জার্মান সেনাবাহিনী সংস্কারের অঙ্গীকার করলেন মন্ত্রী
১১ মে ২০১৭
চরম ডানপন্থি সেনাবাহিনীর দুই লেফটেন্যান্টকে গ্রেপ্তারের পর জার্মান সামরিক বাহিনীতে সংস্কার আনার অঙ্গীকার করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লায়েন৷ তবে এতেও সন্তুষ্ট নন বিরোধী রাজনীতিকরা৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার জার্মান সংসদে বিরোধী রাজনীতিকদের তোপের মুখে পড়েন প্রতিরক্ষামন্ত্রী৷ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালিয়ে সেই দোষ শরণার্থীদের উপর চাপানোর পরিকল্পনা করছিলেন বলে ঐ দুই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে৷ তাঁরা হলেন ফ্রাংকো এ. এবং মাক্সিমিলিয়ান টি.৷ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফ্রাংকো সিরীয় শরণার্থী হিসেবে জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন৷ তাঁর সেই আবেদন গৃহীতও হয়েছিল৷ অবশেষে ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েনার বিমানবন্দরের ভেতরে টয়লেটে বন্দুক লুকাতে গিয়ে ধরা পড়েন ফ্রাংকো৷ এরপরই সেনাবাহিনীতে চরম ডানপন্থি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ সদস্য থাকার বিষয়টি জার্মানিতে বেশ আলোচিত হয়ে ওঠে৷
ফ্রাংকোর গ্রেপ্তারের পর তদন্তের এক পর্যায়ে মাক্সিমিলিয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ তারপর জানা যায়, তাঁরা সেনাবাহিনীর অস্ত্র চুরি করে তৃতীয় এক ব্যক্তির বাসায় রেখেছেন৷ সেই সূত্রে মাটিয়াস এফ. নামের এক শিক্ষার্থীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
শুধু তাই নয়, জার্মানির এক সেনা ব্যারাকে নাৎসি আমলের স্মৃতিবিজড়িত কিছু জিনিসও পাওয়া গেছে৷
জার্মান সেনাবাহিনীর যত কেলেঙ্কারি
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে, ২০১৭ সাল ভয়ঙ্কর, বিভৎস, ভয়াবহ এবং খারাপ বছর৷ নিজের সেনাবাহিনীকে সমর্থন না করে বরং তাদের কেলেঙ্কারি তুলে ধরে ক্ষোভের মুখে পড়েছেন তিনি৷ জেনে নিন জার্মান সেনাবাহিনীর কেলেঙ্কারির কথা৷
ছবি: picture alliance/akg-images
এক ভুয়া শরণার্থী
সিরীয় শরণার্থী সেজে এক জার্মান সেনা কর্মকর্তা সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল৷ সমান্তরাল এক দ্বিতীয় জীবন শুরু করেছিলেন ফ্রাংকো৷ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সিরীয় শরণার্থী হিসেবে নথিভুক্ত হন তিনি৷ তার লক্ষ্য ছিল শরণার্থীদের উপর হামলার দোষ চাপানো৷ ২০১৪ সাল থেকেই ফ্রাংকো’র ডানপন্থি আচরণের কথা জানতেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা৷ এাই ফ্রাংকো ধরা পড়ার থেকে জার্মান সেনাবাহিনিকে শুরু হয় বিতর্ক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Rumpenhorst
বাড রাইশেনহাল পর্বতে রেঞ্জার ইউনিটে হয়রানি
ডানপন্থি সন্ত্রাসী আচরণের অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য সেনাবাহিনী বর্তমানে ২৭৫ টি মামলার তদন্ত করছে৷ চলতি বছরের মার্চে জনগণ একজন ল্যান্স করপোরালের কথা জানতে পারেন, যিনি কয়েক মাস ধরে বাভেরিয়া পর্বতের রেঞ্জার ইউনিটে হয়রানির শিকার হয়েছেন৷ নির্যাতিত ব্যক্তি জানিয়েছেন, ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে যৌন নীপিড়ন করা হয়েছে৷ এ ঘটনার জন্য ১৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
নারীদের পোল ড্যান্সে বাধ্য করা
প্রতিরক্ষামন্ত্রী সবচেয়ে বড় যে কেলেঙ্কারির কথা বলেছেন তাহলো, ফুলেনডর্ফে স্টাওফের সেনাঘাঁটির ভয়াবহ ঘটনা৷ জানুয়ারিতে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের নগ্ন করা ও যৌনতা প্রকাশ পায় এমন আচরণ করতে বাধ্য করেছিলেন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, সেগুলো ভিডিও করা হয়েছিল৷ সদ্য নিয়োগ পাওয়া নারীদের ‘এনট্র্যান্স পরীক্ষা’র অংশ হিসেবে পোল ড্যান্সে বাধ্য করা হয়েছিল৷ একারণে সেনাবাহিনীর শীর্ষ প্রশিক্ষক কমান্ডারকে বরখাস্ত করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Warnack
ডানপন্থি সন্ত্রাসবাদের অনেক ঘটনার তদন্ত চলছে
জার্মান সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টারি কমিশনারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সাল জার্মান সেনাবাহিনীর জন্য মোটেই ভালো বছর ছিল না৷ ডানপন্থি সন্ত্রাসবাদ বা ‘জার্মানির মুক্ত গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক চেতনার লঙ্ঘন’ এর মোট ৬০টি অভিযোগের ঘটনা পাওয়া গেছে৷ এমনকি সেনারা নিজেদের নাৎসি চেতনা নিয়ে একে অপরের সাথে আলোচনা করে, নাৎসি সংগীত শোনে ও নাৎসি স্যালুটও দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Sauer
জাহাজে মৃত্যু
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার আগ পর্যন্ত এসব কেলেঙ্কারি নিয়ে কোনো মাথা ঘামায়নি সেনাবাহিনী৷ ২০১০ সালের একটি ঘটনা জনগণের মনোযোগ আকর্ষণ করে, তা হলো, গর্ক ফক-এ নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণের সময় ২৫ বছরের এক সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা৷ প্রশিক্ষণের সময় ঐ নারী জাহাজের পাল থেকে নীচে পড়ে মারা যান৷ ফলে অন্যান্য ক্যাডেটরা পালে উঠতে আর রাজি হননি৷ পরে ঐ প্রশিক্ষণ বাতিল করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Rehder
জার্মান সেনাবাহিনীর জন্ম
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি সেনাবাহিনী রাখার পক্ষে ছিল না৷ পশ্চিম জার্মানিতে সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৫ সালে৷ পুনরেকত্রীকরণের পর পূর্ব জামানির সেনাবাহিনী থেকে ২০ হাজার সদস্য নেয় কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী৷ ১৯৯৯ সালে যখন জার্মান সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক সংঘাতে (কসোভো যুদ্ধ) জড়িয়ে পড়ে, তখন এতে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়৷ এর আগ পর্যন্ত কেবল বিদেশে শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের অংশগ্রহণ ছিল৷
ছবি: picture alliance/akg-images
বাধ্যতামূলক সেবা নয়
বর্তমানে জার্মান সেনাবাহিনীতে সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২০০৷ ২০১৭ সালের মার্চের হিসেব অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর মোট সদস্যের ১১.৪ শতাংশ নারী৷ ২০১১ সাল পর্যন্ত জার্মান সেনাবাহিনীতে পুরুষদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক ছিল৷ এই মেয়াদকাল ছিল ৯ থেকে ১৮ মাস৷ বর্তমানে তরুণদের সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়৷ তবে সাম্প্রতিক কেলেঙ্কারির কারণে এই আবেদনে তাদের সাড়া দেয়াটা সত্যিই কঠিন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Sauer
7 ছবি1 | 7
নতুন বিষয়?
জার্মান সেনাসদস্যদের মধ্যে চরম ডানপন্থিদের উপস্থিতির বিষয় নিয়ে এখন আলোচনা চললেও বিষয়টি আসলে নতুন নয়৷ ফ্রাংকো যে এই ভাবধারায় উদ্ধুদ্ধ সেটি আগেই জানা ছিল৷ তাঁর মাস্টার্স থিসিসের বিষয়ও সেরকম ধারণা দিয়েছে৷ কিন্তু তারপরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করার বিষয়টি নিয়ে এখন বেশ সমালোচনা হচ্ছে৷
জার্মান সংসদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক কমিটির প্রধান রাইনার আরনোল্ড বলেন, ‘‘দু’জনেই (ফ্রাংকো ও মাক্সিমিলিয়ান) রাডারের মধ্যে ছিল, দুইজনের বিষয়ই জানা ছিল এবং (কর্তৃপক্ষ) দু'জনের বিষয়টিই উপেক্ষা করে গেছে৷ এদের কাজ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করার বিষয়টি বড় ধরনের ভুল ছিল৷’’
সাবেক সেনাসদস্য ও বর্তমানে নিও-নাৎসি হিসেবে পরিচিত ক্রিস্টিয়ান ভাইসগ্যার্বার জার্মানির সরকারি টেলিভিশনকে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘‘সেনাবাহিনীতে এত জাতীয়তাবাদী-রক্ষণশীল ও বর্ণবাদী মানুষ আছে যে, হঠাৎ করে এখন সবাই একে যে নতুন বিষয় বলে ভাবছে, তা আমার কাছে হাস্যকর মনে হচ্ছে৷’’
ভাইসব্যার্গারের কথার প্রমাণ মেলে জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এপ্রিল মাসের একটি প্রতিবেদনে৷ সেখানে বলা হয়েছে, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বর্তমানে ২৭৫ জন সেনার বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে, যাদের বিরুদ্ধে ‘চরম-ডানপন্থি কার্যকলাপ’এ জড়িত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অঙ্গীকার
ফন ডেয়ার লায়েন বলেন, সেনাবাহিনীতে চরম ডানপন্থি ভাবধারার সদস্যদের উপস্থিতির প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীতে আমূল সংস্কার আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ এর আওতায় সব সেনাদের ‘রাজনৈতিক শিক্ষা’য় শিক্ষিত করে তোলা হবে৷ ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা সবার নজরে আনার বিষয়টি ‘আরও দ্রুত ও দক্ষ উপায়ে’ করা হবে৷ সেনাবাহিনীর ‘ট্র্যাডিশন ডিক্রি’ আবার নতুন করে লেখা হবে৷ সবশেষ ১৯৮২ সালে এটি হালনাগাদ করা হয়েছিল৷ জার্মান সেনাবাহিনীর ইতিহাস কীভাবে দেখা উচিত তা ট্র্যাডিশন ডিক্রিতে উল্লেখ আছে৷
বেন নাইট/জেডএইচ
যেসব দেশে শান্তি ফেরাচ্ছে জার্মানি
তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি ন্যাটোর সঙ্গে যোগ দেয়ার পর থেকে বার্লিন ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক জোটটিকে নানাভাবে সহায়তা করেছে৷ সেই ১৯৯০ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে শান্তি ফেরাতে কাজ করেছে জার্মান সেনাবাহিনী৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Hanschke
ন্যাটোতে জার্মানির ভূমিকা
তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে ১৯৫৫ সালে৷ তবে ১৯৯০ সাল অবধি নিজেদের কর্মকাণ্ড অত্যন্ত সীমিত রেখেছিল জার্মানি৷ শান্তিরক্ষা থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত বিভিন্ন কাজে ন্যাটোর হয়ে বিশ্বের কয়েকটি দেশে কাজ করেছে জার্মান সেনাবাহিনী৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Hanschke
বসনিয়া: জার্মানির প্রথম ন্যাটো মিশন
১৯৯৫ সালে বসনিয়া-হ্যারৎসেগোভিনায় প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে জার্মান সেনা মোতায়েন করা হয়৷ অর্থাৎ বসনিয়া যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সেদেশে শান্তি ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জার্মানরাও৷ সেই শান্তিরক্ষা মিশনে ন্যাটোর সদস্য ও সহযোগী দেশগুলোর ৬০ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/H. Delic
কসভোতে শান্তিরক্ষা
কসভোতে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন শান্তিরক্ষা মিশনের শুরুতেই সেদেশে সাড়ে আট হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়৷ ১৯৯৯ সালে সংখ্যালঘু আলবেনীয় বিচ্ছিন্নতবাদী এবং তাদের সমর্থকদের ওপর বর্বর দমনপীড়নের দায়ে সার্বিয়ার ওপর বিমান হামলা চালায় ন্যাটো৷ এখনো প্রায় ৫৫০ জন জার্মান সেনা কসভোতে অবস্থান করছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V.Xhemaj
এজিয়ান সাগরে টহল
২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সমর্থিত ন্যাটো মিশনের অংশ হিসেবে এজিয়ান সাগরে মোতায়েন করা হয় জার্মান যুদ্ধজাহাজ ‘বন’৷ অভিবাসী সংকট যখন চরমে, তখন অন্যান্য কাজের মধ্যে এই মিশনের অন্যতম কাজ ছিল গ্রিস এবং তুরস্কের জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ওপর নজর রাখা৷ জার্মানি, গ্রিস এবং তুরস্ক এ কাজে ন্যাটোর সহায়তা চেয়েছিল৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/M.Schreiber
লিথুয়ানিয়ায় জার্মান ট্যাংক
বাল্টিক দেশগুলোতে ন্যাটোর মিশনের অংশ হিসেবে লিথুয়ানিয়ায় চলতি বছর ৪৫০ জন জার্মান সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷ অবস্থান করছে জার্মান ট্যাংকও৷ তবে জার্মানি ছাড়া ক্যানাডা, ইংল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনাও রয়েছে সে অঞ্চলে৷ ‘বর্ধিত সামরিক মহড়া’-র অংশ হিসেবে প্রায় এক দশক যাবৎ ন্যাটো বাহিনী সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ লিথুয়ানিয়ায় অবস্থান করছে৷
ছবি: picture alliance/dpa/M. Kul
এক দশকের বেশি সময় ধরে আফগানিস্তানে
আফগানিস্তানে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন আইসাফ বাহিনীতে জার্মানি যোগ দেয় ২০০৩ সালে৷ সংখ্যার বিচারে দেশটিতে মোতায়েন বিদেশি সেনাদের মধ্যে জার্মানির অবস্থান তৃতীয়৷ আফগান মিশনে এখন পর্যন্ত ৫০ জন জার্মান সেনা নিহত হয়েছে৷ ২০১৫ সালে জার্মান সেনাদের মিশন শেষ হওয়া ও দায়িত্ব হস্তান্তরের পরও সহস্রাধিক জার্মান সেনা অবস্থান করছেন আফগানিস্তানে৷