে অন্যতম নদী পরিবেষ্টিত চরগুলি৷ নিয়মিত বন্যা হওয়ার কারণে এই সব চরে গাছপালা এবং পশুপাখিরা আনন্দে বেঁচে থাকে৷ যেমনটা এখানে, ব্রান্ডেনবুর্গের এলবে নদীতে৷ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এলবে নদীর এই চরটিকে ১৯৭৯ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যর অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB
হারৎস
জার্মানির মধ্যভাগে অবস্থিত হারৎসের পাহাড়ি অঞ্চল শুধু জার্মানির সবচেয়ে বড় বনভূমি নয়, জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় বনাঞ্চলও বটে৷ ১৮২৪ সালে অন্যতম জার্মান লেখক হাইনরিশ হাইনে তাঁর ভ্রমণ কাহিনিতে এই অঞ্চলকে তুলে ধরেন৷ যাঁরা হাঁটতে পছন্দ করেন তাঁদের কাছে জায়গাটি খুবই প্রিয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB
হাইনিশ জাতীয় পার্ক
জার্মানির ট্যুরিঙ্গেন রাজ্যে রয়েছে ‘বুখেন’ বা বীচ গাছে ঘন জঙ্গল৷ এই বনের কয়েকটা গাছ আবার গত ৮০০ বছর ধরে এইভাবে একেবারে সাড়ি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ এর জন্যই ইউনেস্কো ২০১১ সালে এই বনভূমিকে বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ এখানে বনবিড়ালের মতো অনেক বিরল প্রাণীও দেখা যায়৷
ছবি: DW/C. Hoffmann
স্পেসার্ট
জার্মানির দক্ষিণে অবস্থিত বাভারিয়া এবং হেসেন রাজ্যের মাঝামাঝি একটি পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত এই বনটি৷ আগে স্পেসার্ট ছিল ধনী ও বিশপদের শিকার করার জায়গা৷ শুধু তাই নয়, ঊনিশ শতকে এই জঙ্গলেই আস্তানা গড়েছিল জার্মানির কুখ্যাত ডাকাতরা৷ ১৮২৭ সাল থেকে ‘‘দাস ভির্টহাউস ইম স্পেসার্ট’’ নামে পরিচিতি লাভ করে এই ঘন বনাঞ্চল৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
ব্ল্যাক ফরেস্ট
ব্ল্যাক ফরেস্ট বা কৃষ্ণ অরণ্য নিয়ে নানা রকম ভূতের গল্প প্রচলিত আছে জার্মানিতে৷ আছে এই জঙ্গলের নামে একটি কেক-ও৷ সে জন্যই হয়ত এই কৃষ্ণ অরণ্যের জাতীয় পার্কের মর্যাদা পাওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে৷ আবার অন্যদের আশঙ্কা, জাতীয় পার্ক হলে এখান থেকে আর ফল সংগ্রহ বা গাছ কাটা যাবে না – জার্মানিতে পরিবেশ রক্ষা সত্যিই যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়!
ছবি: picture-alliance/Ronald Wittek
বাভারিয়ার জাতীয় পার্ক
রাখেল লেক বাভারিয়ার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ হ্রদের মধ্যে একটি৷ লেকটি ঘিরে প্রায় ১০৭০ মিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই বন, যেখানে গত কয়েক দশকে একটি গাছও কাটা হয়নি৷ খুবই নিরিবিলি ও শান্ত পরিবেশ এখানে৷ তাই হাঁটার জন্যও খুব উপযোগী এই অঞ্চল৷ ১৯৭০ সালে এই পার্কটিকে জার্মানির প্রথম জাতীয় পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জাতীয় পার্ক ব্যার্শটেসগাডেন
এটা আলপস পর্বতমালায় অবস্থিত জার্মানির একমাত্র জাতীয় পার্ক৷ পার্কটি উচ্চ পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থানের কারণে পর্যটকরা এখানে এলে বিরল প্রাণীর দেখা পান৷ তাই তো পক্ষীপ্রেমী আর বন্যপ্রাণী গবেষকদের জন্য এটা দারুণ একটা জায়গা৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
8 ছবি1 | 8
সকালে ন্যাশানাল পার্কের দপ্তরে মিটিং বসেছে৷ কয়েক মাস পর ইকো সিস্টেমের অবস্থান সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাবে৷ এই সংরক্ষিত অঞ্চলে ৩টি এলাকা স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ প্রতি ছয় মাস অন্তর সেখানে তথ্য সংগ্রহ করা হয়৷ তথ্যগুলির মধ্যে তুলনা করে ফলাফল পাওয়া যায়৷
ফাঁদে কত প্রজাপতি ধরা পড়লো, তা দেখতে হবে৷ পথে চোখে পড়ে নানা প্রাণী৷ যেমন আর্মাডিলো, যা খুব বিরল দৃশ্য৷ পিঁপড়া-খেকো ভালুকও এখানে থাকে৷ লুপ্তপ্রায় প্রাণী হিসেবে এদেরকে ধরা হয়৷ জঙ্গলের গভীরে বিজ্ঞানীরা জিপিএস প্রযুক্তির সাহায্যে প্রজাপতির ফাঁদগুলি খুঁজছেন৷ কাজটা তাড়াতাড়ি করতে হবে৷ বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে৷ জালে অনেক প্রজাপতি ধরা পড়েছে৷ কোন প্রজাতির কত সংখ্যক প্রজাপতি, তা গোনা হচ্ছে৷ তারপর অবশ্যই তাদের আবার মুক্তি দেওয়া হয়৷ বৃষ্টির তেজ বাড়ছে৷ বায়ো-মনিটরিং-এর প্রথম পরীক্ষা একেবারে ঠিক সময়ে শেষ হলো৷ এবার গোটা দেশেই এর প্রয়োগ করা সম্ভব৷
জিআইজেড-এর ইয়ান ক্লাইনে ব্যুনিং বলেন, ‘‘প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষই গোটা দেশে ৩১৩টি সংরক্ষিত এলাকার তত্ত্বাবধান করে৷ সেগুলির সীমানা বাড়িয়ে আশেপাশের এলাকাও তার আওতায় আনাটাই উদ্দেশ্য৷ যে সব রাজ্যের আগ্রহ ও ক্ষমতা রয়েছে, তারাও এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারে৷ এটা জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন৷''