জার্মানির ডুসেলডর্ফ শহরের একটি হাসপাতালে হ্যাকাররা হামলা চালিয়ে আইটি সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত করে৷ এর ফলে একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হ্যাকাররা হাসপাতালটির পরিচালনার কাজে নিয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যারে হামলা চালায়৷ হামলার বিষয়টি সফটওয়্যারটি চিহ্নিত করতে না পেরে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে৷ ফলে হাসপাতাল পরিচালনার কাজে নিয়োজিত সিস্টেমটি রোগীদের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়া থামিয়ে দেয়৷ এ সময় হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ রোগীদের অন্যস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়৷ এরমধ্যে একজন নারী রোগীকে চিকিৎসার জন্য অন্য শহরে স্থানান্তর করার পর তিনি মারা যান৷
তবে হ্যাকাররা কোন চাঁদা দাবি করেনি বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ আর হাসপাতাল পরিচালনার সিস্টেমটি ধীরে ধীরে আগের অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করেছে বলে জানানো হয়৷
এদিকে নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের বিচারমন্ত্রীর দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হ্যাকাররা হাসপাতালটির ৩০টি সার্ভার আক্রমণ করে৷ এর একটি সার্ভারে চাঁদা দাবি করে চিরকুট রেখে যায় তারা৷ তবে চিরকুটটিতে হ্যাকারদের কোন ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি৷ আর চিরকুটটি সরাসরি হাসপাতালকে নয় বরং হেইনরিস হাইনে বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়৷ হাসপাতালটি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পর্কিত৷
পরে ডুসেলডর্ফ পুলিশ হ্যাকারদের সাথে যোগাযোগ করে এবং তাদের জানায় যে, এ আক্রমণের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় নয় বরং হাসপাতালের রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ হ্যাকাররা তখন হাসপাতালের হারানো ডাটা ফিরে পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কোড সরবরাহ করে৷ এরপর তারা সব যোগযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়৷
হ্যাকারদের শাস্তির আওতায় আনতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ৷
আরআর/এফএস (এপি)
গত বছরের ছবিঘরটি দেখুন...
জার্মানিতে ভিডিও নজরদারি বিতর্ক
বিভিন্ন দেশে নিরাপত্তার খাতিরে ভিডিও নজরদারি যন্ত্র ব্যবহার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী৷ জার্মানিতেও স্বল্পমাত্রায় চালু আছে এমন ব্যবস্থা৷ কিন্তু চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে কি যাবে না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/J. Tack
ভিডিও নজরদারি
জার্মানির বিভিন্ন রেল স্টেশনে ভিডিও নজরদারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে অনেক দিন থেকেই৷ তবে তার পরিসর বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার৷ ২০২৪ সালের মধ্যে প্রধান সব রেল স্টেশনগুলোকে এই ধরনের নজরদারির আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ শুধু সিসি ক্যামেরা দিয়েই নয় তার সাথে চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তিও যোগ করতে চান তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Schreiber
চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি
বার্লিনের সুডক্রয়েজ রেল স্টেশনে সম্প্রতি চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তির একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প শেষ হয়েছে৷ এই স্টেশন ব্যবহারকারী ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী এক বছরের জন্য তাদের চেহারা শনাক্ত করার অনুমতি দেয় সরকারকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Schreiber
যেভাবে শনাক্ত করা হয়
প্রকল্পটি শুরুর আগে স্বেচ্ছাসেবীদের ছবি পুলিশের ডেটাবেজে দেয়া হয়েছে৷ ট্রেন স্টেশনে বসানো ক্যামেরা যখনই তাদের চিহ্নিত করে সেই তথ্য পুলিশের কাছে চলে যায়৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/J. Tack
কতটা সঠিক?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত প্রযুক্তিটি ৮০ ভাগ সঠিক তথ্য দিতে সক্ষম হয়েছে৷ অর্থাৎ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতি ৫ জনের চারজনকে শনাক্ত করতে পারছে সিস্টেমটি৷ অন্যদিকে এক হাজার জনে একজনকে ভুলভাবে শনাক্ত করেছে এই সফটওয়্যার৷
ছবি: DW/J. Chase
ভুলের মাশুল
প্রযুক্তিটির ভুলের সংখ্যা কম হলেও তা নিয়ে উদ্বেগ আছে৷ কেননা শতভাগ নির্ভুল না হলে যেকোন একজন নিরপরাধী ব্যক্তিও হয়রানির শিকার হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আগ্রহী পুলিশ
জার্মানির পুলিশ চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে৷ ফেডারেল পুলিশ বিভাগের প্রধান ডিয়েটার রোমান মনে করেন, এর ফলে বিশেষ পুলিশি অভিযান ছাড়াই দ্রুত অপরাধীকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে, যা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় অর্জন হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Sparta
আইনি বাধা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের আগ্রহ থাকলেও জার্মানিতে এখনই চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার চালু করা সম্ভব না৷ কেননা এ ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির ভিডিও নজরদারি ব্যবস্থা চালুর জন্য এখনও আইনী কাঠামো নেই দেশটিতে৷
ছবি: picture-alliance/picturedesk/H. Ringhofer
আদালতের রায়
আইনি কাঠামো না থাকলেও আদালতের সাম্প্রতিক একটি রায় অবশ্য পুলিশের পক্ষে গেছে৷ গত বুধবার হামবুর্গের প্রশাসনিক আদালত ২০১৭ সালে জি টুয়েন্টি সম্মেলনের বিক্ষোভে অংশ নেয়াদের ছবির বিতর্কিত তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষণের অনুমতি দিয়েছে পুলিশকে৷ স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেহারা শনাক্তকরণ সফটওয়্যার ব্যবহার করে ঐ ঘটনায় সহিংসতায় জড়িতদের চিহ্নিত করে৷
ছবি: picture-alliance /dpa/B. Thissen
উদ্বেগও আছে
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন নেতারা এ ধরনের প্রযুক্তির পক্ষে যেমন আছেন তেমনি বিপক্ষে থাকা রাজনীতিবিদের সংখ্যাও কম নয়৷ পুলিশ ও গোয়ান্দা বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট ছবি অনুসন্ধানের বিষয়ে গত জুলাইতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে বেসরকারি সংগঠন সোসাইটি ফর সিভিল রাইটস৷