চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র অনুষ্ঠিত হলো শুক্রবার৷ জার্মান লিগ বুন্ডেসলিগা ও গতবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা বায়ার্ন মুখোমুখি হবে ইংলিশ প্রিমিয়ারের বর্তমান সেরা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে৷
বিজ্ঞাপন
১৯৯৯ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল এই দু'দল৷ লিগের ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় এই ম্যাচে বায়ার্ন ছয় মিনিটে গোল করে এগিয়ে গেলেও অতিরিক্ত সময়ে দুটো গোল খেয়ে হেরে যায়৷ ফলে এবারও কি উত্তেজনায় ঠাসা একটি ম্যাচের আশা করতে পারেন না সমর্থকরা?
বায়ার্ন যদি এবার ম্যান ইউকে টপকাতে সমর্থ হয়, তাহলে ১৯৯০ সালে এসি মিলানের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে পরপর দু'বার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করবে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা৷
জার্মান লিগে বায়ার্নের অবস্থান এখন এমন যে তারা ম্যান ইউর মুখোমুখি হওয়ার আগেই বুন্ডেসলিগার চলতি মরসুমের শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলতে পারে৷ অপরদিকে, প্রিমিয়ার লিগে এবার ম্যান ইউর অবস্থা বেশ শোচনীয় বলা যায়৷ নতুন কোচ ডেভিড ময়েসের তত্ত্বাবধানে খেলা দলটির অবস্থান লিগ টেবিলে বর্তমানে সাত নম্বর স্থানে৷ অর্থাৎ এমনও হতে পারে যে, তারা হয়ত আগামী মরসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার সুযোগ নাও পেতে পারে!
বুন্ডেসলিগার সাবেক তারকারা
বুন্ডেসলিগার গত ৫০ বছরের তারকারা
ছবি: picture-alliance/Pressefoto UL
উভে জেলার
১৯৬৩ সালে জার্মান ফুটবল লিগ বুন্ডেসলিগার খেলা শুরু হওয়ার আগেই হামবুর্গ দলের ফরোয়ার্ড উভে জেলার খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত ছিলেন৷ তখন তাঁকে সবাই আদর করে ডাকতেন ‘আমাদেরই উভে’ বলে৷ ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি জাতীয় দলে খেলতেন৷ বুন্ডেসলিগার ২৩৯ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ১৩৭টি গোল করেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্যার্ড ম্যুলার এবং ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ার
গ্যার্ড ম্যুলার (বাঁয়ে) বুন্ডেসলিগার ৪২৭ খেলায় ৪৬৫ গোল করেন৷ তাঁর এই অবিশ্বাস্য গোল করার ক্ষমতার জন্য তাঁকে ‘বোম্বার’ বলা হতো৷ ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ার (ডানে) ও গোল জেপ মায়াযের সাথে মিলে ১৯৬৫ থেকে সত্তরের দশকের শেষ পর্যন্ত তিনি বায়ার্ন মিউনিখ দলের হয়ে বহু শিরোপা জেতেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্যুন্টার নেৎসার এবং ভল্ফগাং ওবারাথ
জার্মান জাতীয় দলে ভল্ফগাং ওবারাথ (ডানে) গ্যুন্টার নেৎসারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন৷ তবে নেৎসার এফসি কোলন দলের ওবারাথের চেয়ে বোরুসিয়া ম্যোয়েনশেনগ্লাডবাখের হয়ে বুন্ডেসলিগায় একটি শিরোপা বেশি জেতেন৷ ১৯৭৩ সালে নেৎসার স্পেনের রেয়াল মাদ্রিদ এবং পরে সুইজারল্যান্ডের ফুটবল লিগে যোগদান করেন৷ কিন্তু ওবাররাথ বুন্ডেসলিগার কোলন দলেই থেকে যান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ক্লাউস ফিশার
শালকে দলের ফরোয়ার্ড ফিশারও গোল করায় পারদর্শী ছিলেন৷ কিন্তু গ্যার্ড ম্যুলারের সময়ে সক্রিয় থাকায় সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তাঁকে সবসময় দ্বিতীয় স্থানেই থাকতে হয়েছে৷ বুন্ডেসলিগায় তিনি ৫৩৫ খেলায় অংশ নিয়ে ২৬৮টি গোল করেন৷
ছবি: picture-alliance/WEREK
কেভিন কেগেন
ছোটোখাটো মানুষটি ১৯৭৭ সালে হামবুর্গ দলে যোগ দেন এবং খুব তাড়াতাড়িই দর্শকদের নজর কাড়েন৷ ‘মাইটি মাউস’ হিসেবে পরিচিত কেগেন ৯০ খেলায় অংশ নিয়ে ৩২টি গোল করেন৷ সংগীত জগতেও তিনি অবদান রেখেছেন৷ সে সময় তাঁর গাওয়া ‘হেড ওভার হিলস ফর লাভ’ গানটি জার্মানির হিট গানের তালিকায় দশম স্থান অধিকার করেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
হারাল্ড ‘টনি’ শুমাখার
১৫ বছর ধরে এফসি কোলন দলের গোলরক্ষক ছিলেন শুমাখার৷ এরপর ‘আনফিফ’ বা ‘হুইসেল’ নামে তাঁর একটি বিতর্কিত বই প্রকাশিত হওয়ার পর ১৯৮৭ সালে তাঁকে খেলোয়াড় হিসেবে সাসপেন্ড করা হয়৷ তবে পরে তিনি শালকে, ইস্তাম্বুল, মিউনিখ এবং ডর্টমুন্ডে খেলেন৷ শুমাখার বুন্ডেসলিগার মোট ৪৬৪ টি খেলায় অংশগ্রহণ করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লোথার মাথিউস
জার্মান জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড মাথিউসের৷ বুন্ডেসলিগায়ও তিনি দীর্ঘ ২১ বছর ধরে খেলেছেন৷ ১৯৭৯ সালে বুন্ডেসলিগায় প্রথম খেলা শুরু করার পর তিনি বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন৷ বুন্ডেসলিগায় তিনি ৪৬৪ খেলায় অংশ নিয়ে ১২১ গোল করেন৷
ছবি: imago/Uwe Kraft
রুডি ফ্যোলার
১৯৮২ সালে তিনি ভের্ডার ব্রেমেন দলের হয়ে খেলা শুরু করেন৷ অল্পদিনের মধ্যেই তিনি তারকা হয়ে ওঠেন৷ পরে রোম এবং ফ্রান্সের মার্সেই দলেও খেলেছেন তিনি৷ এরপর আবারও বুন্ডেসলিগায় ফিরে বায়ার লিভারকুজেন দলের ক্রীড়া পরিচালক হন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইয়োর্গেন ক্লিসমান
ক্লিসমান জার্মানির স্টুর্টগার্ট, বায়ার্ন মিউনিখ, ইটালির মিলান, মোনাকো, ইংল্যান্ডের টটেনহ্যাম, জেনুয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া দলে খেলেছেন৷ বুন্ডেসলিগায় ২২১টি খেলায় ক্লিসমানের গোল সংখ্যা ১১০টি৷ বর্তমানে তিনি মার্কিন জাতীয় দলের কোচ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অলিভার কান
বায়ার্ন মিউনিখ দলের গোলরক্ষক হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন খেলেছেন৷ জার্মান জাতীয় দলেরও একজন খ্যাতিমান গোলরক্ষক হিসেবে কান পরিচিত ছিলেন৷ বেশ কয়েকবার জার্মান লিগ শিরোপা অর্জন করেন তিনি৷একসময় তিনি জার্মান জাতীয় দলের ক্যাপ্টেনও ছিলেন৷
ছবি: AP
মিশায়েল বালাক
নামি ফুটবল খেলোয়াড় বালাকের ফুটবল জীবন কখনও পূর্ণতা পায়নি৷ তাঁকে গণ্য করা হয় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী তারকা হিসেবে৷ কারণ তিনি বিশ্বকাপ শিরোপা বা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশীপ – কোনটাই অর্জন করতে পারেননি৷ তবে বুন্ডেসলিগায় ২৬৭টি খেলায় অংশগ্রহণ করে ৭৭টি গোল করেন৷ মিশায়েল বালাক মোট চারবার লিগ শিরোপা জেতেন৷
ছবি: picture-alliance/Pressefoto UL
11 ছবি1 | 11
দু'দলের মধ্যে প্রথম খেলাটি হবে ম্যানচেস্টারে৷ ফিরতি ম্যাচ মিউনিখে৷
এদিকে, গতবার সেমিফাইনালে মুখোমুখি হওয়া রেয়াল আর ডর্টমুন্ডের এবার দেখা হবে কোয়ার্টার ফাইনালে৷
এই পর্বের অন্য দুটি ড্র এরকম – বার্সেলোনা বনাম অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ আর পিএসজি বনাম চেলসি৷ অর্থাৎ কোয়ার্টারে ওঠা তিনটি স্প্যানিশ দলের দুটো এবার পরস্পর মুখোমুখি হতে যাচ্ছে৷
কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগের খেলাগুলো হবে এপ্রিলের ১ এবং ২ তারিখে৷ আর ফিরতি লিগ ৮ এবং ৯ তারিখে৷
এবার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে পর্তুগালের লিসবনে, মে মাসের ২৪ তারিখ৷ এর আগে সেমিফাইনাল হবে এপ্রিলের ২২ ও ২৩ এবং ২৯ ও ৩০ তারিখে৷