জার্মান নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপের শঙ্কায় ৮৮ শতাংশ ভোটার
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫![ভিডিও কলে এএফডি এর নির্বাচনি প্রচারণার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ইলন মাস্ক](https://static.dw.com/image/71415639_800.webp)
তারা রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি চীনকেও হুমকি মনে করেন৷
ব্রাসেলসভিত্তিক ডিজিটাল শিল্প সমিতি বিটকম পরিচালিত জরিপে উঠে এসেছে যে অনেক জার্মানই তাদের নির্বাচনে বিদেশি শক্তির নাক গলানোর আশঙ্কা করছেন৷ জার্মানিতে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷
এক হাজারের বেশি ভোটার এই জরিপে অংশ নেন৷ তাদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে বিদেশি কোনো শক্তি, সরকার, গোষ্ঠী বা প্রভাবশালী ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে জার্মানির নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে পারে৷
এধরনের কর্মকান্ডে যারা জড়িত হতে পারে তাদের মধ্যে রাশিয়ার সম্ভাবনা ৪৫ শতাংশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪২ শতাংশ, চীনের ২৬ শতাংশ বলে মনে করছেন জরিপে অংশ নেয়া ভোটাররা৷ পূর্ব ইউরোপের কোনো শক্তিও এধরনের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতে পারে বলে মনে করেন ৮ শতাংশ ভোটার৷
এই ভোটাররা নিজস্ব রাজনৈতিক মতামত তৈরি করতে তথ্য কোথায় কোথায় থেকে নেন সেটাও জানিয়েছেন৷ জরিপে অংশ নেয়াদের ৮২ শতাংশ বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সঙ্গে আলাপ থেকে, ৭৬ শতাংশ টেলিভিশন থেকে এবং ৬৯ শতাংশ ইন্টারনেট থেকে তথ্য পান বলে জানিয়েছেন৷
৮০ শতাংশ মনে করেন, আগামী সরকারের উচিত হবে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অপতথ্য রোধে ডিজিটাল নীতি তৈরির দিকে মনোযোগী হওয়া৷
বিটকমের প্রেসিডেন্ট রাল্ফ ভিন্টারগেয়ার্স্ট জরিপের একটি দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন৷ ৭১ শতাংশ মানুষ মনে করেন অনলাইনে অপতথ্য রোধে নতুন এক মন্ত্রণালয় তৈরি করা দরকার৷ তিনি বলেন, ‘‘নতুন ডিজিটাল মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সব অধিকার এবং সম্পদ দিয়ে সাজাতে হবে৷ এটির নিজস্ব বাজেট ও নতুন আইন এবং প্রকল্প নেয়ার ডিজিটাল শর্ত থাকতে হবে৷''
অপতথ্যের বিস্তার দেখছে জার্মান ভোটাররা
জরিপে অংশ নেয়াদের এক তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন যে তারা ইন্টারনেটকে তথ্যের উৎস হিসেবে ব্যবহার করেন এবং সেখানে ইতোমধ্যে অপতথ্য পেয়েছেন৷
ভোটারদের একটি বড় অংশই ইন্টারনেটে ডিপফেক নিয়ে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন৷ কারণ এভাবে তৈরি ভুয়া ভিডিও, ছবি বা অডিও সহজে সনাক্ত করা যায় না৷ ৫৬ শতাংশের মতো ভোটারের ধারনা এধরনের ডিপফেকের বিরুদ্ধে লড়তে জার্মান গণতন্ত্র এখনো প্রস্তুত হয়নি৷
বিটকমের ভিন্টারগেয়ার্স্ট বলেন, ‘‘অপতথ্যের বিষয়ে ভোটারের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে৷ ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে লড়ার পথে এটা এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷ জার্মানির জাতীয় নির্বাচনে অপতথ্য নাটকীয় প্রভাব বিস্তার করতে পারে কারণ এটা জনমত বদলে দিতে পারে ও বিভিন্ন প্রার্থী বা দলের মানহানি করতে পারে৷''
মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক ইতোমধ্যে তার সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্স ব্যবহার করে জার্মান রাজনীতিবিদদেরকে নির্লজ্জভাবে অপমান করছেন এবং দেশটির উগ্রডানপন্থি দল এএফডির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷ এধরনের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা এখনো নিশ্চিত নয়৷
বিটকমের জরিপে অংশ নেয়া ভোটারদের ৬৬ শতাংশ এএফডির আগ্রাসী সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ বিশেষ করে তরুণ ভোটাররা এসবে প্রভাবিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ তবে জরিপে অংশ নেয়া ৮৭ শতাংশের মতামত হচ্ছে অনলাইনে উগ্র ডানপন্থা মোকাবিলায় সমাজকে আরো এগিয়ে আসতে হবে৷
প্রতিবেদন: জন শেলটন/এআই