জার্মানিসহ একাধিক দেশে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে
১৬ জুলাই ২০২১প্রবল ঝড়বৃষ্টি ও বন্যার কারণে জার্মানির বিপর্যয়ের প্রকৃত চিত্র এখনো স্পষ্ট নয়৷ হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ৷ প্রায় এক লাখ ৬৫ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন৷ মোবাইল নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবার ফলে অনেকের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীরও সহায়তা নিতে হচ্ছে৷ প্রায় ৮৫০ জন সৈন্য উদ্ধারের কাজে নেমেছেন৷ বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ার ফলে অনেক মানুষকে ছাদে আশ্রয় নিতে হয়েছে৷
বৃষ্টির তেজ কমে এলেও অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙে নতুন বিপদের আশঙ্কা রয়েছে৷ রাইন ও মোজেলসহ অনেক উপনদী, শাখানদী ফুলেফেঁপে উঠছে৷ ফলে সে সব জায়গার মানুষদের আগেভাগে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ চলছে৷ জার্মানি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও লুক্সেমবুর্গের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারের কাজ চলছে৷ বৃহস্পতিবারের হিসেব অনুযায়ী শুধু জার্মানিতেই কমপক্ষে ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ তবে সেই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
ওয়াশিংটন সফররত জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এই বিপর্যয়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন৷ তিনি উদ্ধারকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার সব রকম উদ্যোগ নেবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন৷ জার্মানির পশ্চিমে নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া ও রাইনল্যান্ড প্যালেটিনেট রাজ্য এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেট ও মালু দ্রায়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎপরতা চালাচ্ছেন৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় খুব বেশি দেখা যায় নি৷
জার্মানির সীমান্তের কাছে নেদারল্যান্ডসের মাসত্রিখট শহরের প্রায় ১০ হাজার মানুষকে বন্যার আশঙ্কায় দূরে চলে যাবার ডাক দেওয়া হয়েছে৷ লিমবুর্গ প্রদেশেও অনেক শহরের মানুষকে বন্যার আশঙ্কায় উদ্ধার করা হচ্ছে৷ সে দেশেও সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হচ্ছে৷ বেলজিয়ামে সংলগ্ন এলাকাও একই ঝুঁকির মুখে পড়েছে৷ বেশ কয়েকটি নদীর সংলগ্ন এলাকায় বন্যার আশঙ্কা বেড়ে চলেছে৷
আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে জার্মানিতে এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টিকে কেন্দ্রবিন্দুতে এনে ফেলেছে৷ ইউনিয়ন শিবিরের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী আরমিন লাশেট গোটা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে আরও দ্রুত উদ্যোগের ডাক দেন৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)