জার্মান ট্রেনের একটা সুনাম দীর্ঘদিন ছিল, সেটা হচ্ছে, ট্রেন কখনো দেরি করে না৷ সেই সুনাম এখন আর নেই৷ বরং ক্রমশ নিয়মিত ট্রেনযাত্রীদের কাছে বিরক্তিকর হয়ে উঠছে ইউরোপের অন্যতম বড় রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান ডয়চে বান৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে প্রায় এক যুগ আগে আসার পর জার্মান ট্রেনের অনেক সুনাম শুনেছি৷ ট্রেন খুব দ্রুতগতিতে চলে এবং সময় ঠিক রাখে৷ তবে শুরুর দিকে ট্রেনে খুব বেশি চড়া হয়নি৷ আর ড্রাইভিং লাইসেন্স করার পর তো ‘অফিসিয়াল-আনঅফিসিয়াল' সব কাজেই গাড়ি নিয়ে গিয়েছি৷ জার্মান মহাসড়কে গাড়ি চালানোর মজাই অন্যরকম৷ চওড়া এবং কয়েকশত কিলোমিটার লম্বা রাস্তাগুলোতে গাড়ি চালাতে চালাতেই জার্মানির প্রকৃতি উপভোগ করা যায়৷
তবে বছর পাঁচেক ব্যক্তিগত গাড়ি চালানোর পর নানা কারণে এক ধরনের একঘেয়েমি চলে আসে৷ এর চেয়ে ট্রেন ভালো মনে হতে শুরু করে৷ একটি বিষয় বিশেষভাবে মনে স্থান করে নিয়েছে যে, গাড়ি চালানো আসলে সময় নষ্ট করা৷ এর চেয়ে ট্রেনে বসে সেই সময়টা বই পড়ে, ফেসবুক দেখে কিংবা অন্য কোনো কাজে লাগানো যায়৷ অফিসের কাজে কোথাও গেলে এই সময়টা প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্যও ব্যবহার করা যায়৷
যা হোক, এসব ভাবনা থেকে গত একবছর ধরে ট্রেনে যাতায়াত করছি৷ আর এই এক বছরে আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, জার্মান ট্রেনের উপরে ঠিক ভরসা করা যায় না৷ দেখা যাবে, গুরুত্বপূর্ণ কোনো মুহূর্তে ট্রেন ঠিকমতো আসছে না৷ আর এদেশে মানুষের সময়ানুবর্তিতা অনেক প্রকট৷ ফলে, ট্রেন দেরি করায় আপনি যদি তাদের সেই সময়জ্ঞানের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারেন, তখন এক ধরনের বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়৷
জার্মানিতে মাঝেমাঝে ট্রেন কেন দেরি করে সেটা নিয়ে কিছুটা ঘাঁটাঘাটি করেছি৷ যে কারণগুলো পেয়েছি তার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ৷ কোথাও ঘুর্ণিঝড় কিংবা বন্যার ঘটনা ঘটলে তখন ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে৷ এছাড়া সামগ্রিকভাবে পুরনো অবকাঠামোও রেলযাত্রায় জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার একটি কারণ৷
এক নজরে বাংলাদেশের রেল
ন্যারোগেজ রেলপথ অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে উঠে গেছে, এখন মেট্রোরেল উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকাবাসী৷ বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের আদ্যোপান্ত দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: DW/M. Rahman
ব্রিটিশ আমলে শুরু
বাংলাদেশে রেলওয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে৷ ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর দর্শনা-জগতি রেললাইন স্থাপনের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় রেল যুগের৷
ছবি: DW/M. Rahman
এখন যা আছে
বাংলাদেশ রেলওয়ের ২৭৮টি লোকোমোটিভ, এক হাজার ৬৫৬টি মিটারগেজ ও ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ এবং আট হাজার ৬৮০টি পণ্যবাহী ওয়াগন আছে৷ তবে সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় অধিকাংশের অবস্থাই জরাজীর্ন৷
ছবি: DW/M. Rahman
দুই ধরনের পথ
বাংলাদেশে বর্তমানে ‘ব্রডগেজ’ এবং ‘মিটারগেজ’ এই দুই ধরনের রেলপথ চালু রয়েছে৷ দেশের পূর্বাঞ্চলে রয়েছে মিটার ও ব্রডগেজ রেলপথ৷ পূর্বাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ রয়েছে৷ আগে ন্যারোগেজ রেলপথ চালু থাকলেও এখন আর তার ব্যবহার নেই৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলপথ
বাংলাদেশে দুই হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথ আছে৷ তবে অনেকটাই ব্যবহারের উপযোগী নয়৷ দেশের ৪৪ টি জেলার সঙ্গে রেললাইন নেটওয়ার্ক সংযুক্ত৷
ছবি: Samdani Haque Najum
বোর্ড
১৯৮২ সালের ২ জুন পর্যন্ত একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য নিয়ে রেলওয়ে বোর্ডের মাধ্যমে রেলপথের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলওয়ে বিভাগ
১৯৮২ সালের ৩ জুন রেলওয়ে বোর্ড বিলুপ্ত করে এর কার্যক্রম যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের রেলওয়ে বিভাগের আওতায় নেয়া হয়৷ তখন থেকে এই বিভাগের সচিব রেলওয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করতেন৷ পরে রেলওয়েকে পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে ভাগ করা হয়৷
ছবি: DW/M. Rahman
মহাপরিচালকের হাতে রেল
১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট রেলপথের দৈনন্দিন কার্যক্রম যোগাোযাগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে মহাপরিচালকের হাতে ন্যস্ত করা হয়৷ তবে নীতি নির্ধারণের জন্য যোগাযোগমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে গঠন করা হয় নয় সদস্যের বাংলাদেশ রেলওয়ে অথরিটি৷
ছবি: DW/M. Rahman
রেলপথ মন্ত্রণালয়
২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে আদেশ জারি করে৷ বর্তমানে সচিবালয় সংলগ্ন রেলভবনে এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/M. Ponir
দীর্ঘ রুট
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় স্টেশন পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ৫০৫ কিলোমিটার, এটিই দেশের সবচেয়ে বেশি দীর্ঘ রেলরুট৷ এই রুটে ‘দ্রুতযান’ ও ‘একতা এক্সপ্রেস’ চলাচল করে৷
ছবি: bdnews24.com
ই-টিকেটিং
বাংলাদেশ রেলওয়ে কয়ক বছর আগে ই-টিকেটিং চালু করেছে৷ যাত্রীরা অনলাইনে তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন৷
ছবি: Sony World Photography Awards/Md Enamul Kabir
সেরা পথ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের রেলপথকে সব থেকে সুন্দর রেললাইন হিসেবে অভিহিত করেছে টেলিগ্রাফ৷ শ্রীমঙ্গলের সবুজে ঘেরা পথটুকু আসলেই দৃষ্টিনন্দন৷
ছবি: bdnews24.com/Mustafiz Mamun
জনবল
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৫ হাজার ৮৩ জন নিয়মিত কর্মচারী রয়েছে৷ এর বাইরে বিভিন্ন কারিগরি পদে চুক্তিতে কয়েক হাজার মানুষ কাজ করেন৷
ছবি: Samdani Haque Najum
মেট্রোরেল
মেট্রেরেল চালুর জন্য কয়েক বছর আগে কাজ শুরু হলেও ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথমবারের মতো এই রেল সার্ভিস চালু হতে পারে৷ মেট্রেরেল চালু করতে রেলপথ স্থাপনের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে৷
ছবি: Samdani Haque Najum
লোকসান
রেলে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বাড়লেও এর সেবার মানে উন্নতি না হওয়ায় লোকসানের মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রেলওয়ে৷ ২০১৭ সালের থেকে ২০১৮ সালে রেলের যাত্রী বেড়েছে এক কোটিরও বেশি, কিন্তু ২০১৭ সালে রেলে এক হাজার ২০০ কোটি এবং ২০১৮ সালে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে৷
ছবি: Samdani Haque Najum
১০ খাতে দুর্নীতি
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি, যাত্রীবাহী ট্রেন ইজারা দেয়া এবং ট্রেনে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনসহ বাংলাদেশের রেলখাতের ১০টি দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে প্রতিবেদন দিয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
15 ছবি1 | 15
আরো একটি কারণের কথা না বললেই নয়৷ জার্মানিতে আত্মহত্যার যেসব ঘটনা ঘটে, তারমধ্যে একটি অংশ ঘটে রেললাইনে৷ এই দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে ট্রেনের নীচে চাপা পড়ে আত্মহত্যার একটা প্রবণতা আছে মনে হচ্ছে৷ সমস্যা হচ্ছে, এরকম ঘটনা ঘটার পর সংশ্লিষ্ট রুট মোটামুটি ভালো সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় মরদেহ সরিয়ে নিতে এবং তদন্তের স্বার্থে৷ আর তাতে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে৷
তবে দুরপাল্লার ট্রেন দেরি করলে কিংবা কাঙ্খিত সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে যাত্রীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করার দায়িত্বও সংশ্লিষ্ট সেবাদাতার উপরে পড়ে৷ কেউ কেউ এমনকি বিকল্প হিসেবে ট্যাক্সি সেবাও পান৷ তা সত্ত্বেও সবকিছু মিলিয়ে জার্মান ট্রেন এখন ক্রমশ সুনামের চেয়ে বদনাম কুড়াচ্ছে বেশি৷
এক্ষেত্রে আশার কথা হচ্ছে, ট্রেনসেবার মান বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ ট্রেনযোগাযোগকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে আগামী দশ বছরে ৮৬ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি৷ এই অর্থ খরচ করে দু'হাজারের মতো রেলসেতু সংস্কারসহ পুরনো সব কাঠামো আধুনিক করা হবে৷ পাশাপাশি ট্রেন চালকের সংখ্যাও বাড়ানো হবে৷ ফলে ২০৩০ সাল নাগাদ জার্মান ট্রেন আবার সেই পুরনো সুনাম ফিরে পাবে বলেই আশা করা হচ্ছে৷
আমি ভাবছি, সে পর্যন্ত অপেক্ষা করবো, নাকি আবারো গাড়ি চালানো শুরু করবো৷ আপাতত আরো কিছুদিন দেখি৷
প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলতে চান? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷
জার্মান ট্রেন সম্পর্কে যে দশটি বিষয় জানা উচিত
টিকিট, রিজার্ভেশন এবং ট্রেনের ধরন: জার্মানিতে ট্রেনে চলাচলে আগ্রহীদের জন্য এখানে থাকছে দশটি তথ্য বা পরামর্শ যা আপনার কাজে লাগতে পারে৷
ছবি: Deutsche Bahn AG
আপনি কি বুঝতে পারছেন?
জার্মানির ট্রেন স্টেশনগুলোতে প্রায়ই লাউডস্পিকারে নানা ঘোষণা দেয়া হয়৷ তবে, সেগুলো ট্রেন স্টেশনের অন্যান্য শব্দের কারণে অনেকসময়ই বোধগম্য হয়না৷ তাই, সেসব ঘোষণা নিয়ে বেশি ভাবার দরকার নেই৷ বরং এক্ষেত্রে একটি জনপ্রিয় জার্মান বাগধারা মনে রাখবেন, ‘‘ইস্ ফার্স্টেহে ন্যুর বানহফ’’ অর্থাৎ ‘‘আমি শুধু ট্রেন স্টেশন বুঝতে পারছি৷’’ একথার অর্থ হচ্ছে আপনি ঘোষণার অন্য কোন তথ্যই বুঝতে পারেননি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ট্রেনের নানা ধরন
জার্মানির অধিকাংশ শিশুও এটা জানে: ‘দ্য ইন্টারসিটি-এক্সপ্রেস (আইসিই)’ হচ্ছে ডয়চে বানের সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন৷ এসব ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে৷ আইসিই’র পরেই অবস্থান ‘দ্য ইন্টারসিটি’ ট্রেনের৷ ঘণ্টায় দু’শো কিলোমিটার অবধি গতিতে চলা এসব ট্রেন দেখতে আইসিই’র মতো সাদা এবং লাল রংয়ের হলেও এগুলো আসলে একটু পুরনো৷ এই দুই ধরনের ট্রেন ছাড়াও রয়েছে লালরংয়ের ‘রিজিওনাল বান (আরবি)’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Woitas
সব ট্রেন সময়মত আসে না
সময়ানুবর্তিতার জন্য জার্মানদের সুখ্যাতি থাকলেও সময়মত ট্রেন আসার বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে৷ বরং ইদানিংকালে ট্রেন দেরিতে আসার বিষয়টি নিয়ে অনেককে আলোচনা করতে দেখা যায়৷ ডয়চে বান অবশ্য দাবি করেছে, ২০১৮ সালে প্রায় ৭৫ শতাংশ ইন্টারসিটি ট্রেন সময়মত বা নির্ধারিত সময় অতিক্রম করার পাঁচ মিনিটের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Tschauner
টিকিট অপরিহার্য
জার্মানিতে ট্রেনে ওঠার আগে টিকিট কাটা হচ্ছে সাধারণ নিয়ম৷ তবে, যদি কোন কারণে আপনার স্টেশনের টিকিট ভেন্ডিং মেশিনটি কাজ না করে কিংবা টিকিট কাটার পর্যাপ্ত সময় না পান, তাহলে আইসিই বা ইন্টারসিটি ট্রেনে উঠে সঙ্গে সঙ্গে কন্ডাক্টরের কাছ থেকে টিকিট কিনতে পারেন৷ আরবিতে অবশ্য এই সুবিধা নেই৷ সেটিতে বরং টিকিট না কেটে ওঠায় জরিমানা গুনতে হতে পারে৷
ছবি: Deutsche Bahn AG/P. Castagnola
টাকা বাঁচাতে দলবদ্ধ ভ্রমণ
আঞ্চলিক ট্রেনের ক্ষেত্রে অনেক সময় পাঁচজন মিলে এক টিকিট কেটে সস্তায় ভ্রমণ করা যায়৷ একসঙ্গে কোথাও বেড়াতে গেলে এ ধরনের টিকিট লাভজনক হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Kalaene
সাইকেল নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ কঠিন
আপনার বাইসাইকেলটি যদি ভাঁজ করা না যায়, তাহলে আইসিইতে সেটি নিয়ে চড়া বারণ৷ তবে ইন্টারসিটি এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ট্রেনে একটি বিশেষ কামরা রয়েছে, যেখানে সাইকেলসহ ওঠা যায়৷ বলাবাহুল্য, জার্মানিতে গ্রীষ্মের সময় অনেকেই সাইকেল চালাতে পছন্দ করেন৷ তাই সেসময় ট্রেনে সাইকেলসহ উঠতে চাইলে একটু আগেভাগে স্টেশনে গেলে ভালো৷
ছবি: DW/Elizabeth Grenier
সিট রিজার্ভ করাও জরুরি
জার্মানিতে ট্রেনের টিকিটের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিট দেয়া থাকে না৷ দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট কাটার পর নির্দিষ্ট সিট রিজার্ভ করতে বাড়তি টাকা গুনতে হয়৷ ট্রেনের সিটের সঙ্গে থাকা ট্যাগে সেটি রিজার্ভ করা কিনা, সে তথ্য থাকে৷ তাই সিট রিজার্ভ না করে শুধু টিকিট কেটে ট্রেনে উঠলে এমন সিটে বসাই উত্তম যেটি অন্য কেউ রিজার্ভ করেননি৷
ছবি: Deutsche Bahn AG/O. Lang
সঠিক স্থানে দাঁড়ান
ডয়চে বানের আইসিই ট্রেন ঠিক কোথায় দাঁড়াবে এবং সেটির কোন বগির অবস্থান কোথায় হবে - তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে৷ তাই আপনি টিকিটে উল্লেখিত বগি এবং সিট নম্বর অনুসারে প্লাটফর্মে দাঁড়ালে ট্রেন আসার পর বেশি দৌঁড়ঝাপ করতে হবে না৷
ছবি: DW/Elizabeth Grenier
ট্রেনের নানা জায়গা
আপনি কি টেবিলসহ একটি সিট চান নাকি করিডোরে সিট চান - তা সিট রিজার্ভ করার সময় ঠিক করে দিতে পারেন৷ এমনকি ট্রেনের মধ্যে এমন স্থানও আছে যেখানে বসে জোরে কিংবা ফোনে কথা বলা নিষেধ৷ তাই, সিট রিজার্ভ করার সময় এসব বিষয় খেয়াল রাখলে পরবর্তীতে সুবিধা হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/N. Schmidt
শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
শিশুদের নিয়ে ভ্রমণ করা অভিভাবকদের জন্য ডয়চে বানের আইসিই ট্রেনে রয়েছে বিশেষ কামরা৷ সেখানে শিশুরা শব্দ করলেও কোন সমস্যা নেই৷ তবে, এক্ষেত্রেও সেই কামরা আগে থেকে বুক করে রাখলে ভালো৷ পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুরা ট্রেনে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করতে পারে৷ তবে, পনেরো বছর অবধিও এই সুবিধা পাওয়া যেতে পারে যদি তাদের সঙ্গে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছেন এমন কোন অভিভাবক থাকেন৷