জার্মানি: খরচ ছাঁটাই নিয়ে জরুরি আলোচনা করবেন ম্যার্ৎস
১৭ মার্চ ২০২৫
জার্মানির সম্ভাব্য পরবর্তী চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস বলেছেন, এসপিডি-র জোট নিয়ে আলোচনায় খরচ ছা্ঁটাই নিয়ে কথা হবে।
জার্মানিতে সরকারি খরচ ছাঁটাই করতে চায় ফ্েরিডরিশ ম্যার্ৎস। ছবি: Ebrahim Noroozi/AP/picture alliance
বিজ্ঞাপন
রক্ষণশীল দল সিডিইউ/সিএসইউ ব্লকের নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস বলেছেন, ''বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি পরবর্তী জার্মান সরকারকে খরচ ছাঁটাই করতে হবে।''
জার্মানির সরকারি ব্রডকাস্টার এআরডি-কে ম্যার্ৎস বলেছেন, ''আমাদের জাতীয় স্তরে, রাজ্য স্তরে এবং পুরসভা স্তরে খরচ ছাঁটাই করতে হবে। তবে বিপুল পরিমাণ খরচ ছাঁটাই হবে না।''
তারা প্রতিরক্ষা ও পরিকাঠামোয় বেশি করে খরচ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। কিন্তু জার্মানির পার্লামেন্টের উচ্চ ও নিম্নকক্ষে দুই তৃতীয়াংশের ভোটে এই প্রস্তাব পাস করতে হবে। এই প্রস্তাব নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগের বাজেট কমিটির অনুমোদন পেয়ে গেছে।
প্রাথমিক আপত্তির পর জার্মানির পরিবেশপন্থি গ্রিন পার্টি এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতে রাজি হয়েছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ১০ হাজার কোটি ইউরো বরাদ্দ করা হবে প্রতিশ্রুতি পাওয়ায় তারা ভোট দিতে রাজি হয়েছে। নতুন বুন্ডেসটাগ ২৫ মার্চ থেকে শুরু হবে।
জার্মানির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর খতিয়ান
রোববার জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন৷ ছবিঘরে এক নজরে দেখে নিন প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং তারা কী চায়।
ছবি: Florian Gaertner/photothek/imago images
সিডিইউ/সিএসইউ
মধ্য-ডানপন্থি সিডিইউ এবং বাভারিয়ায় এর আঞ্চলিক সহযোগী সিএসইউ যৌথভাবে ইউনিয়ন নামে পরিচিত। বয়স্ক, গ্রামীণ এবং গির্জাগামী মানুষের মধ্যে দলটির সমর্থন বেশি। শিল্প নেতা, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং নিম্ন বা মাঝারি শিক্ষার ভোটারদের মধ্যেও ভালো ফল করেছে তারা। কর্পোরেট কর কমানো, উচ্চ-আয়ের মানুষদের সুবিধা প্রদান, আশ্রয়বিধি কঠোর করা, অপরাধী শরণার্থীদের বহিষ্কার করা ইত্যাদি এর এজেন্ডায়। দলটির নির্বাচনী রঙ- কালো৷
ছবি: Christof Stache/AFP/Getty Images
এসপিডি
মধ্য-বামপন্থি সামাজিক গণতন্ত্রী দল- এসপিডি ঐতিহ্যগতভাবে শ্রমিক শ্রেণী এবং ট্রেড ইউনিয়নের দল। ঐতিহ্যগতভাবে জার্মানিতে এসপিডির সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল পশ্চিম জার্মানির শিল্প অঞ্চল, বিশেষ করে রুওর অঞ্চল, হেসে এবং লোয়ার সাক্সনি রাজ্য। ন্যূনতম মজুরির মতো সামাজিক নীতি গ্রহণ, ধনীদের ওপর কর আরোপ এবং নিম্ন ও মাঝারি আয়ের মানুষের করের বোঝা কমাতে চায় এসপিডি। দলটির নির্বাচনি রঙ- লাল।
ছবি: Bernd von Jutrczenka/dpa/picture alliance
গ্রিন পার্টি
পরিবেশবাদি দলটির মূল ভোটার ভিত্তি শহুরে সুশিক্ষিত জনগণ, বিশেষ করে পশ্চিম জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রীক শহরগুলোতে। তবে ধীরে ধীরে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছেও জনপ্রিয় হচ্ছে দলটি। ফ্রাইডে ফর ফিউচার এবং জলবায়ু নিয়ে নানা কর্মসূচি তরুণদের দলটির প্রতি আকৃষ্ট করছে। স্বাভাবিকভাবেই দলটির নির্বাচনী রঙ- সবুজ।
ছবি: Daniel Roland/AFP
এফডিপি
নয়া-উদারপন্থি মুক্ত বাজারের সমর্থক মুক্ত গণতন্ত্রী দল- এফপিডি সাধারণত ব্যবসায়ী, ডেন্টিস্ট এবং আইনজীবীদের কাছে জনপ্রিয়। শ্রমিকশ্রেণীর মধ্যে এর জনপ্রিয়তা কম। ব্যক্তির স্বাধীনতা বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতা কমানোই হচ্ছে দলটির মূলনীতি। ইউরোপপন্থি এই দল কর ছাড়ের ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে কথা বলে আসছে। দলটির নির্বাচনী রঙ- হলুদ।
ছবি: Hannes P Albert/dpa/picture alliance
ডি লিংকে
বামপন্থি দল ডি লিংকের মূল ঘাঁটি সাবেক পূর্ব জার্মান অঞ্চলে। পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো বিলুপ্ত করে দিতে চায় দলটি। অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে ন্যূনতম মজুরি অনেক বাড়ানো, অবসরের বয়েস কমানো, অভিবাসীদের ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া ইত্যাদি। দলটির নির্বাচনি রঙ- লাল।
ছবি: Hendrik Schmidt/dpa/picture alliance
এএফডি
অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচলান্ড বা জার্মানির জন্য বিকল্প- এএফডি একটি কট্টর ডানপন্থি অভিবাসী বিরোধী দল। গঠিত হওয়ার পর গ্রিন ছাড়া অন্য প্রায় সব দল থেকেই সমর্থকেরা এই দলের প্রতি আনুগত্য বদল করেছেন। পূর্ব জার্মানিতে এর সাফল্য তুলনামূলক বেশি। জার্মান ঐতিহ্যে গুরুত্ব দেয় দলটি, ইসলামকে জার্মান সমাজের অংশ মনে করে না। দলটির নির্বাচনী রঙ- হালকা নীল।
ছবি: Kay Nietfeld/dpa/picture alliance
বিএসডাব্লিউ
২০২৪ সালে গঠিত এই পপুলিস্ট দলটি খুব দ্রুতই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সারা ভাগেনক্নেশট জোট বা ব্যুন্ডনিস সারা ভাগেনক্নেশট- বিএসডাব্লিউ এর চেয়ারম্যান সাবেক বামপন্থি নেত্রী সারা ভাগেনক্নেশট। পূর্ব জার্মানিতে এই দলের সমর্থন বেশি। সামাজিক বিচার, চাকরির নিরাপত্তা ইত্যাদি ইস্যুতে বামপন্থি নীতিতে থাকলেও অভিবাসন, লিঙ্গ সমতা, জলবায়ু ইস্যুতে তাদের নীতির সঙ্গে ডানপন্থিদের মিল রয়েছে। দলটির নির্বাচনী রঙ- বেগুনি।
ছবি: Sean Gallup/Getty Images
7 ছবি1 | 7
তবে এই আর্থিক প্যাকেজের বিরুদ্ধে জাতীয় সাংবিধানিক আদালতে মামলা করার পরিকল্পনা করেছেন বেশ কিছু সাংসদ।
নির্দল সদস্য জোয়ানা কোটার এই প্যাকেজ নিয়ে ভোটাভুটি বন্ধ করার জন্য দ্বিতীয়বার আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
এফডিপি-ও জানিয়েছে, তারা মামলা করার কথা ভাবছে। তাদের দাবি, এই প্যাকেজ নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা হয়নি।
জোট নিয়ে কঠিন আলোচনা
ম্যার্ৎস জানিয়েছেন, জোট নিয়ে এসপিডি-র সঙ্গে 'খুবই কঠিন আলোচনা' হবে। বিশেষ করে সংস্কার ও জাতীয় বাজেটে সম্ভাব্য অর্থ বাঁচানো নিয়ে কথা হবে।
ম্যার্ৎসের বক্তব্য, ''আমাদের অর্থ বাঁচাতেই হবে।'' তিনি বলেছেন, ''কবে এই জোটগঠন হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। আলোচনা শেষ হয়নি। আমরা নতুন সরকার শুরুর কোনো তারিখ দিতে পারছি না।''