1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাবেক চ্যান্সেলর ভিলি ব্রান্ডট

মারুফ আহমদ২০ মে ২০১৩

১৯৬১ সালে পূর্ব জার্মানি বার্লিন প্রাচীর তৈরি করে বিশ্বকে চমকে দিয়ে৷ এই প্রাচীর হয়ে ওঠে জার্মানি তথা ইউরোপ বিভক্তির কুখ্যাত প্রতীক৷ শুরু হয় শীতল যুদ্ধ৷ তবে সে সময় যিনি অসাধারণ দূরদর্শিতার পরিচয় দেন, তিনি ভিলি ব্রান্ডট৷

ছবি: picture-alliance/akg-images

জার্মান রাজনীতির অঙ্গনে এক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ভিলি ব্রান্ডট৷ তদানীন্তন পশ্চিম জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি তাঁর ‘নয়ে অস্টপলিটিক' বা নতুন পূর্ব নীতির মধ্য দিয়ে জিডিআর বা পূর্ব জার্মানির সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন এবং সেই সাথে পূর্ব ইউরোপীয় আরোও কিছু কমিউনিস্ট দেশ যেমন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, পোল্যন্ড ও চেকোস্লোভাকিয়ার সাথে জার্মানির সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন৷

ছবি: ullstein bild/Alex Waidmann

আসল নাম: হ্যারবার্ট অ্যারনস্ত কার্ল ফ্রাহম

জন্ম তারিখ: ১৮ই ডিসেম্বর, ১৯১৩

জন্মস্থান: ল্যুবেক, জার্মানি

মৃত্যু: ৮ই অক্টোবর, ১৯৯২, উঙ্কেল, জার্মানি

পেশা: রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক 

বাবা: জন ম্যোলার

মা:  মার্থা ফ্রাহম

স্ত্রী: কার্লোটা থোর্কিল্ডসেন (১৯৪১-৪৮)

      রুথ হানসেন (১৯৪৪-৮০)

      ব্রিগিতে সেবাখার (১৯৮৩-১৯৯২)

সন্তান: নিনিয়া, পেটার, লার্স, মাথিয়াস

উল্লেখযোগ্য অর্জন: জার্মান চ্যান্সেলর, ১৯৬৯-১৯৭৪,  

                             এসপিডি সভাপতি ১৯৬৪-১৯৮৭              

অনেকেই এই নীতি সোভিয়েত আগ্রাসনের স্বীকৃতি বলে ভুল বুঝেছিলেন৷ তাঁর এই নীতি ছিল দেশ ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক শান্তির সম্পর্ক গড়ে তোলা৷ উল্লেখ্য ১৯৭০ সালে রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি গিয়েছিলেন পোল্যান্ডে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন জার্মান অধিকৃত পোল্যান্ডের ‘ওয়ারশো অভ্যুত্থান' নৃশংসভাবে দমন করেছিল নাৎসি সেনাবাহিনী৷ নিহত অসংখ্য মানুষের উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মৃতিসৌধের সামনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নতজানু হয়ে, মৃতদের প্রতি সম্মান জানান ব্রান্ডট৷ এক বিরল উদাহরণ৷ ১৯৭১ সালে এই শান্তি প্রচেষ্টার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি৷

পোল্যান্ডে একটি স্মৃতিসৌধের সামনে নতজানু ভিলি ব্রান্ডটছবি: ddp images/AP Photo

জন্মস্থান ল্যুবেকে মায়ের সাথে বড় হন হ্যারবার্ট অ্যারনস্ত কার্ল ফ্রাহম৷ স্কুল শিক্ষার পর ১৭ বছর বয়সে জার্মান সোশ্যাল ডেমক্রেটিক পার্টি বা এসপিডি'তে যোগ দেন তিনি৷ ১৯৩৩ সালে হিটলার ও তাঁর নাৎসি সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এসপিডি নিষিদ্ধ হয়ে যায়৷ বহু এসপিডি সদস্য নিহত বা গ্রেপ্তার হন৷ গা ঢাকা দেন ব্রান্ডট এবং পালিয়ে আসেন নরওয়েতে৷ গ্রহণ করেন তাঁর ছদ্মনাম ভিলি ব্রান্ডট৷ পরবর্তীকালে তিনি এই নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন বিশ্ব দরবারে৷ নরওয়েতে সাংবাদিক হিসেবে প্রকাশ পায় তাঁর অসাধারণ প্রতিভা৷ একাধিক পত্র-পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেন তিনি৷ নাৎসি সরকারের বিরোধিতা সহ আরোও বহু গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি প্রকাশ পায়৷ সেই সাথে রাজনৈতিক সংগঠনের সাথেও জড়িত হন তিনি৷ ৩৮ সালে জার্মান নাৎসি সরকার তাঁর জার্মান নাগরিকত্ব বাতিল ঘোষণা করে৷ তবে ১৯৪০ সালে নরওয়ের নাগরিকত্ব লাভ করেন তিনি৷

যুদ্ধশেষে ১৯৪৬ সালে ব্রান্ডট ফিরে আসেন বার্লিনে৷ কিছুকাল নরওয়ে সরকারের জন্য কাজ করার পর তিনি যোগ দেন এসপিডি'তে এবং সেই সাথে ফিরে পান তাঁর জার্মান নাগরিকত্ব৷ তারপর থেকেই শুরু হয় ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবন৷ প্রথমে পশ্চিম বার্লিনের মেয়র, পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ১৯৬৯ সালে পশ্চিম জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচিত হন তিনি৷ খুব জনপ্রিয় চ্যান্সেলর ছিলেন ভিলি ব্রান্ডট৷ ১৯৭৪ সালে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মী জিডিআর'এর গুপ্তচর হিসেবে অভিযুক্ত হওয়ার কারণে ব্রান্ডট পদত্যাগ করেন৷ কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে ১৯৯২ সালে তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পুরোপুরি সক্রিয় ছিলেন৷ উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের মধ্যে আরোও ভালো সম্পর্কের আন্তর্জাতিক মুখপাত্র ছিলেন তিনি৷ আশির দশকে তাঁর উত্তর-দক্ষিণ রিপোর্ট, যা ‘ব্রান্ডট রিপোর্ট' হিসেবে খ্যাত, সেখানে দরিদ্র দক্ষিণ গোলার্ধের প্রতি আরও বেশি করে সাহায্যের হাত বড়িয়ে দেয়ার জন্য ধনী  উত্তরের প্রতি জোরালো আহবান জানান তিনি৷

মৃত্যুর ২০ বছর পরও জার্মান রাজনীতির বহু ক্ষেত্রেই যেন তাঁর উপস্থিতি অনুভব করা যায়৷ জার্মান রাজনীতির অঙ্গনে তাই আজও এক আদর্শ হয়ে আছেন ভিলি ব্রান্ডট৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ