1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান পুনরএকত্রিকরণের ২১ বছর

৩ অক্টোবর ২০১১

১৯৯০ সালের ৩রা অক্টোবর পুনরএকত্রিত হয় দুই জার্মানি৷ জার্মান তথা পুরো বিশ্বের কাছে এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বের৷ পুনরএকত্রিকরণের দিনটিকে জার্মানরা প্রতি বছর পালন করেন জার্মান জাতীয় দিবস হিসেবে৷

বন শহরের আয়োজনে হাজির জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফছবি: dapd

এবছর জার্মান জাতীয় দিবসের মূল আয়োজন করা হয়েছে বন শহরে৷ প্রতি বছরই সাধারণত জার্মানির কোন রাজ্যের রাজধানীতে বিশেষ ভাবে পুনরএকত্রিকরণের দিনটি পালন করা হয়৷ কিন্তু এবার খানিকটা ব্যতিক্রম ঘটেছে৷ নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের রাজধানী ডুসেলডর্ফকে নয়, বরং প্রাক্তন পশ্চিম জার্মানির রাজধানী বনকে বেছে নেওয়া হয়েছে উৎসবের কেন্দ্র হিসেবে৷

এবার জাতীয় দিবসের আগের দুইদিন আবার জার্মানিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন৷ দুই জার্মানির পুনরএকত্রিকরণের দিনটির উৎসবের পরিধি তাই বেড়েছে কয়েকগুণ৷ অর্থাৎ ১ থেকে ৩ অক্টোবর -- তিনদিন অবধি উৎসব চলছে বন শহরে৷ এজন্য পুরো শহরকেই সাজানো হয়েছে বিশেষভাবে৷ শহরের গুরুত্বপূর্ণ চত্বরগুলোয় বিশেষ মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করা হচ্ছে৷ পুনরএকত্রীকরণের প্রেক্ষাপট নিয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে৷ চলছে জার্মানির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রদর্শনী৷ ডয়চে পোস্ট এবং ডয়চে ভেলে'র কার্যালয়েও বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে৷

জার্মান পুনরএকত্রিকরণের প্রেক্ষাপটের দিকে খানিকটা নজর দেওয়া যাক৷ ১৯৮৯ সালের ৯ই নভেম্বর বার্লিন প্রাচীরের পতনের পর থেকে ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত ৩২৯ দিন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ দুই রাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতাদের নানা জটিল বিষয় নিয়ে আলোচনা করে অনেক সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়েছিল৷ বিশেষ করে পূবের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আমূল পরিবর্তনের কাজ মোটেই সহজ ছিল না৷ কেন্দ্রীয় শাসিত সমাজতান্ত্রিক এক রাষ্ট্রব্যবস্থা লুপ্ত হয়ে সেজায়গায় স্থাপিত হয় ফেডারেল বিকেন্দ্রিক এক কাঠামো৷ পূর্বাঞ্চলে নতুন ৫টি রাজ্যের সীমানা রচনা করতে হয়েছে৷ পূবের মুদ্রার জায়গায় চালু হয়েছে পশ্চিমের ডয়চে মার্ক৷ এই প্রক্রিয়ায় কোনোরকম ঢিলেঢালা মনোভাব দেখানোর সুযোগ ছিল না৷

জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে জার্মানির বন শহরে নানা আয়োজন করা হয়েছেছবি: dapd

পশ্চিম জার্মানির তৎকালীন চ্যান্সেলর হেলমুট কোলকে জার্মান পুর্নমিলনের প্রাণ পুরুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ ১৯৮৯ সালের ৯ই নভেম্বর হেলমুট কোল ওয়ারশ'তে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাজোভিয়েচকি'র সঙ্গে মিলিত হন৷ কোল এবং তাঁর তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স-ডিট্রিশ গেনশার তখন জার্মান-পোলিশ সম্পর্কের উন্নতীকরণের জন্য সচেষ্ট৷ ঠিক সেদিন সন্ধ্যাতেই পূর্ব বার্লিনের হাজার হাজার মানুষ ছোটেন পশ্চিম বার্লিনে যাবার সীমান্ত পারাপারের কেন্দ্রগুলির দিকে৷ তাঁরা টেলিভিশনে শুনেছেন, এখন নাকি অবাধে পশ্চিমে যাওয়া সম্ভব৷ পরদিন সকালেই কোল তাঁর রাষ্ট্রীয় সফর অসমাপ্ত রেখে বিমানযোগে বার্লিনে ফেরেন৷ সেদিন তিনি বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহ এবং বিগত দিনগুলি আমাদের কর্তব্য নির্দেশ করে দিয়েছে৷ কাজেই আমি পূর্ব জার্মানির সকলকে বলব: আপনারা একা নন৷ আমরা আপনাদের পাশে আছি৷ আমরা একই জাতি আছি এবং থাকব এবং একসঙ্গেই আমাদের স্থান৷''

সেই বক্তব্যের দু'সপ্তাহ পরেই কোল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে জার্মান সংসদে তাঁর দশ-দফা পরিকল্পনা পেশ করেন: সেই পরিকল্পনায় জার্মানির একীকরণের বিভিন্ন পদক্ষেপ বিধৃত ছিল৷ কোল যাদের চমকে দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে মিত্রশক্তিরাও ছিল৷ কেননা কোল তাঁর নিকটতম কর্মীদের ছাড়া আর কাউকে ঘুণাক্ষরেও জানাননি, যে জার্মানির একীকরণের শুভলগ্ন এসেছে বলে তিনি মনে করেন, এবং সেজন্যই তিনি তাঁর দশ-দফা পরিকল্পনা পেশ করতে চলেছেন৷ সেসময় ড্রেসডেনে পূর্ব জার্মানির প্রধানমন্ত্রী হান্স মোড্রোভ'র সঙ্গেও  বৈঠক করেন হেলমুট কোল৷ এভাবেই পুনরএকত্রীকরণের দিকে এগিয়ে যায় দুই জার্মানি৷ যা পূর্ণতা পায় ১৯৯০ সালের ৩ অক্টোবর৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম/ডয়চে ভেলে আর্কাইভ

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ