বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফির দলে ফেরার সম্ভাবনার কথা জানান বলে জানায় ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম৷
পাপন জানান, ফিটনেস প্রমাণ করতে পারলে গত বিশ্বকাপের পর এই সিরিজ দিয়েই আবার জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছেন দেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক ও বোলার মাশরাফি৷
গত বছর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকেই মাশরাফি চোটে ভুগছেন৷ বিশ্বকাপের পরপর শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে পারেননি৷ গত বিপিএলেও খেলেছেন চোট-আঘাত নিয়ে৷ জিম্বাবুয়ে সিরিজকে সামনে রেখে আপাতত ফিট হয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন,জিম করছেন নিয়মিত৷
এক নজরে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা
নিঃসন্দেহে মাশরাফী ক্রিকেটের এক কিংবদন্তীর নাম৷ কিংবা বলা যেতে পারে একটি মিথ৷ কারণ, মাশরাফি মাঠে থাকলেই নাকি সতীর্থরা উজ্বীবিত বোধ করেন৷ চলুন এক নজর দেখে নিই তাঁর ক্যারিয়ারকে৷
ছবি: DW/N. Mohammad
নড়াইল এক্সপ্রেস
নড়াইলের সন্তান মাশরাফী৷ জন্ম ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর৷ পেস বোলার হিসেবে ক্যারিয়ারের শুরুতেই সাড়া ফেলেন৷ তাই অনূর্ধ-১৯ দলে থাকতেই বাংলাদেশের তৎকালীন অস্থায়ী ক্যারিবিয়ান বোলিং কোচ অ্যান্ডি রবার্টসের নজর কাড়েন৷ ডাক পড়ে ‘এ’ দলে৷ সেখানে খেলেন মাত্র এক ম্যাচ৷ তারপর? পরেরটা ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/F.K. Godhuly
টেস্ট অভিষেক
জীবনের প্রথম যে প্রথম শ্রেণির ম্যাচটি ‘ম্যাশ’ খেলেছেন, সেটি হলো টেস্ট ম্যাচ৷ ৮ নভেম্বর, ২০০১-এ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক৷ বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকলেও ওই সুযোগেই ১০৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিজের জাত চেনান মাশরাফি৷ স্টুয়ার্ট কার্লাইল তাঁর প্রথম শিকার৷
ছবি: AP
টেস্ট ক্যারিয়ার
৩৬ টেস্টে ৭৮ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফী৷ এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাননি কখনো৷ তবে ৪ উইকেট নিয়েছেন চারবার৷ বোলিং গড় ৪১.৫২৷ ইকোনমি ৩.২৪৷ রান করেছেন ৭৯৭৷ সর্বোচ্চ ৭৯৷
ছবি: AP
ওয়ানডে অভিষেক
সেই সিরিজেই ওয়ানডেতেও অভিষেক হয় মাশরাফীর৷ চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ২০০১ সালের ২৩ নভেম্বর৷ সেখানেও তৃতীয় ওভারেই গ্রান্ট ফ্লাওয়ারের স্টাম্প উড়িয়ে দেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’৷ এরপর অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের উইকেটও তুলে নেন৷ ম্যাচটি বাংলাদেশ হারলেও মাশরাফি ৮.২ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Melville
ওয়ানডে ক্যারিয়ার
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এখনো ইতি টানেননি৷ ছয় মার্চ জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের ২২০-তম ম্যাচ৷ ওয়ানডেতে মোট উইকেট ২৭০টি৷ ইকোনমি ৪.৮৮৷ ৫ উইকেট নিয়েছেন একবার৷ ৪ উইকেট সাতবার৷ ব্যাট হাতে করেছেন ১৭৮৭ রান৷ সর্বোচ্চ অপরাজিত ৫১৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
টি-টোয়েন্টি
৫৪টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ম্যাশ৷ উইকেট নিয়েছেন ৪২টি৷ রান করেছেন ৩৭৭৷ ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন একবার৷
ছবি: Getty Images/AFP/F.K. Godhuly
অধিনায়ক মাশরাফী
বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী৷ ২০০৯ সালে তিনি অধিনায়কের দায়িত্ব পান৷ ৮৮টি ম্যাচ বাংলাদেশ খেলেছে তাঁর অধিনায়কত্বে৷ এর মধ্যে ৫০টি জিতেছে এবং ৩৬টি হেরেছে৷ ২টির কোনো ফলাফল হয়নি৷ তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে জয়ের হার ৫৮ ভাগ৷ সফলতায় তার পরে আছেন সাকিব আল হাসান৷ তাঁর অধিনায়কত্বে জয়ের হার প্রায় ৪৭ ভাগ৷
ছবি: DW/N. Mohammad
7 ছবি1 | 7
বিশ্বকাপে চোট পাওয়ার পর মাশরাফির অবসর নিয়েও কথা উঠেছে৷ যদিও তিনি নিজে এখনো অবসর নিয়ে ভাবছেন না, বরং খেলা চালিয়ে যেতে চাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন৷
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘‘সাকিবের মতো ক্রিকেটার আমাদের হাতে নেই,অধিনায়ক মাশরাফির বিকল্পও এই মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই৷ কিন্তু মাশরাফিকে আগে বিপ টেস্টে পাশ করতে হবে৷ মাশরাফি বিপ টেস্ট পাশ না-ও করতে পারে৷ এটা একটা ব্যাপার৷
‘‘আবার বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফির অবদান অস্বীকার করার কোনো উপায়ও নেই৷ ওর নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ কিন্তু এটাও জানি, ওকে একটা সিন্ধান্ত নিতে হবে যে ও আর কতদিন খেলবে৷''
বিপ টেস্টের কথা বলা হলেও সেটা খুব কড়াকড়ি হবে না বলে নিশ্চিত করেছেন নাজমুল হাসান৷
তবে কি এটাই অধিনায়ক মাশরাফির শেষ সিরিজ? এমন প্রশ্নের জবাবে পাপন বলেন, ‘‘এই সিরিজে অধিনায়ক হিসেবেই খেলছে৷ শেষ সিরিজ কিনা, সেটা এখনই বলছি না৷ বোর্ডসভা ডেকেছি, আগামী ৮-৯ তারিখের দিকে, সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে৷
‘‘মাশরাফি খেলতে চাইলে খেলতেই পারে৷ তবে আমার ভাবনায় বেশি আছে নেতৃত্ব৷ নেতৃত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অন্য কাউকে যদি আমরা ঘোষণা করে দেই (অধিনায়ক), তারপর পারফরম্যান্স দিয়ে মাশরাফি দল ঢুকতে পারলে ঢুকবে৷ কারও জন্যই এখানে বাধা নেই৷ অধিনায়কের ব্যাপারে হয়তো এক মাসের মধ্যেই আমরা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবো৷ ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দিতে পারে এমন কাউকেই আমরা বেছে নেবো হয়তো৷''
জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচ হবে আগামী ১, ৩ ও ৬ মার্চ, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে৷
এসএনএল/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে বড় তারকা
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলা যে ক্রিকেটাররা পরবর্তীতে জাতীয় দলের তারকা হয়েছেন তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল, আইসিসি৷ ২০১৭ সালে এই তালিকা প্রকাশ করে তারা৷