জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউর প্রধান ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস রোববার চরম ডানপন্থি এএফডি দলের সঙ্গে সহযোগিতার কথা বলে সমালোচনার মুখে পড়েন৷
বিজ্ঞাপন
এরপর সোমবার টুইট করে তিনি ঐ বক্তব্য থেকে পিছু হটার ইঙ্গিত দেন৷
জেডডিএফ টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যার্ৎস বলেন, স্থানীয় সরকার পর্যায়ে ‘অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি' বা এএফডির সঙ্গে কাজ করতে তিনি রাজি আছেন৷ ‘‘যদি কোনো শহর বা পৌরসভায় এএফডির মেয়র নির্বাচিত হন, তাহলে এটা স্বাভাবিক যে, শহরে একসঙ্গে কাজ করা নিশ্চিত করার একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে,'' বলেন তিনি৷
তবে চরম ডানপন্থিদের সঙ্গে কাজের বিষয়টি সিডিইউর আদর্শের পরিপন্থি বলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ম্যার্ৎস৷
বাভারিয়া রাজ্যে সিডিইউ দলের সঙ্গী সিএসইউর প্রধান মার্কুস শ্যোডার সোমবার সকালে টুইট করে বলেন, এএফডির সঙ্গে যে কোনো পর্যায়ে যে-কোনো সহযোগিতার বিষয়টি তিনি প্রত্যাখ্যান করছেন৷ শ্যোডার বলেন, ‘‘এএফডি একটি গণতন্ত্রবিরোধী, চরম ডানপন্থি ও আমাদের সমাজকে বিভক্ত করা দল৷ এসব আমাদের আদর্শের সঙ্গে মানানসই নয়৷''
জার্মানির যে সাত রাজনৈতিক দলের নামও শোনেননি আপনি
জার্মানরা শুধু সিডিইউ বা এসপিডি নয়, কিছু ছোট এবং বিরল দলকেও ভোট দিতে পারে৷ এই যেমন, প্রাণী সুরক্ষা পার্টি কিংবা মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি৷ ভাবছেন, এরা কারা? চলুন দেখে নিই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
প্রাণী সুরক্ষা দল
জার্মানিতে প্রাণী অধিকার বিষয়ক অ্যাক্টিভিস্টরা সুযোগ পেলে পুরো হাইওয়ে বন্ধ করে দেন যাতে ব্যাঙেরা নিরাপদে রাস্তা পার হতে পারে৷ এমন দেশে তাই ‘অ্যানিমেল প্রোটেকশন পার্টি’ বা প্রাণী সুরক্ষা দল থাকবে না, তা কি হতে পারে? তবে গ্রিন পার্টির কারণে এ দলের পালে হাওয়া কম থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
দ্য রিপাবলিকানস
ব্যাপারটা কিছুটা বিভ্রান্তিকর৷ জার্মানির রয়েছে নিজস্ব রিপাবলিকান পার্টি, নাম আরইপি৷ তবে এই দলের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো সম্পর্ক নেই৷ জার্মান রিপাবলিকনরা হচ্ছেন ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী, যারা নিজেদের ‘রক্ষণশীল দেশপ্রেমিক’ এবং দেশের ‘সংস্কৃতি এবং আত্মপরিচয়’ রক্ষায় লড়াইরত বলে মনে করেন৷
ছবি: DW
দ্য পার্টি
হ্যাঁ, এই দলের নাম ‘দ্য পার্টি’৷ জার্মানির স্যাটায়ার ম্যাগাজিন ‘টাইটানিক’ এর সম্পাদকরা ২০০৪ সালে এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ দলটির প্রধান হচ্ছেন মার্টিন স্যোনেবর্ন (ছবিতে)৷ ২০১৪ সালে তিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে দলটির জন্য একটি আসন নিশ্চিত করেন৷ ভবিষ্যতে দলটির অবস্থা আরো ভালো হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/Sven Simon/M. Ossowski
গণভোট দল
জার্মানির রেফারেন্ডাম পার্টি বা গণভোট দলের কাছে সুইজারল্যান্ড এক বিশাল অনুপ্রেরণা৷ দলটি চায় দেশের সব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গনভোটের মাধ্যমে জনগণ নেবে৷ সুইজারল্যান্ডে ২০১৬ সালে তেরোটি গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি
জার্মানির এমএলপিডি একটি ছোট দল, যদিও দেশটির অর্ধেক মানুষ এক সময় কমিউনিস্ট ছিলেন৷ মানে ১৯৪৯ থেকে ১৯৮৯ সাল অবধি যখন জার্মানি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল৷ তৎকালীন পূর্ব জার্মানি তখন শাসন করেছিল সোশ্যালিস্ট ইউনিটি পার্টি৷ বর্তমানে উগ্র বামপন্থি এমএলপিডি’র জার্মান রাজনীতিতে কোনো ভূমিকা নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Link
ক্রিশ্চিয়ানস ফর জার্মানি
‘অ্যালায়েন্স সি - ক্রিশ্চিয়ানস ফর জার্মানি’ একটি ক্রিশ্চিয়ান পার্টি, যেটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে৷ খ্রিষ্টান-মৌলবাদীদের একটি দল এবং শ্রমিক, পরিবেশ এবং পরিবারভিত্তিক একটি দল একত্র হয়ে এই দল গড়ে৷ বাইবেলের মান রক্ষা করে দেশ পরিচালনা করতে চায় এই দল৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. MacDougall
6 ছবি1 | 6
এরপর ম্যার্ৎস টুইট করে টিভিতে করা মন্তব্য থেকে পিছু হটার কথা বলেন৷ ‘‘বিষয়টি আরেকবার স্পষ্ট করে বলতে চাই, এবং আমি এটা কখনও অন্যভাবে বলিনি: সিডিইউর রেজ্যুলেশন মানতে হবে৷ এএফডির সঙ্গে কোনো সহযোগিতা করা হবে না, পৌরসভা পর্যায়েও নয়৷''
এর আগে গত সপ্তাহে আরেকটি মন্তব্য করে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন ম্যার্ৎস৷ সিডিইউ/সিএসইউ দলকে তিনি ‘অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি- উপাদান সহ' বলে বর্ণনা করেছিলেন৷
ম্যার্ৎস এমন সময়ে এসব মন্তব্য করলেন যখন জরিপে দেখা যাচ্ছে, এএফডি দল দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে৷ ৩০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে প্রথম স্থানে আছে সিডিইউ৷ এরপরেই ২২ শতাংশ সমর্থন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে এএফডি৷ জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের এসপিডি দল আছে তৃতীয় স্থানে৷
ম্যার্ৎস রোববার এও বলেন যে, যে ভোটাররা এএফডির দিকে ঝুঁকেছেন তাদের সিডিইউর দিকে নিয়ে আসতে চায় তার দল৷