জার্মান সমাজের অংশ হতে পারা সিরীয়দের থাকতে দেওয়া উচিত: স্পান
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
জার্মানির বিরোধী দল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউ এর নেতা ইয়েন্স স্পান বুধবার ডিডাব্লিউকে বলেন, জার্মানিতে বাস করা যে সিরীয়রা জার্মান সমাজের অংশ হতে পেরেছেন তাদের জার্মানিতে থাকার আমন্ত্রণ জানানো উচিত৷
বিজ্ঞাপন
‘‘আর যে সিরীয়দের আর আমাদের দেওয়া নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই তাদের চলে যাওয়া উচিত,'' বলে মন্তব্য করেন স্পান৷ তিনি বলেন, ‘‘যারা আসলে ইন্টিগ্রেটেড হয়েছেন, যারা তাদের ও পরিবারের খরচ মেটাতে পারেন, যারা ভাষাটা বলেন, আর যারা আমাদের জার্মান সমাজের অংশ, তাদের থাকার আমন্ত্রণ পাওয়া উচিত৷''
জার্মানিতে ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে৷ তার আগে সিডিইউ দলের অভিবাসন নীতি নিয়ে ডিডাব্লিউর সঙ্গে কথা বলেন তিনি৷
যে সিরীয়রা স্বেচ্ছায় সিরিয়া ফিরে যেতে আগ্রহী তাদের এক হাজার ইউরো করে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন স্পান৷ বুধবার সাক্ষাৎকারের সময় তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যারা সিরিয়া ফিরে যেতে চান তাদের দেশ পুনর্গঠনের কাজে সহায়তা করতে চায় সিডিইউ৷
জার্মানিতে ৪ লাখ ৩০ হাজার ডে কেয়ার-এর ঘাটতি রয়েছে৷ শিশু পরিচর্যা কর্মীও প্রয়োজনের তুলনায় এক লাখ ২০ হাজার কম৷ কোলনের কিছু কিন্ডারগার্টেন তাই অভিবাসী কর্মী নিয়োগ করে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Oliver Pieper/DW
জার্মানিতে শিশু পরিচর্যায় সংকট
জার্মানিতে বর্তমানে ৪ লাখ ৩০ হাজার ডে কেয়ারের অভাব রয়েছে। একটি জরিপে ১ লাখ ২৫ হাজার কর্মীর অভাবের কথাও বলা হয়েছে। এই সংকট জার্মানির পশ্চিম অংশে, বিশেষ করে নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়াতে বেশি তীব্র৷
ছবি: Oliver Pieper/DW
শিশু পরিচর্যা সংকটের অর্থনৈতিক প্রভাব
শিশু পরিচর্যা কর্মীর অভাব জার্মান অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলছে। স্টেপস্টোনের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, শিশু পরিচর্যা সংকটের কারণে জার্মানির প্রতি বছর ২৩ বিলিয়ন ইউরোর ক্ষতি হচ্ছে। প্রতি বছর ১ দশমিক ২ বিলিয়ন কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের কাজের সময় কমাতে বাধ্য হচ্ছে।
ছবি: K. Schmitt/Fotostand/IMAGO
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
শিশু পরিচর্যা খাতে কর্মী-সংকটের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও রয়েছে। সাবেক পূর্ব জার্মানিতে নারীদের কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য শক্তিশালী শিশু পরিচর্যা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল, কিন্তু পশ্চিম জার্মানি তেমন কোনো উদ্যোগ ছিল না। জার্মানির পশ্চিমাংশে তাই শিশু পরিচর্যা পরিষেবার অভাব এখনো বেশি।
ছবি: Ebrahim Noroozi/PA/picture alliance
দ্বিভাষিক ডে কেয়ার
সমস্যার সমাধানে কোলনের একটি কিন্ডারগার্টেন বাইলিঙ্গুয়াল, অর্থাৎ দ্বিভাষিক শিক্ষা পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। এই সেন্টারটি স্প্যানিশ এবং জার্মান ভাষায় শিক্ষা দেয় এবং শিশুদের গান গাইয়ে এবং বিশেষ ধরনের খেলাধুলার মাধ্যমে দ্বিতীয় ভাষা শিখতে সহায়তা করে।
রস্টকের এক নার্সারি স্কুলের শিক্ষক কাতজা রস ‘এভরি চাইল্ড কাউন্টস’ নামে এক গণস্বাক্ষরতা অভিযান শুরু করেছেন৷ এ পর্যন্ত ২ লাখ ২০ হাজার ১৮০ জনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তিনি। রস এবং তার সহযোদ্ধারা শিশু পরিচর্যা পেশাদারদের জন্য ভালো কাজের পরিবেশ, ভাষা শিক্ষা, শিশু পরিচর্যার স্থান বাড়ানোসহ নানা দাবি আদায়ের জন্য লড়ছেন৷
ছবি: Lars Heidrich/Funke Foto Services/IMAGO
অভিবাসী কর্মীদের জন্য সুযোগ
সিঞ্চিয়া মালকা-বুচহোলজ ২০১৩ সালে বাইলিঙ্গুয়াল শিক্ষার উদ্যোগ শুরু করেছিলেন। এখন তিনি সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি ডিরেক্টর। তিনি বলেন, ‘‘এই বাইলিঙ্গুয়াল পদ্ধতি শুধুমাত্র শিশুদের জন্য নয়, বরং বিদেশ থেকে প্রশিক্ষিত শিশু পরিচর্যা কর্মীদের জন্যও নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে৷’’
ছবি: Oliver Pieper/DW
6 ছবি1 | 6
অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহির্সীমান্ত বন্ধের সম্ভাবনা নিয়েও স্পানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল৷ উত্তরে তিনি বলেন, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে এমন একটি বার্তা প্রচলিত আছে যে, ইইউতে কোনোভাবে পৌঁছালেই থাকা যায় এবং তখন থেকেই সুবিধা পাওয়া যায়৷ এই বার্তা যে ঠিক নয়, তা প্রতিষ্ঠিত করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন স্পান৷ ‘‘আমরা যদি এই বার্তা যে ঠিক নয়, তা প্রমাণ করতে না পারি, তাহলে অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না,'' বলেন তিনি৷
তবে স্পান বলেন, সংকটপূর্ণ এলাকারশরণার্থীদের জন্য ইইউর সীমান্ত সবসময় খোলা রাখা উচিত৷ তবে সংখ্যাটি সীমিত হতে হবে এবং প্রবেশের শর্ত জাতিসংঘের সঙ্গে মিলে নির্দিষ্ট করা উচিত বলে মনে করেন তিনি৷