করোনার কারণে কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার বাংলাদেশ সফরে না থাকায় ছয়জনকে ওয়ানডে অভিষেকের সুযোগ দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ তাদের বিরুদ্ধে জিততেই গলদঘর্ম অবস্থা টাইগারদের৷
বিজ্ঞাপন
সাকিব, অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ আর মুস্তাফিজের বোলিং নৈপূণ্যে মাত্র ১২২ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ এটি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ইনিংস৷
এই রান তাড়া করতে বাংলাদেশকে চারটি উইকেট হারাতে হয়েছে৷ অধিনায়ক তামিম সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেছেন৷ সাকিব আর মুশফিক (অপরাজিত) করেছেন ১৯ রান করে৷ লিটন দাস করেছেন ১৪, আর তিনে নামা শান্ত করেছেন মাত্র এক রান৷ রিয়াদ অপরাজিত ছিলেন ৯ রানে৷
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে অভিষিক্ত বোলার আকিল হোসেন ১০ ওভারে ২৬ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন৷
ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছেন সাকিব৷ ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, দশ মাস পর মাঠে নেমে টাইগাররা একটু নার্ভাস ছিলেন৷
এই জয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ সুপার লিগে ভালো শুরু করলো টাইগাররা৷ এই লিগকে ২০২৩ সালে ভারতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব ধরা হচ্ছে৷
তিন ম্যাচ সিরিজের পরের ম্যাচ শুক্রবার ঢাকায়৷ পরেরটি সোমবার চট্টগ্রামে৷
বাংলাদেশের কড়া বোলিং
এ কারণে মাত্র ১২২ রানে অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ শুরুতে মুস্তাফিজ দুই উইকেট নেন৷ এরপর সাকিব চারটি, অভিষেক হওয়া হাসান মাহমুদ তিনটি আর মেহেদী হাসান মিরাজ নেন একটি উইকেট৷
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বাংলাদেশ দলে ফিরেই বোলিং নৈপূণ্য দেখিয়েছেন সাকিব৷ সাত ওভার দুই বল করে পেয়েছেন চার উইকেট৷ শুধু তাই নয়, সাকিবকে খেলতেই পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা৷ তাইতো তার কাছ থেকে মাত্র আট রান নিতে পেরেছেন তারা৷
এছাড়া হাসান মাহমুদও নজড়কাড়া বোলিং করেছেন৷ একসময় হ্যাট্রিক করার পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন তিনি৷ ষষ্ঠ উইকেটে জমে যাওয়া কাইল মেয়ার্স ও রোভম্যান পাওয়েলের জুটি ভাঙেন মাহমুদ৷ পাওয়েলের উইকেট পাওয়ার পর নেন রেমন রেইফারের উইকেট৷ তবে হ্যাট্রিক সুযোগের বলটি ঠেকিয়ে দেন আলজারি জোসেফ৷
জেডএইচ/এসিবি
একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা একাদশ
ডয়চে ভেলের অনুরোধে এপ্রিল, ২০১৬ সালে এই একাদশ নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ তাঁর দেয়া ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী নামগুলো থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: BDnews24/M. Rahman
তামিম ইকবাল
ডয়চে ভেলের অনুরোধে ২০১৬ সালের এপ্রিলে এই একাদশ নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ তিনি সেরা একাদশ নির্বাচন করায় উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের ভাতিজা তামিমকে নিয়েছেন বলে যাঁরা ভাবছেন তাঁরা একবার তামিমের পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিন৷ বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ব্যক্তিগত মোট রানের সংখ্যা ৫,০০০ রান পেরিয়েছেন তিনি৷ এ জন্য তাঁকে ১৫৯টি ম্যাচ খেলতে হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran
শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ
টেস্ট খেলুড়ে কোনো দেশের বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম জয়টি আসে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে৷ সেই ম্যাচে ওয়াকার, ওয়াসিম, শোয়ের আখতারের মতো বোলারদের বিপক্ষে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ৩৯ রান করেছিলেন বিদ্যুৎ৷ দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই রান টাইগারদের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল৷
ছবি: Mir Farid
সাকিব
অনেকে হয়ত তাঁকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় বলবেন৷ বিশ্ব ব়্যাংকিংয়ে কয়েকবার শীর্ষে উঠে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেরা বিজ্ঞাপন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন এই অলরাউন্ডার৷ ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত ১৬৩টি একদিনের ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪,৫৬৬, উইকেট নিয়েছেন ২১৫টি, সেঞ্চুরি আছে ৬টি৷ সাকিবের চেয়ে উইকেট বেশি আছে শুধু মাশরাফির৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
মুশফিকুর রহিম
এই উইকেট-রক্ষক কাম ব্যাটসম্যানের ওডিআই ডেব্যু হয়েছিল ২০০৬ সালে৷ সেই থেকে ১৬৪টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৪,০৭৬টি, আছে ৪ সেঞ্চুরি (২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত)৷ প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটিও তাঁর৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
মিনহাজুল আবেদীন নান্নু
বাংলাদেশের প্রথম একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন নান্নু৷ সেই সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২০৷ সেটি ১৯৮৬ সালের কথা৷ এরপর মোট ২৭টি ওয়ানডে খেলেছেন৷ ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয়ে নান্নুর করা সাত ওভার (২৯ রান দিয়েছিলেন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল৷
ছবি: Mir Farid
পাইলট
শুধু ভালো উইকেট-রক্ষকও ছিলেন না, শেষদিকে ব্যাট করতে নেমে দলকে জেতাতে না পারলেও বেশ কয়েকবারই একটা সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন৷ ১৯৯৫ সালে ওডিআই খেলা শুরু করার পর ১২৬ ম্যাচে ১,৮১৮ রান করেছিলেন৷
ছবি: Mir Farid
রফিকুল আলম
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন এই অলরাউন্ডার৷ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের হয়ে দু’টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন৷ তবে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম খেলেন ১৯৮০ সালে৷ ১৯৮২ ও ১৯৮৬-র আইসিসি ট্রফিতেও খেলেছেন রফিকুল আলম৷
ছবি: Mir Farid
রফিক
প্রধান পরিচয় বাঁ-হাতি স্পিনার হলেও মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবেও পরিচিত ছিলেন৷ ১৯৯৫ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে তাঁর ওডিআই অভিষেক হয়েছিল৷ প্রথম উইকেটটাই পেয়েছিলেন টেন্ডুলকারকে আউট করে৷ বোলিং ফিগার ছিল ৫-০-১৫-১৷ এরপর ১২৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে সমান সংখ্যক উইকেট পেয়েছিলেন৷
ছবি: Mir Farid
মাশরাফি (অধিনায়ক)
সেরা একাদশের অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফিকে বেছে নেয়ার সিদ্ধান্তটি আকরামের জন্য সহজই ছিল বলা যায়৷ দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অন্যদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে নিতে বেশ কয়েকবারই পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি৷
ছবি: BDnews24/M. Rahman
মুস্তাফিজুর রহমান
আইসিসি ২০১৫ সালে ওয়ানডে একাদশের যে নাম ঘোষণা করেছিল তাতে প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে স্থান পেয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান৷ ঐ বছর জুনে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক ঘটে৷ প্রথম দুই ওয়ানডেতে তিনি ১১ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
রুবেল হোসেন
ডানহাতি এই ফাস্ট বোলারের ওয়ানডে অভিষেকটা স্মরণীয় হয়েছিল৷ ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐ ম্যাচে ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে টাইগারদের জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন৷
ছবি: Getty Images/Dibyangshu Sarkar
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (দ্বাদশ খেলোয়াড়)
সাকিব-তামিম-মুশিফক-মাশরাফিদের ভিড়ে তাঁর নাম চাপা পড়ে গেলেও দলের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যেই তাঁকে ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখা যায়৷ ২০১৫ বিশ্বকাপের পরপর দুই ম্যাচে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন৷ তাঁর অফস্পিনও সময় সময় বেশ কাজে লাগে৷
ছবি: Getty Images/R. Pierse
অমায়িক আকরাম
সেরা একাদশে নিজের নাম না রাখা প্রসঙ্গে আকরাম খান বলেন, ‘‘তালিকা আমি করেছি, সেখানে তো আমার নাম রাখতে পারি না৷’’ তবে ইএসপিএনক্রিকইনফো ডটকম ওয়েবসাইটে আকরামকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘প্রথম আসল নায়ক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷