২০ বছর বয়সি এক জার্মান হ্যাকার রাজনীতিবিদদের অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ে জড়িত থাকার ঘটনা স্বীকার করেছেন৷ জার্মান পুলিশকে তিনি জানান, বিরক্তি থেকে এ কাজ করেছেন৷ পুলিশ তাঁর নাম প্রকাশ করেনি৷
বিজ্ঞাপন
ফ্রাঙ্কফুর্ট প্রশাসনের ইন্টারনেট অপরাধ বিষয়ক কার্যালয়ের মুখপাত্র জর্জ উনগেফুক মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, সেই হ্যাকার তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে হেসে প্রদেশে বসবাস করেন৷ পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে৷ উনগেফুক জানান, তাকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি৷ নিজে থেকেই সব তথ্য জানিয়েছেন৷
তিনি বলেন, শুধুমাত্র বিখ্যাতদের মন্তব্যে বিরক্ত হয়েই এমনটি করেছেন বলে সেই তরুণ দাবি করেছেন৷ পুলিশ ইতোমধ্যে তার কম্পিটার ও হার্ডডিস্ক জব্দ করেছে৷
যেসব রাজনীতিবিদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে, তাঁদের মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার অন্যতম৷ হ্যাকিংয়ের তালিকায় প্রায় ১ হাজার রাজনীতিক, সাংবাদিকও ছিলেন৷
উনগেফুক আরো জানান, তার বাসা থেকে কম্পিউটার উদ্ধারের আগে সে কিছু তথ্য মুছে দিয়েছে৷ তবে আইটি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হবে৷ তবে পুলিশ হ্যাকারের সঙ্গে আর কেউ জড়িত ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করছে৷
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসে হ্যাক হওয়া এইসব ডাটা অরবিট নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়৷ পরে গত সপ্তাহে অসংখ্য তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷
সাইবার অপরাধের বিভিন্ন ধরন
ইন্টারনেটের ব্যবহার যত বাড়ছে তত বাড়ছে সাইবার অপরাধের ঘটনা৷ ফলে আর্থিক ক্ষতি থেকে নানা রকমের হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনলাইন ব্যবহারকারীরা৷ এমনই কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এখানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পরিচয় চুরি
আজকাল অনলাইনে কেনাকাটা করছেন অনেকে৷ এরজন্য নাম, ঠিকানা, ই-মেল, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ইত্যাদি দিতে হয়৷ সমস্যাটা সেখানেই৷ যেসব ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো নয়, সেখানে এই তথ্যগুলো দিলে তা অপরাধীর কাছে চলে যাবার সম্ভাবনা থাকে৷ সেক্ষেত্রে অপরাধী আপনার তথ্য ব্যবহার করে আপনার ক্রেডিট কার্ড শূন্য করে দিতে পারে৷ কারণ আপনার যে পরিচয় চুরি হয়ে গেছে!
ছবি: picture alliance/maxppp/S. Mortagne
স্প্যাম ও ফিশিং
একদিন ই-মেল খুলে দেখলেন আপনি অনেক টাকার লটারি জিতেছেন৷ সেটা পেতে আপনাকে কিছু তথ্য দিতে বলা হচ্ছে৷ হঠাৎ করে বড়লোক হওয়ার লোভে আপনি সেই তথ্যগুলো দিয়েও দিলেন৷ ব্যস, যা হবার হয়ে গেছে৷ পরে দেখলেন টাকা পাওয়ার বদলে আপনার কাছে যা আছে সেটাও চলে যাচ্ছে! অর্থাৎ আপনি ফিশিং-এর শিকার হয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTOs
ব়্যানসমওয়্যার
উন্নত বিশ্বে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে৷ অপরাধীরা ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে অন্যের কম্পিউটারের ফাইলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়৷ তারপর ঐ কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে বার্তা পাঠায় এই বলে যে, ফাইল ফেরত পেতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/ZB/T. Eisenhuth
সাইবার মবিং বা সাইবারবুলিং
হয়ত মজা করার জন্য কিংবা ইচ্ছে করে একজনকে কষ্ট দিতে তার বন্ধুরা একজোট হয়ে হয়রানি করে থাকে৷ বাস্তবে স্কুল-কলেজে এমনটা হয়ে থাকে৷ আজকাল ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়ে ওঠায় ভার্চুয়াল জগতে এমন ঘটনা ঘটছে৷ কিন্তু অনেক সময় বিষয়টি আর মজার পর্যায়ে না থেকে ভয়ানক হয়ে ওঠে৷ ফলে যাকে নিয়ে মজা করা হচ্ছে সে হয়ত এমন কিছু করে ফেলে যা কারও কাম্য থাকে না৷
ছবি: Sylvie Bouchard - Fotolia.com
ম্যালভার্টাইজিং
ধরুন আপনি কোনো ওয়েবসাইটে আছেন৷ সেখানে একটি বিজ্ঞাপন দেখে ক্লিক করলেন৷ ব্যস আপনার কম্পিউটারে একটি কোড ডাউনলোড হয়ে গেল৷ এটি কোনো নিরীহ কোড নয়৷ অপরাধীরা এর মাধ্যমে আপনাকে হয়রানির পরিকল্পনা করবে৷ সুতরাং...৷
ছবি: Getty Images
ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড স্কিমিং
রেস্টুরেন্ট, সুপারমার্কেটের বিল পরিশোধ, এটিএম থেকে টাকা তোলা, অর্থাৎ এমন কোথাও যেখানে আপনার ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডকে যন্ত্রের মধ্যে ঢোকাতে হয় সেখান থেকেও তথ্য চুরি হতে পারে৷ এটাই কার্ড স্কিমিং৷ স্কিমার যন্ত্রের মাধ্যমে এই তথ্য চুরি করা হয় বলে এর এমন নামকরণ হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Baltagiannis
ফোন ফ্রড
অচেনা কোনো নম্বর থেকে (বিশেষ করে বিদেশ থেকে) মিসড কল পেলে সঙ্গে সঙ্গে কলব্যাক না করাই ভালো৷ কারণ কে জানে হয়ত ফোন ফ্রড অপরাধীরা এই কলটি করেছিলেন৷ আর আপনি কলব্যাক করতে যে টাকা খরচ করলেন তার একটি অংশ পেয়ে গেল অপরাধীরা!