1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক নন'

১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪

ব্লগওয়াচে আবারে থাকছে এ কে খন্দকারের বই নিয়ে লেখা৷ এবার এক ব্লগার বলছেন, বইটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকেই অসম্মান করেছে বিএনপি৷ আরেক ব্লগার দাঁড়াতে চান বন্যাদুর্গতদের পাশে৷

Ziaur Rahman
(ফাইল ফটো)ছবি: imago stock&people

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিতর্কের শেষ নেই৷ সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে যেসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক চলছে, তার একটি মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার প্রসঙ্গ৷ বিএনপি সবসময়ই দাবি করে এসেছে, ‘শহিদ' জিয়াই প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষক৷ তবে সামহয়্যারইন ব্লগে আহমেদ রশীদ দাবি করেছেন এ কে খোন্দকারের বই নিয়ে অতি উৎসাহ দেখাতে গিয়ে ‘জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক নন' অবশেষে মেনে নিচ্ছে বিএনপি!''

এমন লেখার যৌক্তিকতা বোঝাতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে' নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ জাতীয় সংসদেও সমালোচনা হয়েছে এ নিয়ে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে তুমুল আলোচনা৷ মহান মুক্তিযুদ্ধের উপ-সেনাপতি এ কে খন্দকারের বহুল আলোচিত ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে'-র সব বক্তব্যকে শতভাগ সত্য বলেই উল্লেখ করেছে বিএনপি৷ এই বই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে চলছে নানা বিশ্লেষণ ও তোলপাড়৷ গত কয়েকদিনে দেশের সংবাদমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম, রাজনৈতিক অঙ্গন, অফিস-আদালত, চা-খানা মাঠে ময়দানে এ কে খন্দকারের এই অভিনব তত্ত্ব ও তথ্যটিই প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে৷'B' আর সে বিতর্ককে পুঁজি করে বিএনপি নেতারাও সব ধরনের ‘উসকানি' দিয়ে চলেছেন৷....পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে বিএনপি যতটা উচ্ছ্বসিত, ঠিক ততটাই নির্লিপ্ত স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নামকে উড়িয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে৷ এর মধ্য দিয়ে দলটির রাজনীতির প্রধানতম স্লোগান ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া' বক্তব্যটি কি তাহলে বাতিল হতে চলেছে? – এই প্রশ্ন সবার৷''

আহমেদ রশীদ মনে করেন তা-ই হতে চলেছে, কেননা, ‘‘...এ কে খন্দকারের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয়েছে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করা অবান্তর৷ কেবল তাই নয় জিয়াউর রহমানকে একজন অনুপযুক্ত ব্যক্তি হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন বইয়ের লেখক৷....এ বিষয়ে সামান্য প্রতিবাদও না করে বইয়ের বক্তব্যকে শতভাগ সত্য বলে এ কে খন্দকারের বক্তব্যকেই মেনে নিচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা৷ এবং এর মধ্য দিয়েই বিএনপির দীর্ঘ দিনের দাবি ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া' অবশেষে মিথ্যা প্রমাণিত হতে চলেছে৷ অনেকের মতে, বইটির ব্যাপারে বরং বিএনপির মধ্যে একটি উচ্ছ্বসিত ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ দলটির নেতারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে গ্রাহ্য না করার ব্যাপারে কোনো প্রতিবাদ জানাচ্ছেন না৷ বরং তাঁরা বইয়ে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের শেষে ‘জয় পাকিস্তান' কথাটি বলা-না-বলা নিয়ে বিতর্কে উসকানি দিচ্ছেন৷''

বিএনপির ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া' বক্তব্যটি কি বাতিল হতে চলেছে?ছবি: picture-alliance/dpa

লেখায়ক জিয়াউর রহমানের ঘোষণা প্রসঙ্গে এ কে খন্দকারের বক্তব্যও তুলে ধরেছেন সামহয়্যারইন-এর ব্লগার৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বইয়ের ৬০ পৃষ্ঠায় এ কে খন্দকার বলেছেন, ‘মেজর জিয়ার ঘোষণাটিকে কোনোভাবেই স্বাধীনতার ঘোষণা বলা চলে না৷ মেজর জিয়া রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না বা ঘোষণা দেওয়ার মতো উপযুক্ত ব্যক্তিও ছিলেন না৷ যে ঘোষণা চট্টগ্রাম বেতার থেকে তিনি দিয়েছিলেন, ঠিক একই ধরনের একাধিক ঘোষণা ২৬ ও ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার থেকে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ও ছাত্রনেতাও দিয়েছিলেন, এমনকি বেতারকর্মীরাও একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছিলেন৷''

এক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতা-কর্মীদেরকে বইটি পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং জিয়াউর রহমানের ঘোষণা সম্পর্কে এ কে খন্দকারের বক্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত মন্তব্য' হিসেবে গুরুত্ব না দিলেও বিএনপির আরেক সিনিয়র নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, এ কে খন্দকার তাঁর বইয়ে যা বলেছেন তা শতভাগ সত্য৷''

আহমেদ রশীদ জানিয়েছেন, বিতর্কিত বইটিতে এ কে খন্দকার জিয়া বা শেখ মুজিবুর রহমান কাউকেই স্বাধীনতার ঘোষক মানেননি৷ লেখার একটি অংশে রশীদ লিখেছেন, ‘‘প্রসঙ্গত, এ কে খন্দকারের ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে' বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণেই যে মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ হয়েছিল, তা আমি মনে করি না৷ এই ভাষণের শেষ শব্দ ছিল ‘জয় পাকিস্তান'৷ তিনি যুদ্ধের ডাক দিয়ে বললেন ‘জয় পাকিস্তান'৷ এটি যে যুদ্ধের ডাক বা স্বাধীনতার আহ্বান, তা প্রচণ্ডভাবে প্রশ্নবিদ্ধ৷''

‘দেশে এসে মানুষের অবস্থ দেখ, না হয় এইসব মানুষের জন্য কিছু কর’ছবি: REUTERS

সামহয়্যারইন ব্লগে মোস্তফা কামাল পলাশ অবশ্য রাজনৈতিক বিতর্কের ধারেকাছেও যাননি৷ তাঁর লেখার শিরোনাম, ‘ন্যাড়া আবারও বেল তলায় যেতে আগ্রহী: বন্যা দুর্গত মানুষদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসুন'৷

শিরোনামে ন্যাড়ার আবার বেলতলায় যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখের কারণ হিসেবে তিনি লিখেছেন, ‘‘ন্যাড়ার ধর্মই হলো বেলের স্বাদ আস্বাদন করার জন্য মাথায় বেল পড়ার ঝুঁকি নিয়ে বেল তলায় যাওয়া৷ ঐ ন্যাড়াদের দলের একজন ভাবশিষ্য হিসাবে তাই প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ঝুঁকি গ্রহণ করে আবারও প্রবাসী বন্ধুদের কাছে হাত পাতলাম বাংলাদেশের বন্যা দুর্গত মানুষদের সাহায্যার্থে আর একবার এগিয়ে আসার জন্য৷ নিজের মনকে বুঝিয়েছি, পলাশ, তুমি চোখ বন্ধ করে থাকো; পত্রিকার যে পাতায় বন্যা দূর্গত মানুষের ছবি থাকে, তা চোখ বন্ধ করে পরের পৃষ্টায় চলে যাবে৷ কিন্তু আমি পারলাম না, একটি এনজিও-তে কর্মরত ও কুড়িগ্রাম জেলার বর্ন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শনরত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এক বড় ভাইয়ের ছবি দেখে৷ ছবিতে আমার মন্তব্যের প্রতিউত্তরে করা তার মন্তব্য সব সময় আমার মনে স্কুলের ঘণ্টার মতো বেজে যাচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরে৷ পলাশ, তুমি দেশে এসে মানুষের অবস্থ দেখ, না হয় এইসব মানুষের জন্য কিছু ফান্ড তৈরি কর, ক্যানাডা থেকে এইসব মানুষের অবস্থা বুঝবা কী করে?''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ