রিভার্স গ্রাফিতি এক ধরনের আর্ট৷ জার্মান আর্টিস্ট ক্লাউস ডাওভেন সম্প্রতি ফ্রান্সের এক বাঁধের দেয়ালে রিভার্স গ্রাফিতি এঁকেছেন৷ দেয়ালে থাকা ময়লা সরিয়ে এমন শিল্পকর্ম তৈরি করা হয়৷
বিজ্ঞাপন
ফ্রান্সের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ১১০ মিটার উঁচু ও ৪৩০ মিটার দীর্ঘ লাক ডে ভুগলা বাঁধে রিভার্স গ্রাফিতি আঁকেন ক্লাউস৷ এটি তার সবচেয়ে বড় কাজ৷
গ্রাফিতি আঁকার কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমরা হাই-প্রেশার ক্লিনার দিয়ে কাজ করি৷ চার ব্যক্তি দড়ির সঙ্গে নিজেদের ঝুলিয়ে নীচে নেমে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে, দেয়াল পরিষ্কার করে৷ অবশ্যই পুরোটা নয়, কিছুটা অংশ৷ কারণ বাকি অংশে ময়লা থাকলেই তবে শিল্পকর্মটা তৈরি করা সম্ভব৷’’
ক্লাউসসহ পাঁচজনের একটি দল প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা প্রফেশনাল হাই-প্রেশার ক্লিনার দিয়ে কাজ করেন৷ কোনো কেমিক্যাল ছাড়াই প্রায় ২৫০ বার প্রেশার দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করেন তারা৷ প্রতিদিন তাদের প্রায় ১২ হাজার লিটার পানি লেগেছে৷
দেয়ালে ডিজাইন ফুটিয়ে তুলতে একটি কৌশল প্রয়োগ করেন ৫৫ বছর বয়সি ক্লাউস৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা প্রস্তাবিত শিল্পকর্মের নকশায় সীমানা রেখা বরাবর কিছু পয়েন্ট বসিয়েছি৷ এরপর সার্ভেয়ারদের দিয়ে দূরত্ব মাপিয়েছি৷ তারপর মাপ অনুযায়ী বাঁধের প্রাচীরে পয়েন্ট বসানো হয়েছে৷ দূর থেকে বোঝার সুবিধার জন্য সেগুলোতে লেজার দেয়া হয়েছে৷ এরপর হাই-প্রেশার ক্লিনার দিয়ে পয়েন্টগুলো যুক্ত করা হয়েছে৷ এভাবে দেয়ালে শিল্পকর্মের সীমানা রেখা ফুটে উঠেছে৷’’
বাঁধের দেয়ালে রিভার্স গ্রাফিতি
03:09
জার্মানির এক ক্লিনিং টেকনোলজি কোম্পানির সঙ্গে মিলে কাজ করেছেন ক্লাউস৷ ২০০৭ সালে তারা জার্মানির ওলেফ বাঁধে প্রথম এমন শিল্পকর্ম তৈরি করেছিলেন৷ একবছর পর জাপানে ফুলের এমন শিল্পকর্ম করা হয়৷ এরপর ২০১২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি করেন বাঘের শিল্পকর্ম৷
মাঝেমধ্যে কাঠের কার্ডবোর্ড দিয়ে কাজ করেন ক্লাউস৷ যেমন ২০১৮ সালে ফ্রান্সের দক্ষিণের বন্দরনগরী স্যাতের দেয়ালে ১৩টি পোর্ট্রেট এঁকেছিলেন তিনি৷ তবে এসব কাজ চিরদিন থাকে না৷ তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বিবর্ণ হয়ে যায়৷
ক্লাউস বলেন, ‘‘আমি আসলে ক্ষণস্থায়ী হয় এমন শিল্পকর্ম করতে চাইনি৷ এটা আমার কাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল৷ তবে এমন কাজের সঙ্গে আমি যত বেশি সম্পর্কিত হচ্ছিলাম, তত এর মান সম্পর্কে সন্তুষ্ট হচ্ছিলাম৷ কারণ এটা জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়৷’’
কাই হর্স্টমায়ার/জেডএইচ
পালিয়েই গেল সুবোধ!
খাঁচাবন্দি সূর্য হাতে পালিয়ে বেড়ানো ‘সুবোধ’ ঢাকাবাসীর পরিচিত চরিত্র৷ কে এই ‘সুবোধ’? কেন সে পালাচ্ছে? উত্তর মেলেনি এখনও৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
তবুও, রাখিস সূর্য ধরে
রাজধানীর শেরই-বাংলা নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের যাত্রী ছাউনির দেয়ালে খাঁচাবন্দি লাল সূর্য নিয়ে পালাতে উদ্যত সুবোধকে দেখা যায়৷ পাশে লেখা আছে ‘তবুও সুবোধ রাখিস সূর্য ধরে’৷ নীচে ইংরেজি হরফে লোগোর মতো হরফে লেখা আছে HOBEKI (হবেকি?)৷ ‘সুবোধ’ -এর প্রায় সব দেয়ালচিত্রেই ব্যবহার হয়েছে HOBEKI?
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
তোর ভাগ্যে কিছুই নেই
খাঁচাবন্দি টকটকে লাল সূর্য হাতে দাঁড়িয়ে আছে সুবোধ৷ পাশে লেখা ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা, তোর ভাগ্যে কিছুই নেই’৷ ‘সুবোধ’-এর এই গ্রাফিতিটি দেখা যায় আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরনো বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
পালা, এখন সময় পক্ষে না
অনেকের মতোই সময়টা ঠিক পক্ষে যাচ্ছে না ‘সুবোধ’-এর৷ তাই দৌঁড়ে পালাচ্ছে ‘সুবোধ’৷ তবে এবার খাঁচাবন্দি সূর্যটার রং লাল নয়, হলুদ৷ এ দেয়াল চিত্রটিও আছে আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরনো বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
খাঁচাবন্দি সূর্য
এই গ্রাফিতিতে ‘সুবোধ’ নিজে অনুপস্থিত থাকলেও তার সার্বক্ষণিক সঙ্গী সূর্যকে ঠিকই দেখা যাচ্ছে৷ এখানেও খাঁচাবন্দি সূর্য ঝুলছে একটি তারে৷ আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরাতন বিমানবন্দরের দেয়ালের শোভা বাড়াচ্ছে এই দেয়ালচিত্রটি৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
কি হয়েছে সুবোধ?
এই গ্রাফিতিতে খাঁচাবন্দি সূর্য পাশে রেখে তীব্র যন্ত্রণায় মাথা চেপে বসে আছে সুবোধ৷ লেখা আছে ‘তুই পালিয়ে যা, তোর ভাগ্যে কিছুই নেই’৷ পাশে যথারীতি HOBEKI? এ গ্রাফিতিটিও দেখা গেছে আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরাতন বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
ভুলেও তুই ফিরে আসিস না!
মাটিতে রাখা খাঁচাবন্দি সূর্য, এলোমেলো চুলের সুবোধ তাকে তুলে দৌড়াতে উদ্যত৷ লেখা রয়েছে, ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা, ভুলেও আর ফিরে আসিস না!’ এ দেয়ালচিত্রটিও আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডে পুরাতন বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
মানুষ ভালবাসতে ভুলে গেছে
‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা, এখন মানুষ ভালোবাসতে ভুলে গেছে’৷ কিন্তু মানুষের সান্নিধ্য এড়িয়ে কোথায় যাবে সুবোধ? আগারগাঁও থেকে শিশুমেলা যেতে সড়কের বাম পাশে আছে সুবোধের এই দেয়ালচিত্রটি৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
মুছে ফেলা গ্রাফিতি
রাতের আঁধারে ঢাকার দেয়ালে একের পর এক গ্রাফিতি একে চলছেন ‘সুবোধ’৷ তবে নিশ্চয়ই সুবোধকে খুঁজে বেড়াচ্ছে কেউ৷ সুবোধের চিহ্ন মুছে ফেলতে সেই গ্রাফিতি রং দিয়ে মুছে ফেলার চেষ্টাও হচ্ছে রাতের আঁধারেই৷ আক্রমণে বিপর্যস্ত ‘সুবোধ’-এর এমনই একটি গ্রাফিতি রয়েছে আগারগাঁও-মহাখালী লিংক রোডের পুরনো বিমানবন্দরের দেয়ালে৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
সুবোধ কি ধরা পড়ে গেছে!
সুবোধ কি পালাতে পারেনি? সুবোধ কেন কারাগারে? খাঁচাবন্দি সূর্যটাই বা নিয়ে গেল কে? উত্তর মেলেনি এখনও৷ আগারগাঁও এ শেরেবাংলা নগর বালক উচ্চবিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোণের পাওয়ার হাউসের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে জেলবন্দি ‘সুবোধ’৷ লেখা রয়েছে, ‘সুবোধ এখন জেলে, পাপবোধ নিশ্চিন্তে করছে বাস মানুষের হৃদয়ে’৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
কোথায় সুবোধ? কোথায় সূর্য?
আগারগাঁও থেকে শিশুমেলা যেতে সড়কের বাম পাশে আছে ‘সুবোধ’ এর আরেকটি দেয়াল চিত্র৷ সাদার মধ্যে লাল হরফে বড় করে লেখা HOBEKI? নীচে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে থাকা দু’টি কাক৷ এই গ্রাফিতিতে সুবোধ বা তার বন্ধু খাঁচাবন্দি সূর্য, কেউই নেই৷