জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের আগে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ তবে ম্যার্কেল জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের বর্তমান নীতিগত ব্যবধান এক বৈঠকে সমাধান হবে না৷
বিজ্ঞাপন
সোমবার এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প এবং ম্যার্কেলের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ণ এবং বাণিজ্য ও বিশেষভাবে ইস্পাতের বাড়তি উৎপাদন ইস্যু নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে৷ ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে হামবুর্গ সম্মেলনকে একটি সাফল্যে পরিণত করতে জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেলকে সহায়তা করতে চান তিনি', লেখা হয়েছে বিবৃতিতে৷
দু'দিনব্যাপী জি-টোয়েন্টি সামিটের একদিন আগে হামবুর্গে তৃতীয়বারের মতো সাক্ষাৎ করবেন ট্রাম্প এবং ম্যার্কেল৷ ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যকার আলোচনায় মুক্তবাণিজ্য, প্রতিরক্ষা বাজেট, অভিবাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ইস্যুতে ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে নীতিগত বিরোধ রয়েছে তা গুরুত্ব পাবে৷
হামবুর্গে জি-টোয়েন্টি: হাজারো মানুষের বিক্ষোভ
01:05
এর আগে গত মে মাসে ইউরোপে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবারের মতো সফর করেন ট্রাম্প৷ সেসময় তিনি ইটালিতে জি-সেভেন সম্মেলনে এবং ব্রাসেলসে ন্যাটোর একটি বৈঠকে অংশ নেন৷ কিন্তু সেসময় ট্রাম্পের নীতিগত অবস্থান এবং বক্তব্যে বিস্মিত হন ইউরোপের নেতা৷ ম্যার্কেল পরবর্তীতে প্রকাশ্যেই জানান যে, ইউরোপ আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর ভরসা করতে পারছে না৷
গত সপ্তাহে ম্যার্কেল ইউরোপের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে ট্রাম্পের বিরোধিতা সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্যারিস চুক্তি এবং মুক্তবাণিজ্য নীতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন৷ তবে ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট' নীতি এবং সংরক্ষণবাদ কৌশলের কারণে ম্যার্কেলের এই প্রত্যয় বাস্তবায়ন কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে ব্যবধান স্পষ্ট এবং সেটা আমি লুকাতে গেলে তা অসততা হবে৷ আমি সেটা করবো না৷''
ম্যার্কেল সোমবার সবাইকে সতর্ক করতে জানিয়েছেন যে, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক এবং জি-টোয়েন্টি সামিটে সকলের সম্মতিতে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ নিয়ে বেশি আশা না করাই ভালো৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি আমেরিকার সরকারের অবস্থান কী এবং আমি আশা করছি না যে একটি দু'দিনের সম্মেলনে তাদের সেই অবস্থানের পরিবর্তন ঘটবে এবং প্রজ্ঞাপনে তার প্রতিফলন ঘটবে৷''
এআই/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ)
ছবিতে জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের প্রতিবাদ
জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের আগেই শুরু হয়ে গেছে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ৷ হামবুর্গের রাস্তাঘাট ও নদীতে বিভিন্ন গ্রুপ এরই মধ্যে নানান সৃজনশীল উপায়ে প্রতিবাদ শুরু করে দিয়েছেন, যা চলবে সম্মেলন শেষ হওয়া পর্যন্ত৷
ছবি: Reuters/F. Bimmer
রাবারের তৈরি মানবমূর্তি
গেল রবিবার আন্তর্জাতিক সংগঠন অক্সফামের একটি প্রতিবাদের ভাষা ছিল এমনই৷ ধনী-গরিবের মাঝে বৈষম্য কমানোর ডাক দিয়ে এই মূর্তিগুলো বানায় তারা, যা দেখে বুঝতে কোনো সমস্যা হয়নি যে কাদের উদ্দেশ্যে এই আহ্বান৷
ছবি: Reuters/F. Bimmer
সন্ধ্যায় বেড়ানো?
পার্কে বেড়াবেন? হামবুর্গের এন্টেনভের্ডার পার্কে একটি ক্যাম্পকে এরই মধ্যে তুলে দিয়েছে পুলিশ৷ গেল কয়েক সপ্তাহ ধলে এই ক্যাম্পিংয়ের প্রস্তুতি চলছিল৷ পুলিশ মনে করছে, প্রায় এক লাখ প্রতিবাদকারী এই ইভেন্টটিতে যোগ দিতে পারেন৷ এদের মধ্যে অন্তত ৮,০০০ বামপন্থি উগ্রবাদী থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Marks
নদীতে নৌবহর
ব্যানার ও রঙীন জ্যাকেট পড়ে আলস্টার নদীতে নৌবহর সাজিয়েছে প্রতিবাদকারীরা৷ নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে অনেকেই সমর্থন দিয়েছেন বিভিন্ন এনজিও-র এই প্রতিবাদে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Macdougall
জনগণের ক্ষমতা
প্রতিবাদকারীরা অনেক প্ল্যাকার্ড ইংরেজিতে লিখে এনেছেন৷ কারণ, তাঁরা চান তাদের বার্তাগুলো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাক৷ বেশিরভাগ বার্তাই পরিবেশ সুরক্ষার জন্য তৈরি৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Macdougall
জম্বি সেজে প্রতিবাদ
হামবুর্গ শহরের কোনো গলিতে হঠাৎ দেখা হয়ে যেতে পারে কোনো জম্বির সঙ্গে৷ প্রতিবাদকারীদের অনেকেই জম্বি সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শহরজুড়ে৷ তবে এটি শুধুই প্রতিবাদের একরকম শৈল্পিক ভাষা৷ এর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কোনো সম্পর্ক নেই৷
ছবি: DW/A. Drechsel
প্রতিবাদ ক্যাম্প বিতর্ক
শহরে প্রতিবাদ ক্যাম্প করতে দিচ্ছে না জার্মান পুলিশ, যা নিয়ে বিতর্ক চলছে৷ হামবুর্গে এরই মধ্যে পুলিশবাহিনীর অতিরিক্ত ২০,০০০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, সঙ্গে রয়েছে ২৮টি হেলিকপ্টার, বাহিনীর ১৮৫টি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর, ৪০টি জলকামান এবং প্রায় ৩,০০০ টহল গাড়ি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Sabrowsky
সবার জন্য শান্তির বার্তা
সম্মেলনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে ভবনের দেয়ালে বড় করে শান্তির বার্তা প্রকাশ করেছে একটি নার্সিং হোম৷ সেখানে লেখা হয়েছে, আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে স্বাগত জানাই৷