ক্যানাডার পপ তারকা জাস্টিন বিবারের ২০১৫ সালে প্রকাশিত এক মিউজিক ভিডিওতে আইসল্যান্ডের অসাধারণ প্রকৃতি দেখা গেছে৷ এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ঐ এলাকায় প্রায় দশ লক্ষ পর্যটক গেছেন বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
ফিয়াথরোরগ্লিয়ুভার ক্যানিয়ন নামের ঐ এলাকায় বিবারের ‘আই উইল শো ইউ’ গানের মিউজিক ভিডিও ধারণ করা হয়৷ ২০১৫ সালের নভেম্বরে ইউটিউবে আপলোড হওয়া ভিডিওটি এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪৪ কোটি বার দেখা হয়েছে৷
তরুণদের মধ্যে অসম্ভব জনপ্রিয় এই তারকার ফ্যানদের কাছে ফিয়াথরোরগ্লিয়ুভার ক্যানিয়ন এখন অবশ্যই দর্শনীয় স্থানের একটি হয়ে উঠেছে৷ এলাকাটি যখন পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকে, তখন কোনো ফ্যান সেখানে গেলে ঘুসের বিনিময়ে হলেও স্থানটি দেখতে চান বলে জানিয়েছেন ঐ এলাকার রেঞ্জার হানা ইয়োহানসডটির৷ তিনি বলেন, বেশিরভাগ পর্যটকই তাঁকে ঘুস হিসেবে তাঁদের নিজেদের দেশের খাবার অফার করে থাকেন৷ সম্প্রতি নাকি তাঁকে বিনামূল্যে দুবাই সফরের অফারও দেয়া হয়েছিল!
এমনিতেই অবশ্য আইসল্যান্ড পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে৷ গতবছর প্রায় ২৩ লক্ষ পর্যটক দেশটিতে গেছেন৷ আট বছর আগে সংখ্যাটি ছিল মাত্র ছয় লক্ষ৷
এদিকে, এত পর্যটকের কারণে ফিয়াথরোরগ্লিয়ুভার ক্যানিয়ন এলাকার পরিবেশ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ৷ এর জন্য জাস্টিন বিবারকেও দায়ী করতে ছাড়ছেন না অনেকে৷ তবে পরিবেশমন্ত্রী গুডমুন্ডুর ইঙ্গি গুডব্রানসন বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টার জন্য জাস্টিন বিবারকে দায়ী করা একেবারে সরলীকরণ হয়ে যাবে৷’’ সেই সঙ্গে তিনি বিখ্যাত ও প্রভাবশালী তারকাদের তাঁদের কার্যক্রমের প্রভাবের বিষয়টিও মাথায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন৷
জেডএইচ/এসিবি (এপি)
২০১৭ সালের ছবিঘরটি দেখুন...
আইসল্যান্ডে ঘুরতে যাওয়ার ৯ কারণ
সাম্প্রতিক সময়ে আইসল্যান্ডের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা৷ কারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও সেখানে দেখার আছে অনেক কিছু৷
পুরো দেশের এক চতুর্থাংশ জায়গা জুড়ে আছে আগ্নেয়গিরি, ১২ শতাংশ এলাকায় আছে গ্লেসিয়ার, মানে হিমবাহ৷ আছে ফিয়র্ড, আছে ভ্যালি৷ প্রায় এক শতাংশ জায়গায় গাছেরও দেখা পাওয়া যায়৷ এক দেশে এত কিছুর দেখা সাধারণত আর কোথাও পাওয়া যায় না৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/K. Irlmeier
সক্রিয় আগ্নেয়গিরি
২০১০ সালে ছবির এই আগ্নেয়গিরির নাম বিশ্ব গণমাধ্যমের নজর কেড়েছিল৷ কারণ এর অগ্নুৎপাতের কারণে সেই সময় ইউরোপজুড়ে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছিল৷ আগ্নেয়গিরিটির নাম এইয়াফিয়াদলা বা এইয়াফিয়াদলাইয়োক্যুডল৷ আইসল্যান্ডে প্রায় ১৩০টির মতো আগ্নেয়গিরি আছে, যার মধ্যে ৩০টির মতো এখনও সক্রিয়৷
ছবি: picture-alliance/bt3/ZUMApress
১২’শ ফুটবল মাঠের সমান
এটি আইসল্যান্ডের সবচেয়ে বড় হিমবাহ৷ নাম ভাতনাইয়োক্যুডল৷ আকার প্রায় ১২’শটি ফুটবল মাঠের সমান৷ পর্যটকরা সেখানে যেতে পারেন৷ তবে অবশ্যই গাইড নিয়ে৷ কেননা যখন তখন বরফে ফাটল ধরে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/S. Ziese
জলপ্রপাত
হিমবাহের বরফ গলা পানি উপকূলের দিকে যাওয়ার সময় কোথাও কোথাও জলপ্রপাতের সৃষ্টি করেছে৷ ছবিতে ‘গুডলফস’ জলপ্রপাত দেখতে পাচ্ছেন, ইংরেজিতে যেটা ‘গোল্ডেন ওয়াটারফল’ নামে পরিচিত৷ কত বড়? তাহলে একটু খেয়াল করে ছবিটি দেখুন৷ বাম পাশে উপরের দিকে পর্যটকদের দেখতে পাচ্ছেন?
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/K. Irlmeier
উষ্ণপ্রস্রবণ
প্রায় ৩০ মিটার উঁচু পানির এই স্তম্ভ স্থায়ী কিছু নয়৷ কয়েক মিনিট পরপর ভূমির নীচ থেকে এভাবে গরম পানি তেড়ে উপরে উঠে আসে৷ ছবির উষ্ণপ্রস্রবণটির নাম ‘স্ট্রকুর গিজার’৷ অবশ্য এররকম উষ্ণপ্রস্রবণ দেশটির অনেক জায়গাতেই আছে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/M. Lohmann
হট স্প্রিং
‘ব্লু-লেগুন’ নামের এই জিওথার্মাল স্পা’য় গা ভেজালে নাকি কিছু ত্বক সমস্যা দূর হয়ে যায়৷ তাই পর্যটকদের সেখানে ভিড় লেগেই থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Holschneider
রাজধানী শহর
বিশ্বের অন্যান্য শহরের মতো আইসল্যান্ডের রাজধানী রেইকইয়াভিকে গেলেও রেস্তোরাঁ, বার, নাইটক্লাব এ সবের দেখা পাওয়া যাবে৷ পুরো দেশের জনসংখ্যা মাত্র তিন লাখ ২০ হাজার৷ এর মধ্যে প্রায় দুই লক্ষ নাগরিকেরই বাস রেইকইয়াভিক ও তার আশেপাশের এলাকায়৷
ছবি: picture-alliance/U. Bernhart
পৌরাণিক জন্তু
ছবির এই পাথরটি দেখতে কি দৈত্যের মতো মনে হচ্ছে? আইসল্যান্ড জুড়ে যেমন এমন দৈত্যের দেখা পাওয়া যায়, তেমনি আছে পরী, আছে ক্ষুদ্রাকৃতির মানব৷ কোথায় তাদের দেখতে পাওয়া যাবে তার জন্য রীতিমতো ডিরেক্টরিও আছে৷
ছবি: DW/E. Yorck von Wartenburg
উদীচী উষা দেখা
ইংরেজিতে নর্দার্ন লাইটস আর বাংলায় মেরুজ্যোতি বা সুমেরু প্রভা নামেও ডাকা হয়৷ এটি আসলে রাতের আকাশে আলোর এক ধরনের খেলা৷ অক্টোবরের শুরু থেকে মার্চের শেষ সময়ের মধ্যে আইসল্যান্ডে গেলে অপরূপ এই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়৷ গ্রীষ্মের সময় আইসল্যান্ডে কখনও পুরোপুরি অন্ধকার নামে না৷ আর শীতের সময় কখনও পুরোপুরি আলোর দেখা পাওয়া যায় না৷