আর কয়েকদিন পরই ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন৷ সেই নির্বাচনে জার্মানরা ভোট দেয়ার সময় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি মাথায় রাখবেন বলে এক জরিপে জানা গেছে৷
বিজ্ঞাপন
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউগভ ইউরোপের আট দেশের আট হাজার নাগরিকের উপর জরিপটি পরিচালনা করে৷ এই সময় ভোটারদের সামনে ১৬টি বিষয় উপস্থাপন করা হয়৷
সোমবার প্রকাশিত ফলাফল বলছে, ৩৪ শতাংশ জার্মান ভোটারের কাছে জলবায়ু পরিবর্তন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ এরপর আছে অভিবাসন৷
অবশ্য আট দেশের ভোটারদের বিবেচনায় অভিবাসন বিষয়টিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে৷ তার পরে আছে পরিবেশ ও জলবায়ু নিরাপত্তা৷
২০১৫ সালে ইউরোপে অনেক বেশি শরণার্থী এসেছিল৷ এখনো তা বহাল আছে, তবে সংখ্যা অনেক কমেছে৷ এ কারণে ইউরোপীয় ভোটারদের কাছে অভিবাসন বিষয়টি এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷
২০১৫ সালের আগে জার্মান সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় পরিবেশ শীর্ষে থাকলেও শরণার্থী আসা শুরুর পর তাতে পরিবর্তন আসে৷ বর্তমানে অভিবাসন ছাড়া অর্থনীতি নিয়েও আরো বেশি ভাবছে জার্মান সরকার৷
জার্মানির বন-জঙ্গল
জার্মানরা বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন৷ এভাবে অবসর সময় কাটাতে আর হাঁটতেও ভালোবাসেন তাঁরা৷ চলুন সে রকমই জার্মানির কিছু বনানির সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
জাতীয় পার্ক ইয়াসমুন্ড
ইয়াসমুন্ডের এই পার্কটি জার্মানির জাতীয় পার্কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট পার্ক৷ বিখ্যাত ব়্যুগেন দ্বীপের একেবারে উত্তরে অবস্থিত এই পার্কের সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে, করে মুগ্ধ৷ ইউনেস্কো ২০১১ সালে ইয়াসমুন্ড পার্কটিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়৷
ছবি: Scoopshot/ac-images
এলবে নদীর নিসর্গ
প্রকৃতি সৃষ্ট নিসর্গের মধ্যে অন্যতম নদী পরিবেষ্টিত চরগুলি৷ নিয়মিত বন্যা হওয়ার কারণে এই সব চরে গাছপালা এবং পশুপাখিরা আনন্দে বেঁচে থাকে৷ যেমনটা এখানে, ব্রান্ডেনবুর্গের এলবে নদীতে৷ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এলবে নদীর এই চরটিকে ১৯৭৯ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যর অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB
হারৎস
জার্মানির মধ্যভাগে অবস্থিত হারৎসের পাহাড়ি অঞ্চল শুধু জার্মানির সবচেয়ে বড় বনভূমি নয়, জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় বনাঞ্চলও বটে৷ ১৮২৪ সালে অন্যতম জার্মান লেখক হাইনরিশ হাইনে তাঁর ভ্রমণ কাহিনিতে এই অঞ্চলকে তুলে ধরেন৷ যাঁরা হাঁটতে পছন্দ করেন তাঁদের কাছে জায়গাটি খুবই প্রিয়৷
ছবি: picture-alliance/ZB
হাইনিশ জাতীয় পার্ক
জার্মানির ট্যুরিঙ্গেন রাজ্যে রয়েছে ‘বুখেন’ বা বীচ গাছে ঘন জঙ্গল৷ এই বনের কয়েকটা গাছ আবার গত ৮০০ বছর ধরে এইভাবে একেবারে সাড়ি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ এর জন্যই ইউনেস্কো ২০১১ সালে এই বনভূমিকে বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ এখানে বনবিড়ালের মতো অনেক বিরল প্রাণীও দেখা যায়৷
ছবি: DW/C. Hoffmann
স্পেসার্ট
জার্মানির দক্ষিণে অবস্থিত বাভারিয়া এবং হেসেন রাজ্যের মাঝামাঝি একটি পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত এই বনটি৷ আগে স্পেসার্ট ছিল ধনী ও বিশপদের শিকার করার জায়গা৷ শুধু তাই নয়, ঊনিশ শতকে এই জঙ্গলেই আস্তানা গড়েছিল জার্মানির কুখ্যাত ডাকাতরা৷ ১৮২৭ সাল থেকে ‘‘দাস ভির্টহাউস ইম স্পেসার্ট’’ নামে পরিচিতি লাভ করে এই ঘন বনাঞ্চল৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
ব্ল্যাক ফরেস্ট
ব্ল্যাক ফরেস্ট বা কৃষ্ণ অরণ্য নিয়ে নানা রকম ভূতের গল্প প্রচলিত আছে জার্মানিতে৷ আছে এই জঙ্গলের নামে একটি কেক-ও৷ সে জন্যই হয়ত এই কৃষ্ণ অরণ্যের জাতীয় পার্কের মর্যাদা পাওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে৷ আবার অন্যদের আশঙ্কা, জাতীয় পার্ক হলে এখান থেকে আর ফল সংগ্রহ বা গাছ কাটা যাবে না – জার্মানিতে পরিবেশ রক্ষা সত্যিই যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়!
ছবি: picture-alliance/Ronald Wittek
বাভারিয়ার জাতীয় পার্ক
রাখেল লেক বাভারিয়ার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ হ্রদের মধ্যে একটি৷ লেকটি ঘিরে প্রায় ১০৭০ মিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই বন, যেখানে গত কয়েক দশকে একটি গাছও কাটা হয়নি৷ খুবই নিরিবিলি ও শান্ত পরিবেশ এখানে৷ তাই হাঁটার জন্যও খুব উপযোগী এই অঞ্চল৷ ১৯৭০ সালে এই পার্কটিকে জার্মানির প্রথম জাতীয় পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জাতীয় পার্ক ব্যার্শটেসগাডেন
এটা আলপস পর্বতমালায় অবস্থিত জার্মানির একমাত্র জাতীয় পার্ক৷ পার্কটি উচ্চ পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থানের কারণে পর্যটকরা এখানে এলে বিরল প্রাণীর দেখা পান৷ তাই তো পক্ষীপ্রেমী আর বন্যপ্রাণী গবেষকদের জন্য এটা দারুণ একটা জায়গা৷
ছবি: picture-alliance/Thomas Muncke
8 ছবি1 | 8
সম্প্রতি জার্মানির অন্যতম পুরনো বন ‘হামবাখ ফরেস্ট' কেটে সেখানে কয়লাখনির জন্য জায়গা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ এতে পরিবেশ রক্ষায় একসময় বিশ্বব্যাপী জার্মানির যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিল সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
ইউগভ-এর জরিপে ভোটারদের কাছে তাঁদের নিজ দেশের ইইউ সদস্যপদ কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ এতে অধিকাংশ ভোটার ইইউতে থাকার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখেছেন৷ তবে এ ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সমর্থন এসেছে জার্মান ও পোলিশদের কাছ থেকে৷
আগামী ২৩ থেকে ২৬ মে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷