কোস্টারিকায় পাখিদের জন্য গাছ লাগানোর কর্মসূচি শুরু হয়েছে৷ জার্মানির আংশিক সহায়তায় চালু হওয়া ঐ প্রকল্পে কাজ করছেন স্থানীয় নারীরা৷ পরিবেশ রক্ষার জন্য কাজ করতে পেরে তাঁরা বেশ খুশি৷
বিজ্ঞাপন
পাখিদের জন্য গাছ লাগানো কর্মসূচি
03:22
কোস্টারিকার বায়ো-করিডোরের পশ্চিম উপকূলে পুনর্বনায়নের কাজ চলছে৷ কাজ চলছে ইকো-টুরিজমের জন্য পরিচিত ভেনাডো দ্বীপেও৷ দ্বীপের বাসিন্দা আনা রেইয়েস পর্যটকদের বিশেষ এক প্রকল্প ঘুরিয়ে দেখান৷ প্রকল্পের নাম ‘পারাইসো এস্কোনদিদো' বা লুকানো স্বর্গ৷
এই পুনর্বনায়ন প্রকল্পে লাল ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানো হয়েছে৷ প্রকল্পের কর্মী ও গাইড আনা রেইয়েস বলেন, ‘‘পুনর্বনায়ন প্রকল্পে এই গাছটিই লাগানো হচ্ছে, কারণ, এটি বেশ ভালোভাবে বেড়ে উঠে৷''
নারীরা তাদের ঘরবাড়ি রক্ষা করতে চায়৷ যদি সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যায় তাহলে ম্যানগ্রোভ ক্ষয়ে যাওয়া আর উঁচু ঢেউয়ের হাত থেকে উপকূলকে রক্ষা করবে৷ আরেক কর্মী মেলিসা পেরালটা জানান, ‘‘প্রকল্পে আমরা কয়েকজন নারী আর একজন পুরুষ কাজ করছি৷ এটা একটা পারিবারিক প্রকল্পের মতো৷ এটা সহজ কাজ নয়৷ পানির বড় বড় পাত্র তুলতে হয় আমাদের৷ তবে এটা ভালো প্রকল্প৷ পরিবেশ রক্ষার জন্য আমরা সবাই কিছু করতে চাই, কেননা, অনেকদিন ধরে ম্যানগ্রোভ কাটা হচ্ছে৷ অনেক প্রাণীর আশ্রয়স্থল হচ্ছে এই ম্যানগ্রোভ৷ তাই আমরা যত বেশি সম্ভব ম্যানগ্রোভ লাগাতে চাই৷''
সুন্দরী বন সুন্দরবন
বঙ্গোপসাগরের উপকূল ঘেঁষে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবন৷ বাংলাদেশ ও ভারতজুড়ে বিস্তৃত এ বনের মোট আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার৷
ছবি: DW/M, Mamun
বিশ্ব ঐতিহ্য
বাংলাদেশে সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ৬০১৭ কিলোমিটার৷ আয়তনের প্রায় ৭০ ভাগ স্থল আর ৩০ ভাগ জল৷ পুরো সুন্দরবনের ভেতরে জালের মতো অসংখ্য নদী আর খাল রয়েছে৷ জীববৈচিত্রে ভরপুর সুন্দরবনকে ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷ প্রায় ৪০০ প্রজাতির পাখির বসবাস এই বনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
বাঘের পায়ের ছাপ
সুন্দরবনের কটকা বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য৷ সেখানেই দেখা মেলে বেঙ্গল টাইগারের পায়ের ছাপ৷ এ বনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ডোরাকাটা বাঘ৷ জলবায়ুর পরিবর্তন, খাদ্যের অভাব আর চোরা শিকারসহ নানা কারণে দিন দিন এখানে কমে আসছে বাঘের সংখ্যা৷ বন বিভাগের মতে, সুন্দরবনে বর্তমানের বাঘের আনুমানিক সংখ্যা ৫০০৷ ২০০৪ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাঘশুমারি অনুযায়ী এ সংখ্যা ছিল ৪৪০৷
ছবি: DW/M, Mamun
অনিন্দ্য সুন্দর চিত্রা হরিণ
সুন্দরবনের কটকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চিত্রা হরিণ৷ সুন্দরবনের সর্বত্রই এ প্রাণীটির দেখা মেলে৷ চিত্রা আর মায়া – এ দুই ধরণের হরিণ আছে সুন্দরবনে৷ তবে সবচেয়ে বেশি আছে চিত্রা হরিণ৷ ৩০ হাজারেরও বেশি চিত্রা হরিণের বসবাস সুন্দরবনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
যার নামে সুন্দরবন
সুন্দরবনের অধিকাংশ গাছই চির সবুজ ম্যানগ্রোভ শ্রেণির৷ এ বনের প্রধান বৃক্ষ সুন্দরী৷ এ গাছের নামেই বনের নামকরণ৷ এছাড়া এই বনে ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ আছেস যার মধ্যে ১৭টি ফার্ন জাতীয়, ৮৭টি একবীজপত্রী ও ২৩০ প্রজাতি দ্বিবীজপত্রী৷ সারা পৃথিবীজুড়ে যে ৫০ প্রজাতির প্রকৃত ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ আছে, তার ৩৫ প্রজাতিই পাওয়া যায় বাংলাদেশের সুন্দরবনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ
প্রতিবছর প্রচুর পর্যটক আসেন সুন্দরবন ভ্রমণে৷ ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১ লাখ ২০ হাজার ৪১৪ জন পর্যটক বেড়াতে এসেছেন এখানে, যাঁদের মধ্যে বিদেশি পর্যটক ৩ হাজার ৮৫৪ জন৷
ছবি: DW/M, Mamun
বিচিত্র সাপ
শরণখোলা রেঞ্জের একটি জঙ্গলে গ্রিন ক্যাট স্নেক বা সবুজ ফনিমনসা সাপ৷ কয়েক প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ ছাড়াও সুন্দরবনে দেখা যায় কিং কোবরা বা রাজগোখরা, রাসেলস ভাইপার, পিট ভাইপার, পাইথন, ব্যান্ডেড ক্রেইড ইত্যাদি৷
ছবি: DW/M, Mamun
কুমির দর্শন
জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ – সুন্দরন নিয়ে এরকম প্রবাদ বহুকালের৷ সুন্দরবনের হারবাড়িয়া এলাকার একটি খালে লোনা জলের এই কুমিরটিকে দেখা গিয়েছিল৷ সুন্দরবনের মহা বিপন্ন এ প্রাণীটি আকারে সাত মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়৷ লোনা পানির কুমিরের গড় আয়ু ১০০ বছরের মতো৷
ছবি: DW/M, Mamun
হরিণের বন্ধু
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে তোলা বানরের ছবি৷ সুন্দরবনে চিত্রা হরিণের পর সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এ প্রাণীটি৷ সুন্দরবনে বানরকে হরিণের সুহৃদ বলা হয়৷ গাছের ডাল ভেঙ্গে হরিণকে পাতা খেতে বানর সহায়তা করে থাকে৷ এছাড়া বাঘের আগমনের খবরটিও সবার আগে হরিণকে দেয় বানর৷
ছবি: DW/M, Mamun
জঙ্গল উপভোগ
সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্যের ছোট খালে ঘুরে জঙ্গল উপভোগ করছেন পর্যটকরা৷ সকাল এবং বিকেলে এসব খালে বেড়ানোর সময় অনেক বন্য প্রাণীর দেখা মেলে৷
ছবি: DW/M, Mamun
ভ্রমণতরী
সুন্দরবনের গহীন অরণ্যে একটি বেসরকারি সংস্থার ভ্রমণতরী৷ সুন্দরবন দেখতে আসা বিদেশি পর্যটকদের বেশির ভাগই আসেন বেসরকারি ভ্রমণ সংস্থাগুলোর সহায়তায়৷ এক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও উদ্যোগেরও অভাব অনেক৷
ছবি: DW/M, Mamun
পণ্যবাহী জাহাজের কারণে ডলফিনের মৃত্যু
সুন্দরবনের ভেতরে জঙ্গল ঘেঁষে চলাচল করছে বড় বড় পণ্যবাহী জাহাজ৷ এ সব জাহাজের উচ্চ শব্দ যেমন বন্যপ্রাণীদের বিরক্তির কারণ হয়, তেমনি এসব জাহাজের সৃষ্ট ঢেউ ভাঙন ধরায় সুন্দরবনে৷ এ সব জাহাজের প্রোপেলারের আঘাতে প্রায়ই ডলফিনেরও মৃত্যু ঘটে৷
ছবি: DW/M, Mamun
অপরূপ সূর্যাস্ত
সুন্দরবনের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে সূর্যাস্তের ছবি তুলছেন এক পর্যটক৷
ছবি: DW/M, Mamun
রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
সুন্দরবনের কোল ঘেঁষেই এগিয়ে চলছে রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ৷ এতে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হয় বলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংরক্ষিত বনভূমি ও মানব বসতির ১৫-২০ কিলোমিটারের মধ্যে এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেয় না৷ অথচ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সুন্দরবনের সংরক্ষিত ও স্পর্শকাতর স্থানের দূরত্ব মাত্র চার কিলোমিটার৷
ছবি: DW/M, Mamun
13 ছবি1 | 13
কোস্টারিকার অনেক প্রতিষ্ঠান এই ধরনের পুনর্বনায়ন প্রকল্পে সহায়তা করছে৷ তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে জার্মানির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, জিআইজেড৷ সঙ্গে আছে আরেকটি জার্মান কোম্পানি যারা ইউরোপে রপ্তানির জন্য অর্গানিক চিংড়ির চাষ করছে৷ তবে সাগরে নয়, অ্যাকুয়াকালচার ব্যবস্থায়৷ কোস্টারিকার সরকারের কঠোর নীতিমালার আওতায় চিংড়ি চাষ হচ্ছে৷ এই জায়গায় চিংড়ি চাষ করে জার্মানিতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেতে কোম্পানিটিকে পুনর্বনায়ন প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিতে হয়েছে৷
অক্টোবর মাস থেকে ‘থ্রি-ওয়াটলেড বেলবার্ড' নামের এই পাখিগুলোকে পশ্চিম উপকূলে দেখা যায়৷ এরপর তারা ম্যানগ্রোভ অঞ্চল হয়ে মন্টেভের্ডের ক্লাউড ফরেস্টে চলে যায়৷
সংরক্ষিত এলাকাগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনের কাজটি বিশাল৷ বিশ্বে এই ধরণের প্রকল্প এটাই প্রথম৷
জেডএইচ/এসিবি
বহুগামী পাখিদের কথা
পাখিদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই একগামী হয়ে থাকে৷ অর্থাৎ বাকি দশ শতাংশের স্বভাব একটু ভিন্ন৷ ছবিঘরে জেনে নিন এমন কয়েকটি পাখির কথা৷
ছবি: Imago
সঙ্গী যখন ঘুমে, উনি তখন খোঁজে
দেখতে সুন্দর এই ব্লুটিট পাখির স্বভাব একটু উড়ু-উড়ু৷ সকালবেলায় পুরুষ সঙ্গীটি যখন ঘুমে বিভোর তখন তিনি আশেপাশে বেরিয়ে পড়েন৷ তখন যদি অন্য কোনো পুরুষ পাখিকে গান গাইতে দেখেন তাহলে কিছুক্ষণের জন্য তার সঙ্গে একটু, মানে একটুখানি আনন্দ করে নেন!
ছবি: picture alliance/Arco Images GmbH
রাজহাঁসের কথা
ছবিই বলে দিচ্ছে রাজহাঁস এমনিতে দীর্ঘদিনের জন্য সম্পর্কে জড়াতে আগ্রহী৷ কিন্তু মাঝেমধ্যে যে ‘বিবাহবহির্ভূত’ সম্পর্কে জড়ানোর অভ্যাস কারও কারও নেই সেটা কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না!
ছবি: Otto Durst/Fotolia
ঝাঁক পছন্দ তাদের
তোতাপাখিরা সবসময় এক ঝাঁক হয়ে থাকতে পছন্দ করে৷ ঝাঁকের মধ্যেই এই পাখিরা একজন আরেকজনকে বেছে নিয়ে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলে৷ উদ্দেশ্য থাকে অনেকদিন একসঙ্গে থাকার৷ কিন্তু তারপরও রাজহাঁসের মতোই তাদেরও কারও কারও এক-আধটু মনে স্বাদ জাগে অন্যকিছু করার!
ছবি: Fotolia/H.Lange
ধারণা ছিল ভুল
একসময় বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল সারস পাখিরা বোধ হয় একগামী হয়ে থাকে৷ কিন্তু পরে জানা গেছে, সেটি সত্যি নয়৷ মাইগ্রেশনের সময় তারা নাকি অন্য কোনো সঙ্গীকে সঙ্গে নিতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Rössler
সব পেঙ্গুইন এক নয়
ছবিতে গালাপাগোস পেঙ্গুইনদের দেখতে পাচ্ছেন৷ মনে হচ্ছে যেন তারা একে অপরের জন্যই জন্মেছে৷ কিন্তু আসলেই কি তাই? উত্তর – হয়ত কিংবা হয়ত নয়৷ কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, রকহপার পেঙ্গুইন একগামী হয়ে থাকে৷ অর্থাৎ এই জাতের পেঙ্গুইন জোড়াদের একজন আরেকজনের চেয়ে কয়েক হাজার মাইল দূরে থাকলেও একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে৷