রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন জি২০ বৈঠকে আসছেন না। তিনি পাঠাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে। না-ও আসতে পারেন শি জিনপিং।
বিজ্ঞাপন
আগামী ৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জি২০ দেশগুলির শীর্ষবৈঠক হবে। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন থেকে শুরু করে সদস্য, পর্যবেক্ষক ও আমন্ত্রিত দেশের শীর্ষনেতারা আসবেন।
তবে সেই বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন আসবেন না। ক্রেমলিন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, ব্রিকস বৈঠকেও পুটিন যাননি। তিনি ভিডিও-র মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। গতবছরও তিনি ইন্দোনেশিয়ায় জি২০ বৈঠকে যোগ দেননি। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ এই বৈঠকে যোগ দেবেন।
রয়টার্সকে চীনে নিযুক্ত এক ভারতীয় কূটনীতিক এবং জি২০ দেশে কর্মরত আরেক ভারতীয় কূটনীতিক এই খবর দিয়ে বলেছেন, শি জিনপিংয়ের জায়গায় সেদেশের প্রধানমন্ত্রী লি কুইয়াং দিল্লিতে আসতে পারেন।
কিয়োদো জানিয়েছে, ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর জাকার্তায় পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় শীর্ষনেতাদের বৈঠকে যোগ দেবেন লি।
বালিতে শি ও বাইডেন দুজনেই গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বৈঠকও হয়েছে। এবারও দিল্লিতে তাদের মধ্যে বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি আশা করেন শি দিল্লি যাবেন।
শি-র সফর নিয়ে
শি দিল্লির জি২০ বৈঠকে যোগ দেবেন না, এমন কথা চীন আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। ভারতের তরফ থেকেও তা সরকারিভাবে জানানো হয়নি।
তবে রয়টার্স জানাচ্ছে, চীনের দুই সরকারি কর্মকর্তা তাদের বলেছেন, শি-র পরিবর্তে লি যাবেন বলে তাদের কাছে খবর আছে। তাদের বলা হয়েছে, শি যাবেন না। তবে কেন তিনি যাবেন না, তা জানানো হয়নি।
তবে ভারতের কাছে জি২০ বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভারত এখন বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্ব পেতে চাইছে।
১২ বছর পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে এলেন। এসসিও বৈঠকে। এসেছেন চীন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীও।
ছবি: Indian Foreign Ministry/AP/picture alliance
বিলাওয়াল ভুট্টো গোয়ায়
দীর্ঘদিন পর পাকিস্তানের কোনো মন্ত্রী ভারতে এলেন। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি গোয়ায় আসেন। তারপর তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও সেরে ফেলেছেন। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতে আসা যেমন তাৎপর্যপূর্ণ, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভের সঙ্গে তার আলোচনা।
ছবি: RUSSIAN FOREIGN MINISTRY/REUTERS
ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্য়াং। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারত ও চীনের উচিত বন্ধুত্ব ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ খুঁজে বের করা। জয়শঙ্কর ও গ্যাংয়ের মধ্যে আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক বিষয়, বিশেষ করে লাদাখ ও অরুণাচল সীমান্ত পরিস্থিতি এসেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
ছবি: Indian Foreign Ministry/AP/picture alliance
লাভরভ-জয়শঙ্কর কথা
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। লাভরভ অবশ্য কিছুদিন আগেও দিল্লি এসেছিলেন। ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত এখনো পর্যন্ত জাতিসংঘে রাশিয়ার নিন্দা করে কোনো ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি। তারা ভোটদানে বিরত থেকেছে। রাশিয়া থেকে তারা সস্তায় প্রচুর তেল কিনছে। পশ্চিমা দেশগুলির অভিযোগ, ভারত রাশিয়ার পাশেই আছে। দিল্লি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
ছবি: Russian Foreign Ministry/AA/picture alliance
চীন-রাশিয়া কথা
এসসিও বৈঠকের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন লাভরভ ও গ্যাং। ইউক্রেন যুদ্ধে চীনও রাশিয়ার পাশে আছে বলে পশ্চিমা দেশগুলির অভিযোগ। চীনও রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় প্রচুর তেল কিনছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কিছুদিন আগেই মস্কো গিয়েছিলেন। তবে চীন শান্তির জন্য মধ্যস্থতা করার উদ্যোগ নিয়েছে। তাই লাভরভ-গ্যাং বৈঠক বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে।
ছবি: RUSSIAN FOREIGN MINISTRY/REUTERS
এসসিও কী?
এসসিও মানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন। ২০০১ সালে সাংহাইতে এর জন্ম। চীন, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, তাজিকিস্তান, পাকিস্তান ও ভারত হলো সদস্য দেশ। তাছাড়া পর্যবেক্ষক দেশও আছে। ভারত এবার এসসিও-র সভাপতি। তাই গোয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হচ্ছে।
ছবি: Rauoof Gani/DW
গোয়ার রাস্তায়
গোয়ার বিভিন্ন রাস্তায়, গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় লাগানো হয়েছে এই বোর্ড। সেখানে এসসিও সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিদের স্বাগত জানানো হয়েছে।
ছবি: Rauoof Gani/DW
মিডিয়া সেন্টার
দেশ-বিদেশের সাংবাদিকরা এসেছেন। তাদের জন্য তৈরি হয়েছে মিডিয়া সেন্টার।
ছবি: Rauoof Gani/DW
নিখুঁত ব্যবস্থা
এই বৈঠকের জন্য অনেকগুলি জায়গায় অফিস তৈরি করা হয়েছে। মূল বৈঠক হচ্ছে পাঁচতারা হোটেলে। তাছাড়াও বেশ কয়েকটি জায়গায় অফিস করা হয়েছে। এই বৈঠক ঘিরে রীতিমতো ব্যস্ত গোয়া।
ছবি: Rauoof Gani/DW
8 ছবি1 | 8
নিউ ইয়র্কের সাউথ এশিয়া ইনিশিয়েটিভ ও এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ফারওয়া আমের জানিয়েছেন, শি যদি দিল্লি না যান, তাহলে বুঝতে হবে চীন ভারতকে জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি নয়। চীন চায় না, ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মুখ হয়ে উঠুক। জি২০-র সফল বৈঠক করে ভারত কোনো বাড়তি গুরুত্ব যেন না পায়।
পুটিন কেন আসছেন না
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা আছে। রাশিয়া অবশ্য জানিয়েছে, এই পরোয়ানা অর্থহীন।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর পুটিন কেবল বেলারুশ এবং প্রতিবেশী কিছু দেশে গেছেন। ইন্দোনেশিয়ায় জি২০ বৈঠকে তিনি যাননি। অন্য কোনো বৈঠকেও তিনি যাননি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিদেশ সফর এখন পুটিনের কর্মসূচিতে নেই।