1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান নির্বাচন: সরকার গঠনের পালা

২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

এসপিডি দল এবার ‘বৃহৎ জোটে' থাকবে না৷ কাজেই সরকার গঠনের একমাত্র সম্ভাবনা হলো, সিডিইউ-সিএসইউ, এফডিপি ও সবুজ দলের মধ্যে জোট৷ অথচ এই চারটি দলের মধ্যে ফারাক কম নয়৷

Illustration Jamaika-Koalition
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Rumpenhorst

গুঁতোর নাম বাবাজীবন৷ তাই রবিবারের নির্বাচনে সফল দলগুলিকে এখন একটি সম্পূর্ণ নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে৷ বর্তমান জোট সরকারের ছোট তরফ এসিপিডি দল তাদের নির্বাচনি বিপর্যয়ের সন্ধ্যাতেই ঘোষণা করে যে, তারা এবার বিরোধীপক্ষে যাবে – যার অর্থ, জার্মানিতে একটি তথাকথিত ‘জামাইকা' জোট গঠনের সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে৷ জার্মান রাজনীতির প্রতীকী রঙের খেলায় রক্ষণশীল সিডিইউ-সিএসইউ দলকে কালো, উদারপন্থি মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপি দলকে হলুদ ও সবুজদের স্বভাবতই সবুজ হিসেবে অভিহিত করা হয়৷ অপরদিকে জামাইকার জাতীয় পতাকার রং হলো কালো-হলুদ-সবুজ, তাই চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে তাঁর চতুর্থ কর্মকালের জন্য এবার এই ‘জামাইকা' জোটের উপর নির্ভর করতে হবে, যা কিনা কেন্দ্রে একেবারেই অভিনব, যদিও অতীতে ও বর্তমানে রাজ্য পর্যায়ে কালো-হলুদ-সবুজ সরকার গঠিত হয়েছে৷

গত জুন মাস যাবৎ উত্তরের শ্লেসভিগ-হলস্টাইন রাজ্যে যে ‘জামাইকা' জোট শাসন চালাচ্ছে, তার স্থায়িত্ব সম্পর্কে এই স্বল্প সময়ে কিছু বলা সম্ভব নয়৷ দেশে প্রথম কালো-হলুদ-জোট গঠিত হয় পশ্চিমের ক্ষুদ্র সারলান্ড রাজ্যে ২০০৯ সালের শেষে, যদিও তা ২০১২ সালের সূচনাতেই ভেঙে যায়৷ অবশ্য সেই জোট সরকারের পতনের কারণ ছিল, জোট সহযোগীদের মধ্যে কোঁদল নয়, বরং এফডিপি দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব, যার ফলে সিডিইউ মুখ্যমন্ত্রী আনেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার এফডিপি-র সঙ্গে সহযোগিতার অন্ত ঘোষণা করেন৷ কাজেই তথাকথিত ‘জামাইকা' জোটের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার দলনেত্রী আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে পারেন৷ এক্ষেত্রে শ্লেসভিগ-হলস্টাইনের সিডিইউ মুখ্যমন্ত্রী ডানিয়েল গ্যুন্টারের অভিজ্ঞতা মাত্র তিন মাসের, তিনিও হয়ত কিছু কিছু যোগ করতে পারেন৷

জোট গঠনের মূলমন্ত্র হবে আপোশ

 আঙ্গেলা ম্যার্কেল গত ১২ বছর ধরে চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত; বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী বা মতামতের মধ্যে মধ্যস্থতা করার ক্ষমতা তাঁর সহজাত বলে কথিত আছে৷ সেই কারণেই আবার তাঁকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের কাছ থেকে শুনতে হয় যে, তাঁর নিজস্ব কোনো মতামত নেই৷ কিন্তু ‘জামাইকা' জোট গঠনের সময় ম্যার্কেলের এই ‘নিরপেক্ষতাই' কাজ দিতে পারে, যদিও ‘জামাইকা' জোট সম্পর্কে তাঁর নিজের দল সিডিইউ ও তাদের বাভেরীয় ‘সহযোগী দল' সিএসইউ-তে দ্বিধা কম নয়৷ কিন্তু ম্যার্কেলের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন, সিডিইউ বা সিএসইউ-তে আপাতত এমন কেউ আছেন বলে মনে হয় না – বিশেষ করে বাভেরিয়ায় সিএসইউ দল বিপর্যয়মূলক ফলাফল করার পর সিএসইউ নেতা হর্স্ট সেহোফার তো ননই৷ তবুও বাভেরিয়া থেকে ম্যার্কেলের দিকে প্রতিরোধ আসবে বলে ধরে নেওয়া যায়; রবিবার সন্ধ্যাতেই সেহোফার ঘোষণা করেছেন যে, তাঁর দল এবার তাদের দক্ষিণপন্থি ভাবমূর্তিকে আরো স্পষ্ট করে তুলবে৷ সেহোফারের এই ঘোষণার পটভূমিতে রয়েছে রক্ষণশীলদের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের সাফল্য৷

অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও উদ্বাস্তু নীতির ক্ষেত্রে অতীতে ও বর্তমানে নানা ধরনের কড়া ও চড়া মন্তব্য এফডিপি ও সবুজদের মধ্যে জোট সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনায় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত আইন আরো কড়াকড়ির প্রস্তাব সবুজ দলের সাধারণ সদস্যদের কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে – যদিও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে আপোশ সম্ভব৷ আরো বেশি পুলিশ ও তাদের উন্নততর সরঞ্জাম প্রদানের ক্ষেত্রে এফডিপি ও সবুজরা একমত৷

সিডিইউ দলকে একাধিক ক্ষেত্রে আপোশের মনোভাব দেখাতে হবে৷ নিরাপত্তার প্রয়োজনে নাগরিক অধিকারের উত্তরোত্তর সঙ্কোচন এফডিপি বা সবুজ দলের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নয়৷ অপরদিকে এই দু'টি ছোট দলকেও পরস্পরের প্রতি তাদের সুর নরম করতে হবে৷ সবুজরা নাগরিকদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চায়, বলে এফডিপি-র বহুদিনের অভিযোগ; যেমন এফডিপি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক স্বার্থকে গুরুত্ব দেয় বলে সবুজদের ধারণা৷

শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচিতেই নয়, পরস্পরের প্রতি আচরণও জোট গঠনের ক্ষেত্রে অতীব গুরুত্বপূর্ণ হবে: এক্ষেত্রে সবুজ ও এফডিপি দলের প্রবীণ ও অভিজ্ঞ নেতাদের উপর একটা বড় দায়িত্ব এসে পড়বে – যেমন বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের সবুজ মুখ্যমন্ত্রী ভিনফ্রিড ক্রেট্শমান, যিনি তাঁর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও রক্ষণশীল মনোবৃত্তির প্রদেশে সিডিইউ দলের সঙ্গে একটি সফল জোট সরকার চালাচ্ছেন৷ তবে সবুজ দলের বামঘেঁষা সদস্যদের সম্মত করতে ৬৯ বছর বয়সি ক্রেট্শমানকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে৷

এফডিপি দলে ক্রেট্শমানের ভূমিকা নেবেন দলের উপসভাপতি, ৬৫ বছর বয়সি ভল্ফগাং কুবিকি, যার উদ্যোগে গত জুন মাসের শেষে শ্লেসভিগ-হলস্টাইন রাজ্যে ক্ষমতাসীন ‘জামাইকা' জোট চালু হয়৷ মুশকিল এই যে, কেন্দ্রে ‘জামাইকা' জোট গঠনের জন্য এফডিপি-কে চাপের মুখে পড়তে দিতে রাজি নন কুবিকি; ভোটের দিন সন্ধ্যাতেই তিনি এসপিডি-কে তাদের বিরোধীপক্ষে যাবার সিদ্ধান্তের জন্য সমালোচনা করেন৷

নতুন নির্বাচনে শুধু এএফডি-র সুবিধা

অগঠিত নতুন সরকারের সব সম্ভাব্য সহযোগীরাই এএফডি-র চাপ অনুভব করছে৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে দু-দু'বার জোট সরকার গঠন করে তার মূল্য দেওয়ার পর এসপিডি যে বিরোধীপক্ষে যেতে চায়, তা বোধগম্য৷ কিন্তু সিডিইউ-সিএসইউ, এফডিপি ও সবুজরা একমত না হতে পারলে, নতুন মধ্যকালীন নির্বাচন অনিবার্য, যা কিনা একমাত্র দক্ষিণপন্থি পপুলিস্ট এএফডি দলের কাজে লাগবে, বুন্ডেসটাগের অন্যান্য দলগুলির কারোরই যা কাম্য নয়৷ 

মার্সেল ফ্যুর্স্টেনাউ/এসি

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ