চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ঘোষণা করেছেন, জার্মানিতে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আরো ছয় মাস বহাল থাকবে। ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে অভিবাসন এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ।
অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন ঠেকাতে গত বছরের শেষ দিক থেকে সীমান্তে অস্থায়ী কড়াকড়ি আরোপ করেছে জার্মানিছবি: Matthias Balk/dpa/picture alliance
বিজ্ঞাপন
জার্মানির সীমান্তে বর্তমান অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণের মেয়াদ শেষ হচ্ছে মার্চ মাসে। এরপর এই মেয়াদ আরো ছয় মাসের জন্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর।
জার্মানির ফেডারেল নির্বাচনের বাকি দুই সপ্তাহেরও কম সময়। এর আগেই এমন পদক্ষেপ প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ইউরোপীয় কমিশন, ইইউর নির্বাহী শাখাকে এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শলৎস।
শলৎস বলেছেন, এই ব্যবস্থা চালুর পর সীমান্ত থেকে ৪৭ হাজার মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৯শ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর। জার্মানিতে আশ্রয় আবেদনও ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে এক তৃতীয়াংশ কমেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ছয় মাস বাড়ানোর ফলে এই বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে।
একাধিক হামলায় অভিবাসী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের জড়িত থাকার পরিপ্রেক্ষিতে অভিবাসন মোকাবিলা ইস্যুতে শলৎসের মধ্যপন্থি সামাজিক গণতন্ত্রী দল - এসপিডি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
নির্বাচন পূর্ববর্তী নানা জরিপে দেখা যাচ্ছে, দলটি বর্তমানে প্রায় ১৬ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এমনটা সত্যিই ঘটে থাকলে তা হবে দলটির ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ নির্বাচনি ফল।
জনপ্রিয়তা বিবেচনায় রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ রয়েছে প্রথম স্থানে। অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলাকে প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির একটি করে তুলেছে এই দলটি।
সিডিইউ/সিএসইউ-এর বিরুদ্ধে বার্লিনে বিশাল বিক্ষোভ
অভিবাসন বিল নিয়ে সিডিইউ/সিএসইউ অতি ডানপন্থি এএফডি-র সঙ্গে সহযোগিতা করায় বিশাল বিক্ষোভ জার্মানিতে।
ছবি: Sebastian Gollnow/dpa/picture alliance
বার্লিনে এক লাখ ৬০ হাজার মানুষের বিক্ষোভ
গত শুক্রবার সংসদে আরো কড়া অভিবাসন বিল নিয়ে রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ ও অতি ডানপন্থি এএফডি সহযোগিতা করেছিল। তারপরই রোববার বার্লিনে দুই দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন লাখো মানুষ। পুলিশ জানিয়েছে, বার্লিনের বিক্ষোভে এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ ছিলেন।
ছবি: John Macdougall/AFP/Getty Images
সিডিইউ-বিরোধী স্লোগান
বিক্ষোভকারীরা প্রথমে পার্লামেন্ট ভবনের কাছে সমবেত হন। তারপর তারা যান সিডিইউ সদরদপ্তরের কাছে। তারা স্লোগান দিতে থাকে 'শেম অন ইউ সিডিইউ'।
ছবি: Sebastian Gollnow/dpa/picture alliance
সিডিইউ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সিডিইউ নেতা ফ্রিডরিখ মেরৎস এএফডির সমর্থনে অভিবাসন-বিরোধীা বিল পাস করতে গেছিলেন। এটা 'শয়তানের সঙ্গে হাত মেলানোর মতো কাজ'।
ছবি: Omer Messinger/Getty Images
সিডিইউ নেতার বক্তব্য
রোববার সিডিইউ নেতা মেরৎস বলেছেন, আমি খুব স্পষ্টভাবে ও জোরের সঙ্গে জানাতে চাই, ''আমরা কোনোভাবেই এএফডির সঙ্গে কোনোরকম সমঝোতা করব না। তাকে প্রশ্ন করা হয়, যদি কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তাহলে আপনি কি এএফডির সমর্থন নেবেন? মেরৎস বলেন, না, নেব না। ''
ছবি: Sebastian Gollnow/dpa/picture alliance
সিডিইউ ছাড়লেন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে একটা মতৈক্য হয়., তারা কোনোভাবে অতি ডানপন্থিদের সঙ্গে হাত মেলাবে না। সেই অবস্থান থেকে সরে গেছেন মেরৎস। এর প্রতিবাদে দল ছেড়েছেন মাইকেল ফ্রিডম্যান। তিনি জার্মানিতে ইহুদিদের সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সহ সভাপতি।
ছবি: Sebastian Gollnow/dpa/picture alliance
অনেক শহরে বিক্ষোভ
গত সপ্তাহান্তে কোলন-সহ জার্মানির বহু শহরে সিডিইউ/সিএসইউয়ের বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদ দেখান। উপরের ছবিটি কোলন শহরের।