বাংলাদেশের এক কিশোরী নাকি জিনের ছোঁয়ায় কিশোর হয়ে গেছে৷ শুধু তাই নয়, রাতারাতি তার পুরুষাঙ্গও হয়ে গেছে, যেটির আবার খৎনা করা হয়েছে৷ কিশোরীর এই ‘বিশাল' পরিবর্তনের খবরে আলোড়ন সৃষ্টি হয় এলাকায়৷
বিজ্ঞাপন
কিন্তু পুলিশ আবিষ্কার করল এক ভিন্ন ঘটনা৷ জুলেখার বাবা-মা আসলে পয়সা উপার্জনের এক উপায় হিসেবে ব্যবহার করেন জুলেখাকে৷ ফেনীর ফুলগাজীর এই দম্পতি স্থানীয়দের জানান যে, জিনের সহায়তায় বিভিন্ন রোগবালাই, এমনকি লিঙ্গ পরিবর্তনও করতে পারেন তারা৷ প্রমাণ হিসেবে নিজেদের মেয়েকে ছেলে সাজিয়ে মানুষের সামনে উপস্থাপন করেন৷ সরলমনা স্থানীয় মানুষ তাদের গল্পে বিশ্বাস করে রোগবালাই সারাতে জিনের সহায়তাও নিয়েছেন বলে খবর৷ টাকার বিনিময়েই তা করেছেন তারা৷
বাধ সেধেছে পুলিশ৷ ১৫ বছর বয়সি জুলেখাকে হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা গেল শারীরিকভাবে আসলে তার কোনো পরিবর্তনই হয়নি৷ বরং তাঁর যৌনাঙ্গের কাছে একটি রাবারের তৈরি কৃত্রিম পুরুষাঙ্গ বেঁধে তাকে পুরুষ হিসেবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছিল তার বাবা-মা৷ স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মনজুর মোর্শেদ জানান, কিশোরী এবং তার পিতামাতা জিনের মাধ্যমে মানুষের রোগবালাই সারানোর এক লাভজনক ব্যবসা শুরু করেছিল৷
অন্যের পুরুষাঙ্গ নিয়ে নতুন জীবন শুরু
যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যক্তির পুরুষাঙ্গে ক্যানসার হয়েছিল৷ ফলে অস্ত্রোপচার করে ফেলেই দিতে হলো লিঙ্গ৷ সেই থেকে বড় হতাশায় ভুগছিলেন৷ অবশেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অন্য একজনের লিঙ্গ দেয়া হয়েছে তাঁকে৷ এমনও সম্ভব!
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Riley/Mass General Hospital
লিঙ্গ প্রতিস্থাপন
চিকিৎসা শাস্ত্রের অগ্রগতির ফলে এখন শরীরের অনেক অঙ্গই প্রতিস্থাপন, অর্থাৎ অন্যের দেহ থেকে এনে লাগিয়ে দেয়া যায়৷ পুরুষাঙ্গও যে এভাবে অন্যের কাছ থেকে নিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করা যাবে ১১ বছর আগেও তা ভাবা যেত না৷ ২০০৫ সালে প্রথমবারে মতো একজনের দেহ থেকে পুরুষাঙ্গ এনে আরেকজনের দেহে লাগিয়ে দেয়ার পর বোঝা যায় এমনও সম্ভব৷
ছবি: picture-alliance/dpa
প্রথম দৃষ্টান্ত চীনে
সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত মাত্র তিনজনের দেহে সফলভাবে পুরুষাঙ্গ প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়েছে৷ পুরুষাঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রথম দৃষ্টান্তটি দেখা যায় চীনে৷ ২০০৫ সালে চীনের এক ব্যক্তির দেহে অস্ত্রোপচার করে লাগানো হয়েছিল নতুন পুরুষাঙ্গ৷ কিন্তু ওই পুরুষাঙ্গ নিয়ে ভদ্রলোক স্বচ্ছন্দ বোধ না করায় কয়েক সপ্তাহ পরেই আবার অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেয়া হয় সেই পুরুষাঙ্গ৷
ছবি: Fotolia
অন্যের পুরুষাঙ্গ নিয়ে প্রথম সুস্থ ব্যক্তি
২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার এক ব্যক্তির দেহে পুরুষাঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়৷ সেই ব্যক্তি এখনো সুস্থ আছেন৷ লিঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর সন্তানের জন্মও দিয়েছিলেন৷ তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মারা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এবার যুক্তরাষ্ট্রে
যুক্তরাষ্ট্রের থমাস ম্যানিং একদিন অফিসে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে খুব ব্যথা পেয়েছিলেন৷ ব্যথার চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানা যায় তাঁর পুরুষাঙ্গে ক্যানসার হয়েছে৷ ক্যানসার থেকে বাঁচতে পুরুষাঙ্গটাই ফেলে দিতে হয়৷ সেই থেকে হতাশার জীবন কাটাচ্ছিলেন৷ গত সপ্তাহে ৬৭ বছর বয়সি থমাস ম্যানিংকেও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে নতুন পুরুষাঙ্গ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Riley/Mass General Hospital
নতুন জীবন
এক ব্যক্তি মৃত্যুর আগে নিজে লিঙ্গ দান করে যাওয়ায় ১৫ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে সেই লিঙ্গ ম্যানিংয়ের দেহে জুড়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে৷ অস্ত্রোপচার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনের ম্যাসেচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে৷ সপ্তাহ খানেক পরও ভালোই আছেন থমাস ম্যানিং৷ জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে টের পাচ্ছেন তিনি আবার পূর্ণাঙ্গ পুরুষ হয়ে উঠেছেন৷
ছবি: picture alliance/Bildagentur-online
5 ছবি1 | 5
আপাতত তাদের সবারই জায়গা হয়েছে কারাগারে৷ পুলিশ জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনার প্রস্তুতি চলছে৷
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের প্রায় নব্বই শতাংশই মুসলমান৷ দেশটির পল্লী অঞ্চলের অনেক মানুষ জিনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন৷ আর এই বিশ্বাসকে পুঁজি করে কেউ কেউ ব্যবসা করেন৷ রোগবালাই থেকে নিস্তার ছাড়াও অনেক সময় অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করতেও জিনের আশ্রয় নেয়া হয়৷ তবে এই কুসংস্কারের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই৷