ইউরোপের অর্থনীতি
২৪ জুলাই ২০১৩ ইউরো এলাকার দেশগুলির সার্বিক গড় ঋণভার রেকর্ড মাত্রা ছুঁয়েছে৷ অর্থাৎ ব্যয় সংকোচ ও সংস্কার কর্মসূচির সুফল এখনো দেখা যাচ্ছে না৷ তার উপর সরকারি ব্যয় কমে চলায় মন্দা কাটিয়ে অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না৷ তবে গ্রিসের ঋণভার দ্রুত কমে চলেছে৷ এমনকি আগামী বছরই সে দেশ সামান্য হলেও প্রবৃদ্ধির পথে ফিরবে বলে পূর্বাভাষ শোনা যাচ্ছে৷
এই অবস্থায় অবশ্যই ব্যয় সংকোচ ও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকারি হস্তক্ষেপ – এই দুই মডেলের সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে৷ মূলত জার্মানির চাপেই ইউরো এলাকায় ব্যয় সংকোচ ও সংস্কারের উপর বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে৷ তবে এই নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভের মাত্রা কম নয়৷ সপ্তাহান্তে জি টোয়েন্টি অর্থমন্ত্রীদের সম্মেলনে ব্যয় সংকোচের বদলে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে কর্মসংস্থান বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে৷ এমনকি তার ফলে বাজেট ঘাটতি সাময়িকভাবে বাড়লেও ক্ষতি নেই, বলেছেন জার্মানি সহ বিশ্বের ২০টি প্রথম সারির দেশের প্রতিনিধিরা৷ এর আগে এই প্রশ্নে এমন মতৈক্য দেখা যায়নি৷ সেপ্টেম্বর মাসে জি টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে এই প্রশ্নে কতটা অগ্রগতি হয়, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে৷
যে দেশ বহুকাল ধরে ব্যয় সংকোচ ও সংস্কারের মাধ্যমে নিজেদের ঘর গুছিয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, সেই জার্মানিকে ঘিরে অবশ্যই আশা বাড়ছে৷ সে দেশের অর্থনীতি সামগ্রিকভাবে এখনো উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে যেতে না পারলেও অদূর ভবিষ্যত সম্পর্কে আশার আলো বাড়ছে৷ কর বাবদ আয় রেকর্ড মাত্রায় বেড়ে গেছে৷ বিশেষ করে যে অঙ্কের আয়কর জমা পড়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে সাধারণ করদাতারা বেশ ভালোই আছেন৷ তাছাড়া বছরের শুরুর তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি দেখা যাচ্ছে৷ এমনকি ইউরোপের কিছু মহল চাইছে, ইউরো সংকট কাটাতে জার্মানির জনগণকেই সরাসরি সংকটগ্রস্ত দেশগুলিতে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হোক৷ সে ক্ষেত্রে গ্রিসের মতো দেশের অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে, বিনিয়োগকারীদের লাভের মাত্রাও বাড়বে৷
ইউরোপীয় অর্থনীতি সম্পর্কে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশিত না হওয়ায় সোমবার ইউরোপের পুঁজিবাজার সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে নি৷ ফিলিপস-এর মতো কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার ভালো ফলের কারণে সোমবার পুঁজিবাজার বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল বটে, কিন্তু পরে কিছুটা দরপতন ঘটে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি)