জার্মানির হাসপাতালে রোবট রাঁধুনি
৩০ জুন ২০২৫
জার্মানির ট্যুবিঙ্গেন শহরের বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রাঁধুনি হিসেবে কাজ করছে রোবট৷ এটি একই সময়ে আটটি খাবার তৈরি করতে পারে৷ দুই হাত এবং অত্যাধুনিক এআই-চালিত সফটওয়্যার থাকা রোবটটি দিনে সর্বোচ্চ তিন হাজার খাবার তৈরি করতে পারে - এবং তাত্ত্বিক হিসাবে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকতে পারে৷
হামবুর্গের স্টার্টআপ গুডবাইটস এটি তৈরি করেছে৷ কাজ শুরু করা প্রথম মডেলগুলোর মধ্যে এটি একটি৷ গুডবাইটস এর কেভিন ডয়েটমার্গ জানান, ‘‘আমরা চাই, মানুষ যেন ২৪ ঘণ্টাই রান্না করা টাটকা খাবার খেতে পারে৷ আপনি যদি হাসপাতালে নাইট শিফটে থাকেন এবং রাত ১ টার দিকে আপনার ক্ষুধা লাগে, তাহলে যেন আপনি আমাদের সিস্টেমের কারণে গভীর রাতেও টাটকা খাবার পেতে পারেন৷''
হাসপাতালে প্রায় ১২ হাজার মানুষ কাজ করেন৷ প্রতিবছর প্রায় চার লাখ রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার প্রয়োজন হয়৷ অনেক কর্মী রাতের শিফটে কাজ করেন, যার অর্থ, দিনের শেষ দিকে তাদের খাবারের প্রয়োজন হতে পারে৷ এই অবস্থায় রান্নাঘরের রোবটটি খুব কাজে আসে৷
হাসপাতালের কমার্শিয়াল ডাইরেক্টর ডানিয়েলা হার্শ বলেন, ‘‘এটা একসময় পিৎজা ডেলিভারি পরিষেবার স্থান নেবে৷ বর্তমানে প্রতি রাতে প্রায় ৪০ বার পিৎজা ডেলিভারি হচ্ছে৷ ইতিমধ্যে হাসপাতাল কর্মীদের কাছে এটি বিকল্প ব্যবস্থা হয়ে উঠেছে৷''
হাসপাতালে দুটি ক্যান্টিন এবং বেশ কয়েকটি ক্যাফেটেরিয়া রয়েছে৷ বাইরের এক কোম্পানি এগুলো পরিচালনা করে৷ শুধু দুপুর বেলায় গরম খাবার পাওয়া যায়৷ মূল সময়ের বাইরে খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য জার্মানিতে পর্যাপ্ত শ্রমের অভাব রয়েছে৷
খাদ্য, পানীয় এবং ক্যাটারিং ইউনিয়নের মার্ক বাউমাইস্টার বলেন, ‘‘এটা কোনো অজানা বিষয় নয় যে, খাদ্য-পরিষেবা খাতে বেশিরভাগ চাকরি ৯টা-৫টা নয়৷ আরেকটা কারণ হলো, অতিরিক্ত সময় কাজ করা কর্মীদের প্রায়ই ওভারটাইম দেওয়া হয় না৷ এছাড়া, মূল বেতনও অনেক ক্ষেত্রে খুব কম৷ আমি মনে করি, ভবিষ্যতে রোবটকে এমন সব কাজে লাগানো হবে যেগুলোতে কাজ করা মানুষের কাছে আকর্ষণীয় নয়৷''
ওভারটাইম? নাইট-শিফট? রোবটের জন্য এসব কোনো সমস্যা নয়৷ যদিও তার মানুষের কিছু সাহায্যের প্রয়োজন হয়৷ যেমন, রোবট এখনও সবজি কাটতে পারে না৷ খাবার রান্না করার পাশাপাশি রোবট খাবারও পরিবেশন করতে পারে, - এবং ধোয়ার কাজও পারে৷
হাসপাতালের ক্যান্টিন অপারেটর দাবি করছেন, মানুষের চাকরি কমানো তার লক্ষ্য নয়৷ হাডিস ব্যারবিক বলেন, ‘‘রোবট রান্নাঘরকে আমরা পরিপূরক হিসেবে দেখি, বিকল্প হিসেবে নয়৷ বিষয়টা এমন নয় যে, আমরা কর্মী ছাড়াই কাজ করতে চাই, বরং উলটো, আমাদের এখন আগের চেয়েও বেশি কর্মী প্রয়োজন৷''
শ্রমের ঘাটতি দূর করার জন্য মানুষ আর মেশিন একসঙ্গে কাজ করছে৷ এখানে ট্যুবিঙ্গেনে তারা ইতিমধ্যেই আগামীকালের খাবারের স্বাদপরিবেশন করছে৷
সিমোন হ্যোনে/জেডএইচ