1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান পুলিশ কি বেশি নরম?

৪ ডিসেম্বর ২০১৭

জার্মানিতে যে কোনো সহায়তা পেতে সহজেই পুলিশের দারস্থ হওয়া যায়৷ পুলিশের হাতে হেনস্থা হওয়ার ঘটনা তেমন শোনা যায় না৷ বরং নরম আচরণের কারণে জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্কটা হয় বন্ধুত্বের৷ বাংলাদেশেও কি এমনটা সম্ভব?  

জার্মান পুলিশ
ছবি: Getty Images/AFP/C. Stache

‘‘রুশ সীমান্তের পুলিশের হাতে থাকে মেশিনগান, জর্মন সীমান্তের পুলিশের হাতে রবারের ডাণ্ডা'', লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘চাচা কাহিনি'-র একটি গল্পে লেখা আছে একথা৷ সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরের সময়কার জার্মানির নানা কাহিনি উঠে এসেছে কিংবদন্তি এই বাঙালি লেখকের লেখায়৷ তাঁর লেখায় জার্মান পুলিশের নরম স্বভাবের কিছুটা আভাস পাওয়া যায়৷

প্রায় শতবছর পরও জার্মানির পুলিশ বাহিনীর সেই নরম স্বভাব রয়ে গেছে বলেই মনে হচ্ছে৷ এ দেশের পুলিশ গুলি চালানোর বদলে আর যা কিছু সম্ভব, তার সবই করার চেষ্টা করে৷ এই কিছুদিন আগের কথাই ধরুন, জার্মানির হামবুর্গ শহরে অনুষ্ঠিত হলে জি টোয়েন্টি সামিট৷ বিশ্বের বিশটি শিল্পোন্নত দেশের এই বৈঠকের বিরোধিতাকারী অনেকে৷ ফলে সম্মেলনের আগেই টের পাওয়া যাচ্ছিল বড় ধরনের সহিংস প্রতিবাদ এবং দাঙ্গা হতে পারে৷

জার্মান পুলিশ তাই হামবুর্গে সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে৷ বিভিন্ন শহর থেকে হামবুর্গে জড়ো করা হয় বেশ কয়েকহাজার পুলিশ সদস্য এবং অসংখ্য গাড়ি৷ পুলিশের কৌশল ছিল যে কোনো সহিংস প্রতিবাদের স্থান ঘিরে ফেলা এবং জলকামান ও টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করা৷ পাশাপাশি গাড়িবুহ্য তৈরি করে বিক্ষোভকারীদের নির্দিষ্ট কোথাও যেতে বাধা দিয়েছে পুলিশ৷

প্রয়োজনে বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জও করেছে পুলিশ৷ তবে যেটা করেনি, তা হচ্ছে বুলেটের ব্যবহার৷ জুলাইয়ে জিটোয়েন্টি সামিট চলাকালে বিক্ষোভকারীদের দমনে যতটা সম্ভব অহিংস পথ অবলম্বন করে পুলিশ৷ এ জন্য খেসারতও দিতে হয়েছে৷ অন্তত পাঁচশ' পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে সেসময়৷

ঘটনা অবশ্য এখানেই শেষ নয়৷ সম্মেলন চলাকালে যারা আইন ভঙ্গ করেছে, তাদের অনেককে পরবর্তীতে ভিডিও এবং ছবি দেখে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ৷ তাদের কেউ কেউ এখন আছে জেলে, অনেকের হচ্ছে বিচার৷

আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে

মোদ্দাকথা হচ্ছে, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ যতই সহিংস আকার ধারণ করুক না কেন, জার্মান পুলিশ চায় না তাদের গুলিতে বা অ্যাকশনে প্রাণহানির ঘটনা ঘটুক৷ এজন্য, সন্ত্রাসী হামলা ছাড়া অন্য ঘটনায় পুলিশকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা যায় না তেমন একটা৷

প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ পুলিশ কি একইরকম পরিস্থিতিতে গুলি করা থেকে বিরত থাকতে পারে? আমার অভিজ্ঞতা বলছে, পারে না৷ বরং বিরোধী দলের উপর দমনপীড়নে সহিংসতার পথ অবলম্বনে পুলিশের বাড়তি উৎসাহই দেখা যায়৷ শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারকৃত মানুষরাও নিরাপদ নয়৷ যার উদাহরণ আমরা দেখতে পাই, অসংখ্য ক্রসফায়ারের ঘটনায়৷ সব ঘটনার গল্প প্রায় একই থাকে, শুধু নামগুলো বদলে যায়৷ এখন তো আবার চলছে গুমের সংস্কৃতি৷ ক্রসফায়ারে তাও মরদেহ মিলতো, এখন তাও মেলে না৷ ফলে বাংলাদেশে অনেকের কাছে পুলিশ এক আতঙ্কের নাম৷

বলছি না, বাংলাদেশ পুলিশের উচিত জার্মানির পুলিশের মতোই ব্যবহার করা৷ সবক্ষেত্রে সেটা হয়ত সম্ভব নয়, তবে বুলেট ব্যবহারের বদলে প্রাণঘাতি নয়, এমন সব উপায়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভের মোকাবিলার চেষ্টা বাড়ানো যেতে পারে৷ এতে করে পুলিশের উপর জনমনে আস্থা বাড়বে, তৈরি হবে বন্ধুত্বের সম্পর্ক৷

এ বিষয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ