জিনে থাকলে অন্য স্তনেও ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি
৮ এপ্রিল ২০১০সিয়াটলের ‘ফ্রেড হাচিসন ক্যান্সার রিসার্চ ইন্সটিট্যুট' এর বিজ্ঞানীরা জানান, স্তন-ক্যান্সারের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে চিহ্নিত ‘বিআরসিএ-১' এবং ‘বিআরসিএ-২' নামের যে জিন রয়েছে তার ফলে এই ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে বলে প্রমাণ পেয়েছেন তারা৷ গবেষণা প্রতিবেদন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৪০ বছরের কম বয়সী কোনো নারীর একটি স্তনে ক্যান্সার ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই জিন পরীক্ষা করে দেখা দরকার যে তাঁর শরীরে ওই দু'টি জিন রয়েছে কি না৷
সমীক্ষা ফলাফলে বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, জিন নেই এমন রোগীদের তুলনায় ‘বিআরসিএ-১' জিন আছে এমন নারীদের অন্য স্থনে ক্যান্সার ছড়ানোর ঝুঁকি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি এবং ‘বিআরসিএ-২' জিন থাকলে তা ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি৷
সাম্প্রতিক এই গবেষণা প্রতিবেদনটি ‘জার্নাল অফ ক্লিনিকাল অঙ্কোলজি'-তে প্রকাশিত হয়েছে৷ ড. ক্যাথেলিন মেলোন এর নেতৃত্বে গবেষকরা দুই স্তনেই ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে এমন ৭০৫ জন নারী এবং কেবলমাত্র এক স্তনে ক্যান্সার আছে এমন ১,৩৯৮ জন নারীর ওপর জরিপ চালান৷ এই নারীদের সবরাই ক্যান্সার ধরা পড়ে ৫৫ বছর বয়সের আগেই৷
বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন, সন্দেহজনক এই দুটি জিনের যে কোনো একটি আছে এমন নারীদের ক্ষেত্রে ১০ বছরের মধ্যে অপর স্তনে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রায় ১৮ শতাংশ৷ অন্যদিকে, এমন একটিও জিন নেই এমন নারীদের মধ্যে এই আশঙ্কা ৫ শতাংশ৷ আবার এদের মধ্যে যাদের তিরিশ থেকে মধ্য তিরিশেই ক্যান্সার ধরা পড়েছে এবং এই দু'টির কোনো একটি জিন আছে তাদের মধ্যে ঝুঁকি প্রায় ৩১ শতাংশ৷ কিন্তু একই বয়সে ক্যান্সার-জিন নেই এমন নারীদের ওই ঝুঁকি ৭ শতাংশ৷
ফলে বিজ্ঞানীরা বলছেন উভয়ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ‘কম বয়স' এবং ‘জিন' এর উপস্থিতি অন্য স্তনে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে৷
‘অ্যামেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি' এবং ‘ক্যান্সার বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা' (আইএআরসি) এর হিসেব অনুসারে বিশ্বে প্রতিবছর ১৩ লাখ নারীর স্তন-ক্যান্সার ধরা পড়ছে এবং প্রতিবছর স্তন-ক্যান্সারের কারণে মারা যাচ্ছেন প্রায় ৪,৬৫,০০০ নারী৷ ফলে ক্যান্সারজনিত কারণে নারী মৃত্যুর অন্যতম শীর্ষ কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে স্তন ক্যান্সারকে৷
প্রতিবেদক : মুনীর উদ্দিন আহমেদ
সম্পাদনা : দেবারতি গুহ