রোববার বার্লিন-সহ জার্মানির একাধিক শহরে মিছিল করেছে রাশিয়াপন্থিরা। নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করেছে তারা।
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে সবমিলিয়ে প্রায় এক দশমিক দুই মিলিয়ন রাশিয়ার মানুষের বাস। বস্তুত, ইউরোপের মধ্যে জার্মানিতেই সবচেয়ে বেশি রাশিয়ার মানুষ বাস করেন বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। অন্যদিকে ইউক্রেনের মানুষ থাকেন তিন লাখ ২৫ হাজার। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে অবশ্য সংখ্যাটি অনেকটাই বেড়েছে। আরো লাখতিনেক ইউক্রেনবাসী শরণার্থী হয়ে জার্মানিতে এসে পৌঁছেছেন। এই পরিস্থিতিতেই রোববার জার্মানির একাধিক শহরে রাশিয়াপন্থিরা মিছিলের আয়োজন করে।
বার্লিন এসে স্কুলে ফিরছে ইউক্রেনের শিশুরা
যুদ্ধের কারণে নানা দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন ইউক্রেনীয়রা৷ অনেকেই এসেছেন বার্লিনে৷ জার্মানির রাজধানীতে এসে আবার স্কুলে ফিরছে ইউক্রেনের শিশুরা৷ দেখুন ছবিঘরে..
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
পুরোনো অভ্যাসে
আর্চে নামের একটি সংস্থা ‘ইউক্রেনের জন্য ক্লাসরুম’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে৷ সেখানেই শরণার্থী হিসেবে বার্লিনে আসা খুদে পড়ুয়াদের প্রাথমিক স্কুলে ফেরার ব্যবস্থা হয়েছে৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
মন দিয়ে অঙ্ক
কামিলা নামের এই মেয়েটির পরিবারও বার্লিনে আশ্রয় নিয়েছে ৷ নতুন দেশে এসে স্কুলজীবনে ফিরতে পেরেছে সে৷ মন দিয়ে সে অঙ্ক কষছে ক্লাসে৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
নতুন বন্ধু
নতুন বন্ধু সোফিয়াকে খুঁজে পেয়েছে কামিলা৷ সোফিয়াও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাড়ির সবার সঙ্গে বার্লিনে চলে এসেছে৷ সোফিয়া কী লিখছে খাতায়? কামিলা সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
পড়াশোনাই বেঁচে থাকার রসদ
শরণার্থী শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে অন্যতম হাতিয়ার পড়াশোনা৷ সেই ব্যবস্থাই করা হয়েছে এই প্রকল্পে৷ সোফিয়া কিন্তু বেশ মনোযোগী ছাত্রী, বোঝাই যাচ্ছে৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
মাতৃভাষায় শিক্ষা
ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের পাশে থাকতে জার্মানির অনেক স্বেচ্ছাসেবক এগিয়ে এসেছেন৷ বেসরকারি একাধিক সংস্থা এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে৷ পড়াশোনা সহজ করে তুলতে ইউক্রেনীয় শিশুদের মাতৃভাষায় পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছে আর্চে৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
নতুন ক্লাসরুমে
নিজের দেশ, প্রিয় ঘর সব ছেড়ে আসতে হয়েছে খুদে পড়ুয়াদের৷ তবে স্কুল যখন শুরু হয়েছে, তখন নতুন বন্ধুও তো হবে৷ সবাই মিলে আবারও ক্লাসরুমে ফেরা৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
পাশে শিক্ষকরা
শিক্ষকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, যাতে ইউক্রেনীয় পড়ুয়ারা নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে, পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারে৷ তারা বেশ মন দিয়ে শিক্ষিকার কথা শুনছে৷ তবে পিছনের বেঞ্চে দুই খুদে হেসে গল্পও করে নিচ্ছে চুপিচুপি৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
মন দিয়ে নোট
শিক্ষিকা কী বলছেন, কেউ মন দিয়ে শুনছে৷ আবার কেউ খাতায় লিখে রাখছে৷ এই খুদে পড়ুয়াদের মুখেচোখে শান্তির হাসি৷ ছোটদের মুখে এমন হাসিই তো মানায়৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
পড়াশোনার আনন্দ
রোজের রুটিনে শিশুগুলিকে ফিরিয়ে আনতে তৎপর সংস্থা৷ পিঠে ব্যাগ নিয়ে নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে শিশুরা৷ ইউক্রেন থেকে জার্মানির বার্লিনে এসে নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করছে তারাও৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
রাঙা হাসি রাশি রাশি
এক বন্ধুর সঙ্গে খেলায় মেতেছে পাউলিনা৷ ওর মুখের হাসিটা দেখুন একবার৷ শহীদ কাদরির লেখা সেই গানটা কি মনে পড়ছে না? ‘বোমা নয়, গুলি নয়, চকোলেট টফি রাশি রাশি’ যেন ওর কাছে প্যারাট্রুপারের মতো হাজির হয়েছে৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
ছবি আঁকার জগতে
রং-তুলির টানে নিজের ফেলে আসা দেশকে মনে রেখেছে পড়ুয়ারা৷ ইউক্রেনের জাতীয় পতাকার রঙে রাঙিয়ে তুলেছে আঁকার খাতা৷ পাশাপাশি, জার্মানির প্রতিও ভালোবাসার প্রকাশ রয়েছে তাদের ছবিতে৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
11 ছবি1 | 11
ফ্রাঙ্কফুর্টে প্রায় ৬০০ মানুষের মিছিল হয়। হ্যানোভারেও প্রায় একই সংখ্যক মানুষ মিছিল করেছেন। ৩৫০টি গাড়ির একটি কনভয় বার করা হয় সেখানে। স্টুটগার্টে ১৯০টি গাড়ির কনভয় বার করা হয়। মিছিল হয়েছে বার্লিনেও। রাশিয়াপন্থিদের অভিযোগ, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পরে জার্মানিতে রাশিয়ার নাগরিকদের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তাদের একঘরে করার চেষ্টা হচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। বস্তুত, এই অভিযোগ সামনে রেখেই শনি এবং রোববার তারা একাধিক মিছিলের আয়োজন করেন। তাদের হাতে ছিল রাশিয়ার পতাকা।
পুলিশের বক্তব্য, ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে ৩৮৩টি হেট ক্রাইম হয়েছে। অর্থাৎ, রাশিয়ার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ইউক্রেনের নাগরিকদের উপর আক্রমণ হয়েছে ১৮১টি। অর্থাৎ, রাশিয়ার নাগরিকদের উপর যে আক্রমণ হচ্ছে, তা স্বীকার করে নিচ্ছে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, সব আক্রমণ রেকর্ডও করা হচ্ছে না। পুলিশ যে সংখ্যা বলছে, তার চেয়ে বেশি আক্রমণ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে রাখলেও আসলে যুদ্ধের সমর্থনেই একের পর এক মিছিলের আয়োজন করছে জার্মানিতে বসবাসকারী রাশিয়ানরা। এর প্রতিবাদে ইউক্রেনের সমর্থনেও একাধিক মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। রাশিয়ানরা অবশ্য বলছেন, যুদ্ধের সমর্থনে তারা মিছিল করছেন না। নিরাপত্তার প্রশ্ন সামনে রেখেই তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
কেন রাশিয়ানদের এ ধরনের মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন বার্লিনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত। তার বক্তব্য, এ ধরনের মিছিলের অনুমতি দিয়ে জার্মানি ইউক্রেনের মানুষের যন্ত্রণা আরো বাড়াচ্ছে।