1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির সহায়তায় আসছে ই-পাসপোর্ট

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৯ জুলাই ২০১৮

বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হচ্ছে৷ এ নিয়ে  জার্মানির একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ৷ ডিসেম্বর-জানুয়ারি নাগাদ নগরিকরা এই পাসপোর্ট পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷ বাংলাদেশে এখন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রচলিত৷

Pass Ausweis Bangladesch Reisepass
ছবি: DW/D. Guha

জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানির সঙ্গে ‘টার্ন কি' পদ্ধতিতে এটা বাস্তবায়ন করা হবে৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভেরিডোস-এর সঙ্গে ‘ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক প্রকল্পের চুক্তি সই করে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর৷

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে থেমে নেই বাংলাদেশ৷ এ পর্যন্ত ২ কোটিরও বেশি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বাংলাদেশি নাগরিকদের দেয়া হয়েছে এবং ১১ লাখেরও বেশি মেশিন রিডেবল ভিসা বিদেশিদের দেয়া হয়েছে৷ এমআরপি পাসপোর্ট এখনই বন্ধ হয়ে যাবে না৷ ই-পাসপোর্ট পুরোপুরি চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত এমআরপি চালু থাকবে৷''

অনুষ্ঠানে উপস্থিত জার্মান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিয়েলস আনেন বলেন, ‘‘ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ খুব অল্প সময়ে অগ্রগতি অর্জন করছে৷ এই চুক্তির মাধ্যমে জার্মান কোম্পানির সহায়তায় বাংলাদেশ তার চ্যালেঞ্জের পথে আরও এগিয়ে যাচ্ছে৷ জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানির বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা এর আগেও আছে৷ আর আমরা বাংলাদেশিদের এ কাজে প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবো৷''

মোহাম্মদ আযহারুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

যেভাবে ই-পাসপোর্টের কাজ হবে:

পাসপোর্ট অধিদপ্তর জানায়, ভেরিডোস কোম্পানি ৩ কোটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরবরাহ করবে৷ ঢাকার উত্তরায় বুকলেটের জন্য একটি অ্যাসেম্বল কারখানা স্থাপন করা হবে৷ এতে বুকলেটের খরচ অর্ধেকেরও কম হবে৷ ৫০ টি ই-গেট দেওয়া হবে৷ সকল সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক ১০ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণ সেবা প্রদান করবে৷ একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণ ডাটা সেন্টার ও একটি ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার এবং অত্যাধুনিক পার্সোনালাইজেশন সেন্টার নির্মাণ করা হবে৷ পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে ৮ টি প্রিন্টিং মেশিন থাকবে এবং যার মাধ্যমে প্রতিদিন প্রতি শিফটে ৩০ হাজারেরও বেশি পাসপোর্ট প্রিন্ট করা সম্ভব হবে৷

বাংলাদেশে ৭২ টি পাসপোর্ট অফিস, বিদেশে ৮০ টি মিশন, ৭২ টি এসবি-ডিএসবি অফিস, ২২টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টসহ সকল অফিসে প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক প্রদান করবে৷ এই প্রকল্পের আওতায় ১০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জার্মানিতে দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷

ই-পাসপোর্ট যেমন হবে

ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে৷ পাসপোর্টের মেয়াদ হবে ৫ ও ১০ বছর৷ বর্তমানে বই আকারে যে এমআরপি আছে, ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে৷ তবে বর্তমানে পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসম্বলিত যে দু'টি পাতা আছে, ই-পাসপোর্টে তা থাকবে না৷ সেখানে থাকবে পালিমারের তৈরি একটি কার্ড৷ এই কার্ডের মধ্যে থাকবে একটি চিপ৷ সেই চিপে পাসপোর্টের বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে৷

ই-পাসপোর্টের সব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে ‘পাবলিক কি ডাইরেকটরি'তে (পিকেডি)৷ ই-পাসপোর্টের বাহক কোনো দেশের দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আবেদনকারীর তথ্যের সঙ্গে পিকেডিতে সংরক্ষিত তথ্য যাচাই করে নেবে৷ স্থল ও বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষও একই পদ্ধতিতে পিকেডিতে ঢুকে ই-পাসপোর্টের তথ্য যাচাই করবে৷

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ই-পাসপোর্ট সর্বাধুনিক পাসপোর্ট৷ এর নিরাপত্তা ফিচার অনেক বেশি৷ এই পাসপোর্ট জাল বা অন্য কোনো উপায়ে জালিযাতি করা সম্ভব নয়৷ এটা পুরোটাই সয়ংক্রিয় এবং ডিজিটাল৷ জাতীয় ডাটাবেজের সঙ্গে এটা যুক্ত থাকবে৷ পাসপোর্টের চিপ-এ প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘এর ফলে ভুল বা ভুয়া তথ্য দিয়ে অপরাধীরা পাসপোর্ট নিয়ে অপরাধ করতে বা দেশের বাইরে পালাতে পারবে না৷ বর্তমানে প্রচলিত মেশিন রিডেবল পাসপোর্টও পুরোপুরি নিরাপত্তা ঝুঁকির বাইরে নয়৷ এই পাসপোর্টেও জালিয়াতি হয়৷ কিন্তু ই-পাসপোর্ট সব ধরণের ঝুঁকিমুক্ত৷''

বাংলাদেশ ১১৯তম দেশ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘‘আন্তর্জাতিক পরিসরে মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে হাতে লেখা পাসপোর্টের বদলে ২০১০ সালে সশস্ত্র বাহীনির সহায়তায় প্রবর্তিত হয় মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট৷ কিন্তু মেশিন রিডেবল পাসপোর্টেও জালিয়াতি করা হচ্ছে বিধায় ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাপনাকে আরও নির্ভুল, সহজতর, সময়-সাশ্রয়ী ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে বিশ্বের ১১৮ টি দেশ ইতোমধ্যে ই-পাসপোর্ট প্রদান করেছে৷ এর ফলে বিশ্বে ১১৯তম দেশ হিসেবে ই-পাসপোর্ট চালু করছে বাংলাদেশ৷''

ই-পাসপোর্ট চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ভেরিডোস কোম্পানির সিইও কুনস প্রমুখ৷

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট প্রচলনের ঘোষণা দেন৷ ই-পাসপোর্ট প্রকল্পে এরইসধ্যে ৪ হাজার ৬শ' ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ