1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আজও নেই শ্রমিকের জীবনের দাম

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৮ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশে জাহাজ ভাঙা শিল্পের কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি হয়েছে দাবি করা হলেও, বাস্তব অবস্থা ভিন্ন৷ গত বছরও ১৮ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়৷ ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় নিয়ে জাহাজ আছে ইয়ার্ডে, কিন্তু দেখার কেউ নেই৷

ছবি: AP

গতবছর বাংলাদেশে আসা একটি ‘স্ক্র্যাপ' জাহাজ নিয়ে বেশ হইচই পড়ে যায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে৷ বলা হয়, জাহাজটিতে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য আছে৷ পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়েই ‘এমভি প্রডিউসার' নামের ঐ জাহাজটি কাটা শুরু হয়েছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মাদাম বিবির হাটে জনতা স্টিল কর্পোরেশন নামের একটি ইয়ার্ডে৷ ডেনমার্কের আর্ন্তজাতিক কোম্পানি ‘মায়ের্সক'-এর এই অয়েল ট্যাংকারটি দ্বিতীয়পক্ষের হাত ঘুরে ‘প্রডিউসার' নাম নিয়ে বাংলাদেশে আসে৷

সমালোচনা শুরুর পর সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ৷ ওই কমিটি জাহাজটি কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷ এরপরেও অবশ্য জাহাজটি পড়ে আছে ইয়ার্ডে৷ এটিকে দূষণমুক্ত করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি৷ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক হারুন অর রশীদ খান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা তদন্তে জাহাজটিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতি পেয়েছি৷ তাই জাহাজটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি৷ কিন্তু পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী হবে, তা তো উপর মহলই বলতে পারবে৷''

বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এখন অন্তত ৬০টি জাহাজ কাটা প্রতিষ্ঠান বা শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড সচল আছে৷ যদিও কাগজে-কলমে আছে দেড় শতাধিক আর এ সব কারাখানায় বছরে আড়াইশ' থেকে তিনশ' ‘স্ক্র্যাপ' জাহাজ কাটা হয়৷ এই শিল্পে কাজ করেন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার শ্রমিক৷ অভিযোগ আছে, এখানে রাতে শিশু শ্রমিকদেরও কাজ করানো হয়৷

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক হারুন অর রশীদ খান আরো জানান, ‘‘বছরে ৭-৮টির বেশি জাহাজের পরিবেশের ছাড়পত্র নেওয়া হয় না৷ শিল্পমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন দিয়েই জাহাজ কাটা শুরু হয়৷ আমরা বারবার নোটিশ দিলেও তারা অনুমতি নেয় না৷ মালিকদের কথা শিল্পমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়ার পর আমাদের আর কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন নাই৷ ফলে এখানে যে জাহাজ কাটা হয়, তা সব দূষণ বা তেজস্ক্রিয়মুক্ত কিনা তা বলা সম্ভব নয়৷ আমরা চাইলে মামলা করতে পারি৷ কিন্তু নানা কারণে সেটা সম্ভব হয় না৷''

HarunOr Rashid Khan - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

বলা হয়ে থাকে, বাংলাদেশে ১৯৬০ সালে জাহাজ ভাঙা শিল্পের গোড়াপত্তন৷ এমডি আলপাইন নামে একটি গ্রিক জাহাজ চট্টগ্রামের সমুদ্র সৈকতে বিকল হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ও স্টিল শ্রমিকরা তা টেনে সমুদ্রের তীরে এনে তা ভেঙে বিভিন্ন নির্মাণ কাজে ব্যবহার উযোগী করে তোলে৷ সেই থেকে শুরু৷ এখন বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারে রড় এবং ইস্পাতের চাহিদা মেটায় এই জাহাজ ভাঙা শিল্প৷ ২০০৪-২০০৯ – এই পাঁচবছর বাংলাদেশ জাহাজ ভাঙা শিল্পে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে ছিল৷ তবে এখন ভারত সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে৷ তাই দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ৷

দেশে ইস্পাতের চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশের জোগান দেওয়া হয় জাহাজ ভাঙা শিল্প থেকে৷ এই ব্যবসার আকার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা৷ ২০১১ মাসের মার্চে সরকার জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ ভাঙা ও জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজতকরণকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে৷

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মাদাম বিবির হাট, কুমিরা, ভাটিয়ারি, সোনাইছড়ি, জাহানাবাদ, কদমরসূল, বাঁশবাড়িয়া উপকূলজুড়ে এ সব শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোর অবস্থান৷ বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের  সভাপতি আবু তাহের ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা নানা সংকটের মধ্য দিয়ে ৬০টি ইয়ার্ড এখনও চালু  রাখতে পেরেছি, যদিও লাইসেন্স নেওয়া ইয়ার্ডের সংখ্যা প্রায় দেড়শ'৷ এ সব ইয়ার্ডে বছরে কমপক্ষে আড়াইশ' জাহাজ ভাঙা হয়৷ আমরা সরকারকে বছরে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব দিই৷''

Abu Taher - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

জাহাজ ভাঙা শিল্পে ঝুঁকি

‘স্ক্র্যাপ' জাহাজের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো বিপজ্জনক বা তেজস্ক্রিয় বর্জ্য৷ জাহাজে অ্যাসবেস্টস, গ্লাসহোল, লুব্রিকেন্ট ওয়েলসহ নানা ধরনের মারাত্মক ক্ষতিকর বর্জ্য থাকে৷ তাই ‘বিপজ্জনক বর্জ্য ও জাহাজ ভাঙা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১১'-এর ১৯ (১) বিধি অনুযায়ী, পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়ার বিধান আছে৷ কিন্তু এই ছাড়পত্র নেওয়া হয় না৷ গত বছর দু'শরও বেশি জাহাজ কাটা হলেও ছাড়পত্র নেয়া হয়েছে মাত্র আটটির৷ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক হারুন অর রশীদ খান বলেন, এখন শিল্প মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন দেয়৷ ফলে মালিকরা সেখানকার অনুমোদন নিয়েই জাহাজ কাটা শুরু করে৷ পরিবেশের ছাড়পত্রের তোয়ক্কা করে না৷

একই সঙ্গে জাহাজ কাটার কাজ খুবই ঝঁকিপূর্ণ এবং বিপজ্জনক৷ প্রতিবছরই নিরাপত্তা ত্রুটি এবং কর্ম পরিবেশের অভাবে এই শিল্ডে শ্রমিক মারা যায়৷ শিপ ব্রেকার্স ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের সভাপতি তপন দত্ত ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘গতবছর ১৮ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন আর কতজন আহত হয়েছেন, তার সঠিক হিসাব নেই৷ তারা জাহাজ কাটার সময় উপর থেকে নীচে পড়ে বা আগুনে ঝলসে নিহত হয়েছেন৷ কয়েকদিন আগেও সিমি মনি মারমা নামে একজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন৷ গত ২ এপ্রিল শ্রমিক মারা গেছে৷''

জাহাজ ভাঙা শিল্পের শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন বা ইপসা-র কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলি শাহীন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘চলকি বছরেও অন্তত আটজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন৷ আমরা তো ‘সাডেন ডেথ' দেখি৷ ‘হিডেন ডেথ' দেখি না৷ দুর্ঘটনার বাইরে জাহাজের ক্ষতিকর কেমিক্যাল বিশেষ করে অ্যাসবেস্টস, প্রেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ, ক্ষতিকর ধোয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক শ্রমিক মারা যায়৷ অনেকে জটিল এবং কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়৷''

তিনি জানান, ‘‘শ্রমিকদের জন্য যে নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ নানা সেফটি উপকরণ, যেমন: হেলমেট, মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহারের কথা তা ব্যবহার করা হয় না৷''

তপন দত্ত বলেন, ‘‘কিছু নিরাপত্তা উপকরণ সাজিয়ে রাখা হয়৷ যদি সরকারের কোনো সংস্থা যায় তাদের দেখানো হয়৷ বলা হয়, শ্রমিকরা এগুলো ব্যবহার করতে চায় না৷''

জানা গেছে, গত এক দশকে জাহাজ ভাঙা শিল্পে তিন শতাধিক শ্রমিক নানা দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন৷ আহত হয়েছেন কয়েক হাজার৷ তাদের কেউ হাত বা পা হারিয়েছেন, কেউ চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছেন৷ কিন্তু ক্ষতিকর পদার্থের জন্য কত জন মারা গেছেন, কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন, তার হিসাব নেই৷

ক্ষতিপূরণ

বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু তাহের দাবি করেন, আগের চেয়ে জাহাজ ভাঙা শিল্পে নিহত ও আহতের সংখ্যা অনেক কমে গেছে৷ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং উপকরণের ব্যবস্থা করায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিকরা অনেক সময় সেফটি উপকরণ ব্যবহার করতে চায় না৷ তখন আমাদের কিছু করার থাকে না৷ আর সড়ক দুর্ঘটনায়ও তো কত লোক মারা যায়৷ সে তুলনায় জাহাজ ভাঙা শিল্পে কাজ করতে গিয়ে নগণ্য সংখ্যক শ্রমিকই মারা যায়৷''

Mohammad Ali Sahin - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিহত শ্রমিদের পরিবার প্রতি পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিই৷ আহতদের চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতাল করেছি৷''

এর জবাবে ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের সভাপতি তপন দত্ত বলেন, ‘‘নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় মাত্র এক লাখ টাকা৷ তবে অভিযোগ আছে, লোকজনের সামনে ওই টাকার চেক দিয়ে পরে তা আবার কেউ কেউ হাতিয়ে নেয়৷ কেউ মারা গেলে বা আহত হলে প্রথম চেষ্টা করা হয় তা লুকিয়ে রাখার৷ পুলিশ একাজে সহায়তা করে বলেও অভিযোগ আছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘যে হাসপাতালের কথা বলা হচ্ছে, ওটা একটা প্রাইভেট হাসপাতাল৷ ওখানে শ্রমিকরা চিকিৎসা পায় না৷ আহত শ্রমিকদের কোনো ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাদের দ্রুত বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷''

তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘এখানকার ইয়ার্ডে রাতে গোপনে শিশু শ্রমিকদের কাজ করানো হয়৷ হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে রাত ৮টার পরও শ্রমিকদের কাজে বাধ্য করা হয়৷ শ্রমিকদের পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিসি) বলতে কিছুই নেই৷ আমরা তো মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ চাই না৷ চাই মৃত্যু রোধ৷ চাই শ্রমিকের জীবনের নিরপত্তা৷''

Tapan Datta - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

জাহাজ ভাঙা শিল্প এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশও সংকটের মুখে৷ জাহাজের বর্জ্য পানি এবং মাটির ক্ষতি করছে৷ শব্দদূষণ ও কম্পন পরিবেশের ক্ষতি করছে৷ লোহার প্লেট কাটা, লোড-আনলোড এবং জাহাজের কাটা অংশ তীরে টেনে আনার সময় শব্দ দূষণ হয়, যা এলাকার বাসিন্দারদের জন্য নানা সমস্যার সৃষ্টি করছে৷ শব্দদূষণে শিশু ও বৃদ্ধরা আতঙ্কিত হন৷ এতে করে স্কুল-কলেজের পাঠদান ব্যাহত হয়৷ প্রায়ই শিপ ইয়ার্ডে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ হয়, যাতে এ ভূকম্পন ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়৷ ইপসা এক জরিপ চালিয়ে দেখেছে, এই এলাকায় প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম নেওয়ার জন্য জাহাজ ভাঙার দূষণ বহুলাংশে দায়ী৷ ইপসার কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলি শাহীন বলেন, ‘‘এর জন্য মনিটরিং প্রয়োজন৷ পরিবেশ অধিদপ্তর, শিল্প মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সব সংস্থার দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ তবে সমস্যা হচ্ছে, জাহাজ শিল্প ভাঙা শিল্পের মালিকদের মাইন্ডসেটের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না৷ সরকার কিছুটা সক্রিয় হয়েছে, কিছু নীতিমালা তৈরি হয়েছে৷ কিন্তু এই পর্যন্তই৷''

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক হারুন অর রশীদ খান বলেন, ‘‘আসলে মালিকরা এখন আইনের সুযোগ নিচ্ছে৷ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এখন এর সঙ্গে জড়িত হওয়ায় তারা যে কোনো এক মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ইচ্ছেমতো কাজ করে৷ তাছাড়া ‘স্ক্র্যাপ' জাহাজ ভাঙার আগে যেমন অনুমতি লাগে, তেমনি ইয়ার্ড করার আগেও অনুমতি লাগে৷ কিন্তু সেখানেই নানা সমস্যা, যার সুযোগ নেয় মালিকরা৷ তাঁদের যোগাযোগ অনেক উপরে৷''

এ সব জাহাজগুলো আনা হয় জার্মানিসহ ইউরোপ এবং এশিয়ার অনেক দেশ থেকে৷ মালিক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ‘‘জার্মানি ছাড়া জাপান এবং কোরিয়া থেকে জাহাজ আসে৷''

পরিদর্শক হারুন অর রশীদ খান বলেন, ‘‘ইয়ার্ডের মালিকরা জাহাজ এনে তৃতীয়পক্ষকে ভাঙার দায়িত্ব দেয়৷ দ্রুত ভাঙতে পারলেই তাদের লাভ৷ পরিবেশ বা শ্রমিক তাদের কাছে মুখ্য নয়, মুখ্য হলো লাভ৷''

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ